আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অবসরপ্রাপ্ত স্পেস টেলিস্কোপ কেপলার। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অসংখ্য গ্রহের সন্ধান দিয়েছে এ দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি। এবার নতুন একটি ভিন্ন জগতের সন্ধান দিয়েছে এটি।
এ জগতে রয়েছে সূর্যের চেয়েও বড় নক্ষত্র। দানব আকৃতির এই নক্ষত্রকে ঘিরে পৃথিবীর মতোই ঘুরপাক খাচ্ছে সাতটি গ্রহ। আর পৃথিবীর থেকেও এসব গ্রহ আকারে অনেক বড়।
‘দ্য জার্নাল অব প্ল্যানেটারি সায়েন্স’ নামক এক বিজ্ঞান পত্রিকায় এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই জগতেও একটি ‘সূর্য’ রয়েছে, যাকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে সাতটি গ্রহ। তবে গ্রহগুলো সৌরজগতের গ্রহের চেয়েও বেশি গরম। সাতটি গ্রহই আকারে পৃথিবীর থেকে বড়, কিন্তু নেপচুনের থেকে ছোট। কেপলারের নামে এই জগতের নাম রাখা হয়েছে কেপলার-৩৮৫।
প্রাথমিকভাবে, কেপলারের অভিযান শেষ হয়েছিল ২০১৩ সালে। কিন্তু তার পরেও কাজ চালিয়ে গেছে সে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত কাজ করেছে কেপলার। অভিযানের এই দ্বিতীয় অধ্যায়কে বলা হতো ‘কে২’। কেপলারের মহাকাশ-অনুসন্ধান থেকে পাওয়া তথ্য এখনো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আর উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অসংখ্য গ্রহের সন্ধান দিয়েছে এই দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি।
নাসার ‘এমস রিসার্চ সেন্টার’-এর বিজ্ঞানী জ্যাক লিসাউয়ের জানিয়েছেন, কেপলার-৩৮৫-এর কেন্দ্রস্থলে রয়েছে সূর্যের মতো একটি তারা। তবে সূর্যের থেকে এটি ১০ শতাংশ বড়। ৫ শতাংশ বেশি গরম। নক্ষত্রটির কাছাকাছি থাকা গ্রহ দুটি পৃথিবীর থেকে সামান্যই বড় এবং পাথুরে ভূমি। পাতলা বায়ুস্তরও থাকতে পারে। বাকি গ্রহগুলো বেশ বড়। এক-একটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ। এই গ্রহগুলোতে মোটা বায়ুস্তর রয়েছে বলেও বিজ্ঞানীদের অনুমান।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ৪৪০০ গ্রহের সন্ধান দিয়েছে কেপলার। এর মধ্যে ৭০০টি মাল্টি-প্ল্যানেট সিস্টেম।
কেপলার নভোযান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মহাকাশ মানমন্দির যাকে নাসার কেপলার মিশনের মহাকাশ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। এর উদ্দেশ্য অন্যান্য তারার চারদিকে আবর্তনরত পৃথিবী-সদৃশ তথা ভৌম গ্রহ আবিষ্কার। নভোযানটির নাম রাখা হয়েছে অষ্টাদশ শতকের প্রখ্যাত জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইয়োহানেস কেপলারের নামানুসারে।