× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রোজা শুরু না হতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

মো. ওয়াজেদ আলী

১১ মার্চ ২০২৪, ১৫:৫২ পিএম

রোজা শুরু না হতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম উত্তাপ ছড়াচ্ছে সবজি বাজারেও। ১১ মার্চ পবিত্র মাহে রমজান শুরুর এখনও ১ দিন বাকি। তারপরেও দেশের খোলা বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। মাসখানেক আগেও ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে। আর এখন ভালো মানের ছোলা কেজি ১১০ টাকা এবং কিছুটা দুর্বল মনের ছোলা কেজি ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কেবল ছোলা নয় খেজুর সহ এমন কোনো নিত্যপণ্য অবশিষ্ট নেই যার দামে আগুন লাগেনি।

আসন্ন রমজানে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকারি সংস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও মন্ত্রণালয়। তবু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। পাশপাশি বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে শীতের সবজিও। এ অবস্থায় রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে মহাচিন্তায় সাধারণ ক্রেতারা। অসাধু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে রোজায় নিত্যপণ্যের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

সরজমিনে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রধান পাইকারি বাজারসহ খুচরা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। বিক্রেতাদের দাবি, রোজা সমানে রেখে পণ্যের দাম বাড়ছে দ্রুত গতিতে। মূলত মিল পর্যায় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বাড়ছে দাম। মিল মালিকদের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে রোজায় দাম আরও বাড়তে পারে। রোজার বাকি এখনও ১দিন। এর মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে আটা-ময়দা, ডাল-ছোলা ও চিনির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১১০ টাকায়।

ছোলার পাশাপাশি বাড়ছে অন্যান্য ডালের দামও। গত এক মাসের মধ্যে এসব পণ্যের দাম ১০-৩০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, ডাবলির ভাল ৭৫ টাকা। মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১১০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যান্য পণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, প্যাকেট আটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭০ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়।

আর আমদানি শুল্ক অর্ধেক কমানোর পরও বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও।

বাজারের পাইকারি মুদির দোকানদার অনেকে জানান, রোজাকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে মিল মালিকরা। সরকার তাদের ওখানে অভিযান চালায় না, মিলগুলোতে অভিযান চালালে পণ্যের দাম এমনিতেই কমে যাবে। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, পণ্যের দাম খুচরা বিক্রেতাদের হাতে নেই। বাড়তি দামে কেনায়, বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রতি কেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৪০-৩০০ টাকা, আজওয়া খেজুর ১৬০০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ১০০০ টাকা ও মেতজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বিলাসী পণ্যের মতো শুল্ক আরোপ করা হয়েছে খেজুরে। গত এক বছরের ব্যবধানে খেজুর আমদানি খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। পাশপাশি আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে বাড়ছে খেজুরের চাহিদা, এতে বাড়ছে দামও।

এছাড়া প্রতি কেজি মাল্টা ২৮০ টাকা, কমলা ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ২৮০ টাকা, নাশপতি ৩৫০ টাকা, আনার ৪০০ টাকা, লাল আঙুর ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে মসলার বাজারেও গত এক মাসের ব্যবধানে এলাচ-লবঙ্গের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। গোলমরিচ, দারু চিনির দামও বাড়তি, এর কারণ জানেন না খোদ বিক্রেতারাও। তাদের দাবি, আমদানিকারকদের কারসাজিতেই বাড়ছে দাম।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, দাম কমেছে শুধু জিরার।  প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি লবঙ্গ ১ হাজার ৭০০টাকা, গোল মরিচ ৯০০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা ও দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা। এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে ফের বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে মুড়িকাটা পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। তবে বাজারে দেখা নেই পুরাতন দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও সেটি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পুরোদমে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠলেও তা চাহিদার তুলনায় কম। এতে বাড়ছে দাম। বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলেন, সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করলে দাম কমে আসবে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৪০ আর আমদানি করা রসুন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে আদা-রসুনের।

মোর্শেদ নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। রোজার আগেই সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এখনই বেগুনের কেজি ৬০ টাকা, রোজায় কী অবস্থা হয় আল্লাহ জানেন। দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্তদের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে চলে যাবে।

এ বিষয়ে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গাইবান্ধা সূত্র জানায়, রোজা ঘিরে সার্বিকভাবে বাজার তদারকি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, ভোজ্যতেলসহ বেশকিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে ইফতার তৈরিতে যেসব পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে তার ভেতরে কারসাজি আছে কিনা দেখা হবে। অনিয়ম পেলে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.