× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

দেড় বছরেও শেষ হয়নি সুরমা নদীর খননকাজ

মাহমুদ খান, সিলেট ব্যুরো

১২ জুন ২০২৪, ১২:০৯ পিএম

সিলেট নগরবাসীকে বন্যামুক্ত করা ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বল্প পরিসরে সুরমা নদীর খনন কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। ওই বছরের জুন মাসে খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দেড় বছরেও শেষ হয়নি সেই কাজ।

এ প্রকল্পের অধীনে সিলেট নগরীর কুশিঘাট থেকে বিশ্বনাথের দশগ্রাম পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার খনন করার কথা রয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করতে না পারায় হতাশ পরিবেশবাদীরা, ক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালির কারণে নদী খননের পুরো টাকাই জলে যাচ্ছে। এক বর্ষা মৌসুম গিয়ে আরেক বর্ষা মৌসুম চলে এসেছে তবে তাদের কাজের কোন অগ্রগতি নেই। ফলে এই বর্ষা মৌসুমেও সিলেট নগরীতে আবারো বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে পানির সঙ্গে আবারো পলি এসে নদী ভরাট হবে। ফলে খনন কাজ যা করা হয়েছে সেটুকুও জলে যাবে।

জানা যায়, গত ১১ বছরে সিলেটের সুরমা নদী খননে চারটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে একটিও প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি ছোট পরিসরে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ কিলোমিটার কাজের উদ্বোধন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তবে এক বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে আরেক বর্ষা মৌসুম চলছে। এখনও অবধি শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ এতে ক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ ও পরিবেশবাদীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর লামাবাজারের বাসিন্দা আহসানুল করিম মিশু জানান, সিলেট নগরীকে বন্য থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে একটাই রাস্তা সুরমা নদী খনন কাজ দ্রুত শেষ করা। সিলেট শহরের সব ড্রেন গুলো ভালো করে পরিষ্কার করা আর দ্বিতীয় কোন উপায় আছে বলে মনে হয় না। তাই যেভাবে সুরমা নদীর খনন কাজ দ্রুত শেষ করা যায় সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা সময়ের দাবি নতুবা এই ভোগান্তির শেষ নেই।

নগরীর শেখঘাটের বাসিন্দা বেলাল আহমদ জানান, শুষ্ক মৌসুমে তারা কোথায় ছিলেন? যখন নদীর পানি শুকিয়ে গিয়েছিলো তখন দ্রুত গতিতে কাজ করলে এতোদিনে কাজ শেষ হয়ে যেত। তাছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে প্রকল্পটি শেষ করছেন না তারা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের অপারেশন ম্যানেজার আজিম উদ্দিন বলেন, এই মাসের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করতে চাই। বর্জ্যের কারণে প্রতিনিয়ত মেশিনারি যন্ত্রপাতি বিকল হচ্ছে। অনেক সময় আধাঘণ্টা পরপর মেশিন পরিষ্কার করতে হয়েছে। তখন খননকাজ বাধাগ্রস্ত হয়। অবশ্য চলতি মাসে দ্রুত খননকাজ এগিয়ে চলছে।

সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল করিম কিম বলেন, ২০২৩ সালের ২১শে জানুয়ারি অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে খনন কাজের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সে সময়ে তিনি বলেছিলেন, "সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি উপচে পড়ছে। সুরমা খনন করতে হবে। আমরা নদী খননের পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী বর্ষার আগেই খনন করা হবে।"  বর্ষা শেষ হয়ে আরেক বর্ষা চলছে। সুরমা নদীর খনন কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের আওতাধীন ১৮ কিলোমিটারের ৮ কিলোমিটার নদী খনন হয়েছে বলাটাও কঠিন। সুরমা নদী খনন নিয়ে যা হচ্ছে তা রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়। এই খনন শুভংকরের ফাঁকি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের মতো সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের বাকি কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, সুরমা নদীতে পরিমাণ পলিথিন ও বর্জ্যের কারণে কাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কিছু এলাকায় ঘন-বসতি এর জন্য যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। এজন্য নির্ধারিত সময়ে খননকাজ শেষ করা যায়নি। তবে এ প্রকল্পের কাজ জুন মাস পর্যন্ত চালানো যাবে। এরমধ্যেই বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.