× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নন-লাইফ বীমাশিল্প বিকাশে কিছু বাস্তব ভাবনা

আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী

০৭ আগস্ট ২০২৩, ১৬:২৬ পিএম

নন-লাইফ বীমাশিল্পের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে আমার মনে হয় অর্থাৎ আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো কিছু নিয়ম-নীতি সংশোধন করা একান্ত প্রয়োজন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বীমা খাত জাতীয় অর্থনীতিতে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হচ্ছে না। যা ভবিষ্যৎ বীমাশিল্পের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। 

নন-লাইফ বীমাশিল্পের বিকাশের জন্য সমস্যাগুলো হলো:

* নির্ধারিত এজেন্ট কমিশনের অতিরিক্ত কমিশন প্রদান।

* বিশ্ব বীমা বাজারের সাথে আমাদের বীমার প্রিমিয়াম হার অনেক বেশি।

* নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে এজেন্ট প্রথা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন।

* নন-লাইফ বীমা খাতে পণ্যের স্বল্পতা রয়েছে।

* নন-লাইফ বীমার ক্ষেত্র বা পরিধি বিস্তারের জন্য বীমাকৃত খাতসমূহ চিহ্নিত করে তা বাধ্যতামূলক করা একান্ত প্রয়োজন।

* নন-লাইফ বীমা আইনের কিছু ধারা সংশোধনপূর্বক নন-লাইফ বীমাশিল্পের উন্নয়নের জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

উপরোক্ত সমস্যা সমাধান এবং নন-লাইফ বীমাশিল্পের বিকাশের জন্য নিচে আমার কিছু মতামত উপস্থাপন করছি-

১. বেসরকারি খাতের নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স শিল্প বিকাশের জন্য সরকারি সম্পত্তির বীমা শুধুমাত্র সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের উপর অর্পিত করা একান্ত প্রয়োজন। এতে বীমাক্ষেত্রে সুষ্ঠু শৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।

২. সরকারি সম্পত্তির বীমার প্রিমিয়াম অর্থাৎ ৫০ শতাংশ সকল বেসরকারি নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মধ্যে সমহারে বিতরণ করার যে প্রচলন রয়েছে তা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন।

৩. নন-লাইফ বীমাশিল্পের সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশে নন-ট্যারিফ মার্কেট বিবেচনা করা সময়োপযোগী হবে। কারণ বাংলাদেশে ট্যারিফ মার্কেটের হার বিশ্ব বাজার থেকে অনেক বেশি। যার ফলে অতিরিক্ত কমিশন প্রদানের প্রবণতার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া নন-ট্যারিফ মার্কেটের ফলে আমরা বিশ্বের বীমা সেবার সাথে প্রতিযোগিতামূলক বীমাসেবা দিতে সক্ষম হবো।

৪. পুনঃবীমার ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচলিত আইন অর্থাৎ ৫০% বাধ্যতামূলক সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের সাথে পুনঃবীমা করতে হবে বাকি ৫০% ওভারসিস মার্কেটে করা যায়, তা হ্রাস করে ৩০% সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের সাথে এবং ৭০% ওভারসিস মার্কেটে করার বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ৭০% এর ক্ষেত্রে বিকল্প থাকতে পারে যেকোনো কোম্পানি তা সাধারণ বীমা কর্পোরেশন অথবা বিদেশি পুনঃবীমাকারীদের সাথে পুনঃবীমা করতে পারবে।

৫. যেকোনো নন-লাইফ বীমার নতুন পণ্য যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি উদ্ভাবন করবে তাকে প্রথমে বাজারজাত করার সুযোগ দিতে হবে এবং যদি সফলতা আসে তবে বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থেকে ওই কোম্পানি নতুন উদ্ভাবিত পণ্যের অনুমোদন নিবে। এতে যেমন নিয়ম-নীতির বাধ্য-বাধকতা হ্রাস পাবে, তেমনই বিভিন্ন কোম্পানি নতুন পণ্য উদ্ভাবনে উৎসাহ পাবে। 

মূলত বীমা দাবি যেকোনো নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সক্ষমতার পরিমাপের জন্য প্রধান মানদণ্ড। তাই বর্তমানে প্রচলিত বীমা দাবি নিস্পত্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের তথ্যাদি ও নথিপত্র প্রদানের যে প্রক্রিয়া রয়েছে তা সহজীকরণ একান্ত প্রয়োজন এবং তা সম্ভব।

নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বীমাপত্র প্রসারে প্রিমিয়াম পরিশোধে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। অর্থাৎ আমার ব্যক্তিগত মতামত প্রিমিয়াম পরিশোধে পরবর্তী দিনে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকরণের যে আইন আছে তা কিছুটা শিথিল করে ন্যূনতম এক মাস করা প্রয়োজন এবং এক মাসের পর যদি প্রিমিয়াম পরিশোধ হয় তবে প্রতিদিনের জন্য বিবেচনাযোগ্য জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে।

উপরোক্ত বিষয়াদি পর্যালোচনা ও বিবেচনাপূর্বক আমরা যদি সুষ্ঠু ও বাস্তবসম্মত বীমা কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নিয়ম-নীতি সংশোধনপূর্বক নন-লাইফ বীমাশিল্প পরিচালনায় সক্ষমতা আনতে পারি, তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উপর গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সাথে নন-লাইফ বীমাশিল্পের অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকার প্রতিফলন ঘটবে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সকলের সম্মিলিত বাস্তব চিন্তাধারা নন-লাইফ বীমাশিল্পের বিকাশ ঘটাতে সম্ভব।


লেখক: মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ জেনারেল ইনসিওরেন্স কোং লি.

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.