× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বেচাকেনা অর্ধেকে নেমেছে বাবুর হাটের কাপড় ব্যবসায়

শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী

১৯ মার্চ ২০২৪, ১৩:৫০ পিএম

দেশীয় কাপড়ের ৭০ভাগ চাহিদা পুরণ করে থাকে নরসিংদীর সেখেরচরের বাবুর হাটের কাপড়। আর প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে বেচা-কেনা হয় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এবার বেচা-কেনা অর্ধেকে নেমে আসায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে ব্যবসায়ীদের। অপরদিকে ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দাভাব ও বাজারে একাধিক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এই পরিস্থির সৃষ্ঠি হয়েছে। 

প্রাচ্যের ম্যানচেস্টারখ্যাত নরসিংদীর বাবুরহাট। দেশীয় কাপড়ের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি কাপড়ের বাজার এটি। এমন কোন কাপড় নেই যা এখানে পাওয়া যায় না। শাড়ী, লুঙ্গি, গামছা, বেডশিট, খ্রিপিচ, তোয়ালে, থানকাপড় থেকে শুরু করে সকল প্রকার কাপড় বেচা-কেনা হয় এই হাটে। আর এসব কাপড় নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার তাঁতশিল্পে উৎপন্ন হয়ে থাকে। প্রতি বছরের রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে বিগত ১১ মাসের থেকে বেশী বেচা-কেনা হয়ে থাকে এখানে। ফলে কুলি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা পর্যন্ত ব্যস্ততার কারণে দম ফেলার সময় নেই। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত থাকে বাবুর হাট। কিন্তু এবার তার ভিন্নচিত্র।

যে বাজারে রমজানের ১৫ দিন আগে থেকে বেচা-কেনা শুরু হতো সেখানে এখনো পুরোধমে নেই বেচা-কেনা। ব্যবসায়ীরা দোকানে বসে অলস সময় পার করছেন। দেখা মিলছে না দুরদুরান্তের বড় বড় ব্যবসায়ীদের। যারা আসছেন তারাও আবার কিনছেন আগের তুলনায় অর্ধেক কাপড়। এতে ব্যবসায়ীরা অনেকটা দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। দেশী কাপড়ের দাম খুব একটা না বাড়লেও ইন্ডিয়া থেকে অবৈধপথে আসা কাপড় বাজারে আসায় দেশীয় কাপড় ক্রয়ে আগ্রহ কমে আসছে ক্রেতাদের।

ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে কাপড় নিতে এসেছেন ইমরান হোসেন রনি নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, তার এলাকায় একটি কাপড়ের শোরুমের জন্য সপ্তাহে একবার এই বাজারে কাপড় নিতে আসেন। এখানকার কাপড় মানে, গুনে ও দামে হাতের নাগালে। এছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ব্যবসায়ীদের আচার আচরণ ভালো দেখে তিনি এখানে আসেন। এবার গ্রামাঞ্চলে কাপড় কেনায় সাধারণ মানুষের আগ্রহ কম। যারফলে বিগত সময়ের থেকে এবছর বিক্রি কম। অন্যান্য বছর তিনি লাখ টাকার কাপড় কিনতেন। কিন্তু এবার বেচাবিক্রি মন্দা থাকায় মাত্র ৪০ হাজার টাকার কাপড় কিনেছেন।

বাবুর হাটের টাঙ্গাইল শাড়ী বিতানের বিক্রেতা সেলিম মিয়া জানান, এই বাজারে ১১ মাস যা বিক্রি হয়, তার থেকে বেশী বিক্রি হয় এই রমজান ঈদকে ঘিরে। আর ব্যবসায়ীরা ঈদের বিক্রির জন্য ভালো ভালো কাপড় নিয়ে দোকান সাঁজায়। এবারও সাঁজিয়ে বসে আছে, কিন্তু ক্রেতা নেই। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন। যেখানে রমজান শুরু হওয়ার ‍দুই সপ্তাহ আগে বেচা-কেনা শুরু হতো সেখানে রমজান এক সপ্তাহ চলে যাওয়ার পরও কোনো আশানুরুপ বেচা-কেনা নাই।

বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি ও বাজারে একাধিক অগ্নিকান্ডে এবার ব্যবসায়ীদের বেচা-কেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানান বাবুর হাট বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মনিরুজ্জামান মনির। তিনি আরও জানান, বিগত ২টি বছরের করোনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত বছরের অক্টোবর মাসে বাজারে এক ভয়াবহ  অগ্নিকান্ডে শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবার দেশের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ থাকায় বাজারে ক্রেতা নেই। যারফলে ব্যবসায়ীরা মনমরা হয়ে আছে। এরপর আবার গত সপ্তাহে আরেক দফা অগ্নিকান্ডে আরও বেশকিছু দোকন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এভাবে একের পর এক ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। 

বাজারে কিছু ইন্ডিয়ান কাপড় প্রবেশের কথা শিকার করে দেশীয় কাপড়ের চাহিদা রক্ষায় বিদেশী কাপড় রুখতে ব্যবসায়ী, বাজার কমিটি ও প্রশাসন যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক রোটারিয়ান মোহাম্মদ আল-আমিন রহমান। 

বাবুর হাটে ছোট বড় প্রায় ৫ হাজারের মতো কাপড়ের দোকান রয়েছে। যার সাথে জড়িয়ে আছে কয়েক লাখ পরিবারের সদস্য। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.