নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ থাকা জরুরি। নিয়োজিত ভেটেরিনারি সার্জন কিংবা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের এই সনদ দেওয়ার কথা। বাস্তবে এ কাজটি তদারকি নাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সনদ ছাড়া পশু জবাই করা হয়ে থাকে। এমন একটি খবর গত ১০ মার্চ রবিবার মুন্সীগঞ্জের স্থানীয় দৈনিক রজত রেখা প্রকাশিত হয়েছে।
খবর থেকে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জের একমাত্র মুন্সীরহাটের কসাইখানা রোগে আক্রান্ত পশু জবাই করতে দেখা গেছে। নানা রকমের পশু জবাই হয়, এই কসাই খানায়। কসাইখানাতে পশু জবাই করার সময়তে একজন পশু ডাক্তার থাকার বিধান রয়েছে। তার সামনে পশু জবাইয়ের পরে একটি সীল দেয়ার বিধান রয়েছে মাংসের উপরে। সেটি এখানে হচ্ছে না কোনভাবে।
মুন্সীগঞ্জ ৬টি উপজেলায় শ্রীনগর বাজার, সিরাজদিখান বাজার, লৌহজং বাজার, টংঙ্গীবাড়ি বাজার, গজারিয়া বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মাংস কিনতে একজনের সাথে কথা হয়, মাংস কিনেছি। কিন্তু সুস্থ নাকি অসুস্থ তা জানি না। সাধারণ ক্রেতারা উচ্চমূল্য দিয়েও ভেজালমুক্ত মাংস কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ভোররাতে সবার অগোচরে গরু-ছাগল ও ভেড়া জবাই হয়। ফলে আমরা কী সুস্থ নাকি অসুস্থ, পশুর মাংস টাকা দিয়ে কিনে খাচ্ছি তা কেউই আমরা জানি না। গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ছাড়পত্র চিকিৎসক দিয়েছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাব নাই। তবে জবাইয়ের আগে পশুর ডাক্তারি পরীক্ষা করা প্রাণিসম্পদ বিভাগের দায়িত্ব। মাংস বিক্রেতারদের পশু জবাইয়ের আগে পশুসম্পদ দপ্তর থেকে ডাক্তারি পরীক্ষা করার জন্য বলা হলেও কোনো মাংস বিক্রেতাই তা করছেন না। তারা রাত ৩টায় পশু জবাই করে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। ফলে কোনটি সুস্থ আর কোনটি অসুস্থ পশু, তা বলা যাচ্ছে না। যানা গেছে জবাইয়ের আগে কোনো পশুচিকিৎসক পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসেন না। তাই স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই ও মাংস বিক্রি করে আসছে সবাই। এতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
শ্রীনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, এটা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের একার কাজ না। কসাইখানায় আনা গবাদি পশু চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার দেওয়া সনদের ভিত্তিতেই জবাই করার বিধান রয়েছে। তারা আমাদের কাছে আসে না। বিক্রেতারা জবাইয়ের আগে তাদের পশু প্রাণিসম্পদ দপ্তরে আনলে তা পরীক্ষা করে সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোসারেফ হোসেন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লেকক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
[email protected]