ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা
রাজশাহী বিএডিসি’র (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত আলুবীজ দুর্নীতির অভিযোগে গঠিত হয়েছিল তদন্ত কমিটি। সেই তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যেই পৌঁছেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। অভিযোগ আকারে আসা দুর্নীতির বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা যথাসময়ে পালিত হলেও; তদন্ত প্রতিবেদনের বস্তুনিষ্ঠতা ও পক্ষপাতিত্ব নিয়ে সন্দেহের তীড় ভুক্তভোগী চাষী ও কৃষকদের মাঝে।
ভুক্তভোগী কৃষক ও সংশ্লিষ্টরা আক্ষেপ করে বলছেন, যে কার্যালয়ের কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে অভিযোগপূর্বক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, সেই কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে। শুধু তাই নয়; অভিযুক্ত সেই কর্মকর্তার সাথে তদন্ত কমিটির ঐ সদস্যের রয়েছে দারুণ সখ্যতা বলেও জানান তালিকাভুক্ত কৃষক ও কর্মরতরা। যার কারণে, পরিচ্ছন্ন-বস্তুনিষ্ঠ ও পক্ষপাতহীন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির মধ্যে আছেন বিএডিসি রাজশাহীর যুগ্মপরিচালক (বীজ) মো: ফজলে রব ও তদান্তাধিন কার্যালয়ের উপপরিচালক (বীজ) কে.এম গোলাম সরওয়ার।
উল্লেখ যে, গত ১২ অক্টোবর বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় "আলুবীজ নিয়ে বিএডিসি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাষীদের অভিযোগ" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আলুবীজ বিভাগ।
দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী বিএডিসির আলুবীজ বিভাগ ও ঐ দপ্তরের নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ করে আসছিলেন আঞ্চলিক আলু চাষিরা। তারই প্রেক্ষিতে গত ২০ অক্টোবর আলুবীজ চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক ও তানোর নোনাপুকুর ব্লক লিডার হাসিবুর রহমান রাজশাহীর উপসহকারি পরিচালক (বীজ) আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বিএডিসির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের মধ্যে ছিল, চাষীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি, চাষীদের কাজের টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ, ৫০ কেজির বস্তায় চাষীদের কাছ থেকে ৫৩.৫ (প্রতি বস্তায় সাড়ে তিন কেজি বেশি) কেজি আলু নেয়া, রাজশাহী জেলার বীজ অন্য জেলায় পাঠানোর পায়তারা, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্লক লিডারদের বাদ দিয়ে, নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য শেয়ারে অন্য নতুন জমি দিয়ে ব্লক করানো এবং পছন্দের ব্যক্তিদের ব্লক দেয়া, চুক্তিবদ্ধ চাষীদের মতামতের গুরুত্ব না দিয়ে তাদের সাথে অসদাচরণ করা।
ভুক্তভোগী কৃষক ও অভিযোগকারি বলছেন, প্রতি বস্তায় অতিরিক্ত সাড়ে তিন কেজি আলু বাবদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেবার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন অভিযুক্ত উপসহকারি পরিচালক (বীজ) আব্দুল কাদের। যেটার আর্থিকমূল্য সর্বসাকুল্যে প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা মতো। তারা আরো বলছেন, তদন্তের বিষয়টি ভুক্তভোগী চাষিদের আশা জাগালেও কেউ কেউ মনে করছেন তদন্ত হিমঘরে পড়ে না থাকলেও পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির একজন হলেন, উপপরিচালক (বীজ) কে.এম গোলাম সরওয়ার। যিনি সংশ্লিষ্ট সংশ্লিষ্ট দপ্তরে উপপরিচালক (বীজ) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক (বীজ) কে.এম গোলাম সরওয়ার বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। মূলত আমাদের যুগ্মপরিচালক ফজলে রব স্যারের তত্বাবধানে তদন্ত কাজ হয়েছে। ]
যে দপ্তর নিয়ে তদন্ত হয়েছে; আপনি সেই দপ্তরেরই দায়িত্বে ছিলেন গত ২৯ সেপ্টেম্বর-২৪ পর্যন্ত, তাহলে তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হবে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ঢাকা থেকে হয়ে এসেছে, এতে আমার কিছু করার নাই। তদন্ত কমিটির সদস্য উপপরিচালক (বীজ) কে.এম গোলাম সরওয়ার বলেন, কৃষকদেরকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার বিষয়টি মিথ্যা। উপরন্তু আমাদের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারি জমিতে গিয়ে আলু বীজ সংগ্রহ করতে গেলে কৃষক ফোরাম রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক ও তানোর নোনাপুকুর ব্লক লিডার হাসিবুর রহমানসহ আরো বেশকিছু কৃষক কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এছাড়াও তারা ভাল বীজ আমাদের কাছে বিক্রি না করে খারাপ বীজগুলো দেবার অপচেষ্টা চালায়। আবাদী জমির উপর বীজ সংগ্রহ করতে গেলে কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে কৃষকরা হুমকি ধামকি ও মারমুখি আচরণ করেছে বলেও দাবি এই কর্মকর্তার।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh