২০১৩
সালের ২৪ এপ্রিল, ঢাকার
সাভারে অবস্থিত রানা প্লাজা ভবনটি ধসে পড়লে এক হাজার ১৩৬
জন পোশাক শ্রমিক প্রাণ হারান এবং দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশের
ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। একযুগ পরও বিচার, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিয়ে
হতাহতদের পরিবার ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর
মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজমান।
বিচার
প্রক্রিয়া: দীর্ঘসূত্রিতা ও অগ্রগতি
ঘটনার
পরপরই পুলিশ, রাজউক ও দুদকসহ মোট
১৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে প্রধান
দুটি মামলা হলো:
হত্যা
মামলা: ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আবদুল খালেক ওরফে কুলু খালেকসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে
দায়ের করা হয়। এই মামলায় ২০১৬
সালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলেও, সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২০২২ সালে।
এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, তবে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।
ইমারত
নির্মাণ আইন লঙ্ঘন মামলা: ভবন নির্মাণে ত্রুটি ও অবহেলার অভিযোগে
দায়ের করা হয়। এই মামলাতেও বিচার
প্রক্রিয়া স্থবির রয়েছে এবং হাইকোর্টে স্থগিত রয়েছে।
এছাড়া,
দুদকের দায়ের করা সম্পদের তথ্য গোপন সংক্রান্ত মামলায় ২০১৭ সালে সোহেল রানাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার
টাকা জরিমানা করা হয়। তবে, অন্যান্য মামলাগুলোর বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি।
ক্ষতিপূরণ
ও পুনর্বাসন: অপ্রাপ্তি ও হতাশা
রানা
প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৮৪৪টি লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২৯১টি অজ্ঞাত লাশ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। আহতদের মধ্যে অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, কিন্তু তাদের পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণের কোনো
কার্যকর ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি। অনেক শ্রমিক এখনও চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের অভাবে
মানবেতর জীবনযাপন করছেন।