× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মহাসড়কে চলছে অবৈধ দখলে রমরমা বাঁশের ব্যবসা

মো: আরিফুর রহমান অরি, মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।

১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৫:৫৯ পিএম । আপডেটঃ ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৯:২৪ পিএম

ছবিঃ মো: আরিফুর রহমান অরি

ঢাকা- আরিচা মহাসড়কের বাথুলি বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মহাসড়কের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে চলছে  বাঁশ কেনা-বেচার রমরমা ব্যবসা। মহাসড়ক ঘেঁষে সারি সারি বাঁশ রেখে প্রতিনিয়ত চলেছে বাঁশ কেনা বেচা।

ব্যস্ততম এই মহাসড়কটিতে পরিবহন সেবা চলে আসছে দীর্ঘ বছর যাবৎ। মানিকগঞ্জ সহ ২১ টি জেলার মানুষের কম খরচে স্বল্প সময়ে ঢাকায় যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে দীর্ঘ বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে ঢাকা আরিচা মহাসড়কটি । 

সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা আরিচা মহাসড়কের বাথুলী বাস স্ট্যান্ডের পাশে ও জাগীর পুলিশ ক্যাম্প মহাসড়ক ঘেষে অবৈধ ভাবে বাঁশ ব্যবসায়ীরা দোকান বসিয়ে যানবাহন, সাধারণ পথচারী ও যাত্রীদের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত। মহাসড়কের জায়গা দখল করে যেভাবে বাঁশ রেখেছে, তাতে ওই এলাকার মানুষের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব সামগ্রী রাখার কারণে মহাসড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ছাত্রছাত্রী ও পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সড়কে নিরাপদে চলাচলের স্বার্থে এসব সরানোর কেউ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

মোটরসাইকেলচালক মেহেদী হাসান সুমন বলেন, 'অনেক দিন ধরেই বাথুলীসড়কের পাশে বাঁশ বিক্রির রমরমা ব্যবসা চলছে । এতে সাধারণ পথচারীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। দুই দিন আগে এখানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে জিসান নামের এক বাইক চালক দুর্ঘটনায় শিকার হন । ওই সময় পড়ে গিয়ে বুকে, পায়ে মারাত্মক ব্যথা পেয়েছে।

মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে থাকা বাবু নামের এক পথচারী জানান, বাথুলীসহ জাগীর পুলিশ ক্যাম্প সড়কের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বাঁশ ব্যবসা চলছে। এতে করে ওই রাস্তা ব্যবহারকারী যানবাহন ও পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। এ কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এ সব ব্যবসায়ীদের  বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না প্রশাসনের। 

স্থানীয়রা জানান,  মহাসড়কের পাশে বাঁশ বিক্রি না করে বাশ বিক্রির জন্য আলাদা স্থান রয়েছে। সেখানে বাঁশ বিক্রি করা যায়। কিন্ত তারা সে খানে বাঁশ বিক্রি না করে মহাসড়কে পাশে চলে এসেছে। মহাসড়কের পাশে বাঁশ রাখা বেআইনি। কিন্তু তারপরও এ বিধান মানছেন না কেউ। অনেক ব্যবসায়ী সড়কে পাশে একটি অংশে বাঁশ  রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। যার ফলে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। রাতের বেলা সেখানে কোন আলোর ব্যবস্থা না থাকায় বাঁশের সুচালো আগা প্রান হানির আশংকা আছে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল। দুর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

এ সম্পর্কে বাঁশ ব্যবসায়ী জসিম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। এটা বিক্রি করেই সংসার চালাই। আমাদের এখান থেকে বাঁশ মানিকগঞ্জেসহ আশেপাশের জেলা গুলোতে যায়। বেড়া ও মাঞ্চা তৈারি করা হয় এ বাঁশ দিয়ে। অনেকে আবার বিল্ডিং এর কাজে নেন। আজিমপুর কবর স্থানেও আমাদের এখন থেকে বাশ যায়।

ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের আরিচা থেকে ধামরাই পযন্ত মহাসড়কের পাশে বাথুলী বাস স্ট্যান্ড ছাড়া আর কোনো অবৈধ বাঁশের ব্যবসা নেই! এমন প্রশ্নের জব্বাবে ব্যবসায়ী জসীম বলেন, এখানে এক জন শুধু অন্য জেলার আর আমরা এখানে সবাই স্থানীয় ব্যবসায়ী। আমাদের এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে বাশঁ কম বেশি আসে। সবচেয়ে বেশি বাঁশ আসে মধুপুর থেকে। 

অবৈধ ভাবে মহাসড়কের পাশে ব্যবসা করছেন প্রশাসন কিছু বলে না। এমন প্রশ্নের জব্বাবে তিনি আর ও বলেন, প্রকাশ্যে দিন দুপুরে ব্যবসা করতেছি। প্রশাসন তো বলবেই কিছু না কিছু। গাড়ি প্রতি হাইওয়ে পুলিশ কে পনেরো শ টাকা দিতে হয়। যখন আমরা বাঁশ ট্রাকে করে এখানে নিয়ে আসি তখন গাড়ি প্রতি তারা এ টাকা টা নেয়। টাকা না দিলে বিভিন্ন ঝামেলা করে পুলিশ। এছাড়া, পরবর্তীতে আর কোনো টাকা দিতে হয় না বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপম চন্দ্রদাস জানান, আমি গোলড়া হাইওয়ে থানায় নতুন এসেছি। এখন পযন্ত ভালোভাবে জায়গা গুলো চিনি না। বর্তমান যে পরিস্থিতি তা কিছুটা স্বাভাবিক হলে আমরা আস্তে আস্তে আইন অনুয়ায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর অবৈধ এ বাঁশের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান।

এ  সময় গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান বলেছিলেন , মহাসড়কের পাশে অবৈধ ভাবে দোকান বসিয়ে যানবাহন, সাধারণ পথচারী ও যাত্রীদের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটানোয় কারণে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুর্ঘটনা রোধে হাইওয়ে থানা পুলিশের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান। কিন্ত পরবর্তীতে তা আর দেখা যায় নি।

আইন অনুযায়ী, মহাসড়কের দুই পাশে ১০ মিটার দূরত্বকে নিয়ন্ত্রণ রেখা ধরা হয়। ওই নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ, হাটবাজার বসানোসহ অন্যান্য কার্যক্রম করার বিধান নেই। এমনকি নিয়ন্ত্রণ রেখার বাইরে স্থাপনা নির্মাণ করতে হলেও নিতে হবে অনুমোদন। এছাড়া মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার ক্ষেত্রেও অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মহাসড়ক আইনে বলা হয়েছে, অনুমোদন ছাড়া মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ, হাটবাজার বসানো বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। এর কোনো অংশ থেকে মাটি, বালি, পাথর বা সংশ্লিষ্ট কিছু উত্তোলন করা যাবে না। মহাসড়ক বা সংশ্লিষ্ট কোনো অংশে ময়লা, আবর্জনা বা অন্য কোনো বস্তু নিক্ষেপ বা রাখার বিধানও নেই। নির্মাণসামগ্রী রাখার ক্ষেত্রে রয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.