ছবি:সংগৃহীত।
খাওয়ার অভ্যাস শুধু শরীর নয়, মন ও সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলে। ছোট ছোট পরিবর্তন, যেমন ধীরে খাওয়া, ক্ষুধা বুঝে খাওয়া, চিবিয়ে খাওয়া বা স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন ইত্যাদি দীর্ঘ মেয়াদে আপনার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। মনে রাখুন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানেই সুস্থ জীবনযাপন। প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না, নিয়মিত খাওয়ার সময়ে কত রকম অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে উঠেছে।সেগুলোকে জীবন থেকে ছেঁটে ফেলতেই হবে। নইলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। খাদ্যাভ্যাস ভালো রাখতে করণীয়-
সময়মতো খান, দ্রুত নয়
অনেকে তাড়াহুড়া করে খাওয়া শেষ করে ফেলেন। এতে শরীর বুঝে ওঠার আগেই আপনি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার গ্রহণের পর ‘পেট ভর্তি’ সিগন্যাল মস্তিষ্কে পৌঁছাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। তাই ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়া শুধু হজমের জন্যই ভালো নয়, ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। আবার প্লেট পরিষ্কার করা বাধ্যতামূলক নয়। মানে, খেতে না পারলেও প্লেটের সব খাবার খেতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। পেট যদি ভর্তি মনে হয়, তাহলে খাবার রেখে দিন। জাপানের একটি প্রাচীন দর্শন হারা হাচি বু। এত মানুষকে পেটের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত খেয়ে থেমে যেতে বলা হয়। তাতে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে এবং দেহ ও মন- দুটোই হালকা থাকে। এ ক্ষেত্রে পরিমাণ অল্প নিয়েই খেতে বসা ভালো।
না চেখে লবণ নয়
অনেকে খাবারে লবণ বা মরিচ না চেখে ছিটিয়ে দেন। এটি খারাপ অভ্যাস। অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই খাবার খাওয়ার আগে চেখে দেখুন, প্রয়োজন হলে তবেই লবণ যোগ করুন।
প্রসেসড মাংস খাওয়ার অভ্যাস কমান
বর্তমানে বাজারে ঢুকলেই প্যাকেটে সাজানো থাকে প্রসেসড মাংস। সসেজ, হ্যাম, সালামি প্রভৃতি প্রক্রিয়াজাত মাংস নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এসব খাবারের সঙ্গে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ফল ও সবজি (যেমন, কালো আঙুর, পালংশাক) খেলে কিছুটা ঝুঁকি কমানো যায়।
ক্ষুধা লাগলে তবেই খান
অনেকে অভ্যাসের বশে খেতে থাকেন; বিশেষ করে টিভি দেখতে দেখতে বা কাজ করতে করতে। তবে ক্ষুধা না লাগলে খাবার খাওয়া এড়ানোই ভালো। অনেক সময় পর্যাপ্ত পানি পানের অভাবকেও ক্ষুধা মনে হয়। তাই খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিন। চিপস বা বিস্কুটের প্যাকেট খুলে একেবারে শেষ না করা পর্যন্ত খাওয়া, খারাপ অভ্যাস; বরং খাবার পরিমাণ পরিমাপ করে একটি ছোট বাটিতে নিয়ে খান। এতে অতিরিক্ত খাওয়া এড়ানো যাবে। দাঁড়িয়ে, হাঁটতে হাঁটতে বা কম্পিউটারে কাজ করতে করতে খেলে মস্তিষ্ক ঠিকভাবে বুঝতে পারে না আপনি কতটা খাচ্ছেন। এতে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ফলে সময় বের করে আরাম করে বসে মনোযোগ দিয়ে খাবার খান।
খাবার গ্রুপ বাদ দেবেন না
শর্করা কিংবা চর্বি পুরোপুরি বাদ দেওয়ার মতো ডায়েট ট্রেন্ড এখন অনেক জনপ্রিয় হলেও এটি শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সব ধরনের পুষ্টিগুণ সমানভাবে গ্রহণ করার প্রচলিত পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো। পাউরুটি জাতীয় জিনিস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। চিনিজাতীয় খাবার মুখের অ্যাসিড বাড়িয়ে দাঁতের ক্ষতি করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের পরে চিজ খেলে মুখের অ্যাসিডের স্তর কমে দাঁতের ক্ষয় কমে। তাই চিজ খেতে চাইলে ডেজার্টের পরে খান।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
মানুষের শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ পানি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায়, ত্বক ভালো থাকে। এতে মানসিক স্বচ্ছতা বাড়ে।
চিবানোতে শব্দ নয়
চিবানোর সময় শব্দ করা শুধু অস্বস্তিকরই নয়, অনেকের জন্য ভীষণ মানসিক বিরক্তির কারণ হতে পারে। খাওয়ার সময় মুখ বন্ধ করে শান্তভাবে খাওয়াটাই শিষ্টাচার।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh