× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কষ্টে ভরা নার্সদের জীবন

বৈষম্য দূর করে নার্সদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে: ডিজি নার্স

হালিম মোহাম্মদ

১২ মে ২০২৩, ০৮:৩৪ এএম

মনিরা আক্তার। পেশায় তিনি একজন সেবিকা। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। সকাল ৮টায় কর্মস্থলে হাজির। টানা ৮ ঘণ্টা ব্যস্ত থাকেন অজানা-অচেনা মানুষের সেবায়। এভাবেই কেটে গেছে মনিরার কয়েক বছর। মানুষের সেবা করতে পারছেন এতেই তার স্বস্তি।

মনিরা আক্তার বলেন, আমাদের কাজই হলো মানুষকে সেবা দেওয়া। তাই সেবা দিতে আমার অনেক ভালোই লাগে। তবে নিজেরা কখনো অসুস্থ হলে তাদের পাশে কেউ থাকে না বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, নার্সরা যখন অসুস্থ হয় তখন আমাদের পাশে কেউ থাকে না। আমাদের অসুস্থতাকে অসুস্থ বলে অনেক সময় গণ্য করা হয় না। এতে অনেক কষ্ট লাগে।

শুধু মনিরা নয়, তার মতো রাজধানীসহ সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য নার্স। যারা মানবসেবাকে নিয়েছেন ব্রত হিসেবে। কেউ কেউ সারারাত জেগে ডিউটিতে থাকেন ব্যস্ত। ব্যক্তি জীবনের চেয়ে প্রতিষ্ঠান আর সেবাই তাদের ধর্ম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা আক্তার। এক সন্তানের জননী এই কর্মজীবী নারী সমানতালে বাসা ও অফিস সামলান। একই সাথে সংসার সামলানো, বাচ্চা লালন-পালন করা এবং কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখী হতে হয় তাকে। নার্সদের শিফটিং ডিউটি থাকায় বিকেল ও নাইট শিফটে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। বিশেষ করে বাচ্চাকে কার কাছে রেখে যাবেন এটা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। সাহায্যকারী না পাওয়ায় তার সমস্যা বেড়ে গেছে বহুগুণ।

এর পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তো রয়েছেই। কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতনদের নানা অযাচিত হস্তক্ষেপ, রোগী/রোগীর স্বজনদের দুর্ব্যবহার অন্যতম। অনেক সময় রোগীর স্বজনদের দ্বারা অনেককে শারীরিক হেনস্তারও শিকার হতে হয়। এছাড়া সরকারি হাসপাতাল হওয়াতে সবসময় অতিরিক্ত রোগীর চাপ লেগেই থাকে।

তিনি সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়েই এ পেশায় এসেছিলাম। সরকারি চাকরি নেওয়ার সময় ব্রত করেছিলাম, আমি দায়িত্বকে দায়িত্বই মনে করব। সেই থেকে নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দিন কিংবা রাত আমি দায়িত্বকে দায়িত্বই মনে করি।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিনিয়র স্টাফ নার্স সুইটি দাস বলেন, দীর্ঘদিন আমি নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। অনেক সময় আমাদের পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হলেও ডিউটিতে যেতে হয়।

তিনি আরও বলেন, তিন শিফটে আমাদের ডিউটি পালন করতে হয়। সব চেয়ে বেশি কষ্ট হয় তাদের রাতে শিফটে ডিউট করা। রাতে যখন সবাই বাসায় ঘুমায় ঠিক তখন আমরা রোগীদের সেবায় ব্যস্ত থাকি। তবে বেশিভাগ সময় এটা আমার অনেক ভালো লাগে।

মগবাজার এলাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন সুমাইয়া নামে এক জুনিয়র নার্স। তিনি সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, ডিউটি পালন শেষে অনেক সময় ঘরে গিয়ে রান্না করতে ভালো লাগে না। সেই সময় বাহিরে থেকে খাবার কিনে খেতে হয়। তারপরও রোগীদের সেবা দিতে কমতি হয় না আমাদের।

এবিষয়ে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান জুয়েল সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পদে পদে নার্সরা নিহগৃত হচ্ছে। জীবন বাজী রেখে অসুস্থ ব্যক্তিদের সেবা দিয়ে কষ্ট লাগবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে নার্স। আর সে নার্স যখন অসুস্থ হন। তকণ তার পাশে কেউ থাকে না। এর চেয়ে বড়কষ্ট আর কিছু হতে পারে না। শুধু তাই নয়, চাকরির ক্ষেত্রে নাসর্দের রয়েছে বৈষম্য ও সেচ্ছাচারিতা।  আন্তর্জাতিক নার্স দিবসে এই সকল সমস্যা এবং বৈষম্য দুর করে মহান পেশাকে আরো উন্নত করার দাবি জানান এই নেতা। 

অপরদিকে নার্সদের সেবা প্রদান সম্পর্কে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের (ডিজিএনএম) মহাপরিচালক মাকসুরা নূর সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, একজন মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার প্রতি নার্সদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। সেজন্য নার্সদেরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাদের সম্পর্কে আমাদের ধারণা পরিবর্তন করতে হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.