× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কৃষ্ণচূড়া-জারুল-সোনালুতে সেজেছে বরিশালের প্রকৃতি, মুগ্ধ পথিক

মো. মোছাদ্দেক হাওলাদার, বরিশাল

১৮ মে ২০২৩, ০৬:৫৭ এএম

ফুল ফোটার ঋতু বললেই মনে আসে ঋতুরাজ বসন্তের কথা। আর গ্রীষ্ম মানেই দাবদাহ। গরমে হাঁসফাস করা এক অতিষ্ট সময়। কিন্তু এর মধ্যেই আশীর্বাদ হয়ে প্রকৃতিতে ফোটে নানা রঙের বাহারী ফুল। তেমনি গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ্দুরে কৃষ্ণচূড়া, জারুল-সোনালুতে বর্ণিল রূপে সেজেছে বরিশালের প্রকৃতি আর পথঘাট। এসব ফুলের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও।

কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে/ আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’। পথিকের সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতেই ফোটে কৃষ্ণচূড়া। তার রঙ যেন সতেজ করে দেয় পথিকের মন। বরিশাল নগরীর রুক্ষ প্রকৃতিতে যেন এখন জীবনের স্পন্দন। গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখে মনে হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের সঙ্গে ডালে ডালে যেন আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়ার লাল আবির গ্রীষ্মকে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা। কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাল লাল ফুলে ছেয়ে গেছে। যে দিকে চোখ যায় যেন সবুজের মাঝে লালের মূর্ছনা। এদিকে, ঋতুচক্রের আবর্তনে সোনালু আর জারুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারও হাজির হয়েছে প্রকৃতিতে। প্রকৃতির এই অপরূপ সাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।

গ্রীষ্মের ফুলে এভাবেই বর্ণিল হয়েছে বরিশালের প্রকৃতি। শহরের আনাচে কানাচে, পিচঢালা পাকা সড়কের পাশে, গাঁয়ের মেঠো পথে কিংবা স্তব্ধ দীঘির ধারে সারি সারি গাছে এখন শোভা পাচ্ছে নানা রঙের বাহারি ফুল। পথে প্রান্তরে ফোটা কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু আর কনকচাঁপা প্রশান্তি ছড়াচ্ছে পথিকের মনে। বৈশাখ এলেই যেনো প্রকৃতি ভালোবাসার কথা জানান দিতে এমন সেজেগুজে হেসে ওঠে। কোনো আয়োজন ছাড়াই প্রকৃতিতে চোখজুড়ানো বর্ণিল ফুল বাঙালি হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়।

সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদী পথে বরিশালের প্রবেশদ্বার লঞ্চ ঘাট এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে কৃষ্ণচূড়া গাছের দীর্ঘ সারি। প্রতিটি গাছই ছেয়ে গেছে কৃষ্ণচূড়া ফুলে। ফুলের উপর রোদের হালকা ঝিলিক পড়তে মনে হয় এ যেন, জলন্ত আগুনের লিলাহীন শিখা। একই সৌন্দর্য্যের দেখা মিলে বরিশালের ভ্রমণ পিপাসুদের তীর্থ স্থান বান্দ রোড সংলগ্ন নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক) গেলে। সেখানে সোলানু ফুলের সোনালী আভায় ছেয়ে গেছে পুরো বেলস পার্কের লেকের চারপাশ। সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ। গাছগুলোতে কিশোরীর কানের দুলের মতো জ্যৈষ্ঠর হাওয়ায় দুলতে থাকে হলুদ-সোনালি রঙের থোকা থোকা ফুল। আবার ফুলের ফাঁকে দেখা যায় লম্বা ফল। হলুদবরণ সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখে চারপাশ। এখানে সারিবদ্ধ সোনালুর মাঝে মাঝে থাকা জারুল ফুলের সারি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয় বেলস পার্কের সৌন্দর্যকে।

নগরীর বেলস পার্ক ঘুরতে আসা স্কুল শিক্ষিকা সানজিদা বলেন, ‘এখানে ঘুরে দেখার মত কিছুই নেই। শুধু সুবিশাল এক মাঠ আর তার চারপাশে ওয়াকওয়ে। অনেক আগে এসে গেছি। তেমন একটা আসা হয় না। তবে এখন এসেছি শুধু কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালু ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করতে আর ছবি তুলতে।’

নদী পাড়ে ঘুরতে আসা গ্লোবাল ভিলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেতু মনি বলেন, বরিশালের অনেক জায়গায় কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালু ফুল ফুটতে দেখেছি। তবে লঞ্চ ঘাট এলাকায় একসাথে সারি সারি অনেক বেশি গাছ থাকায় সেখানের সৌন্দর্য অনেকটা মুগ্ধ করে সবাইকে। কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালু ফুলের চোখ জুড়ানো সৌন্দর্যে ছেয়েগেছে গোটা বরিশাল।

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণা আক্তার সালমা বলেন, ‘আমরা শৈশবে সোনালু গাছ বাড়ির আশপাশেই দেখেছি। তবে এখন আর দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে সোনালু গাছের দেখা মেলে। গ্রীষ্মকালে জারুল, কৃষ্ণচূড়া সোনালু ফুল আমাদের জন্য উপহার। তবে প্রকৃতিকে সাজাতে আমাদেরও সবার এগিয়ে আসা উচিত। আমাদের বেশি বেশি এসব গাছ রোপন করা উচিত।’

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.