× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

হারাতে বসেছে পুরান ঢাকার কাসিদা দল

হালিম মোহাম্মদ

২৭ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৪ এএম

সময়ের সঙ্গে হারাতে বসেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কাসিদা দল। গুটি কয়েক এলাকা ছাড়া পুরান ঢাকায় কাসিদা গাওয়া কাফেলা নেই বললেই চলে। বংশাল, নাজিরাবাজার, আগাসাদেক রোড, সাতরওজা রোড, চক বাজার, নাজিম উদ্দিন রোড, লালবাগ ও হোসনি দালানের আশপাশে এখনো রোজাদাররা জেগে ওঠার আগেই জেগে ওঠে কাসিদা দল।

উর্দু-বাংলা মিশিয়ে কাসিদা গাওয়া হয় দলবদ্ধভাবে। কয়েক বছর আগেও রমজান মাসে এমন সব কাসিদায় সরব হয়ে উঠত গভীর রাতের পুরান ঢাকার অলিগলি। সেহরির সময় হওয়া মাত্র একদল মানুষ গলা ছেড়ে গান গেয়ে ঘুমন্ত মানুষদের জেগে উঠাতো। এখন সে কাসিদা দলের ভোরাতের আওয়াজ খুব কমই দেখা যায়। 

বংশালের নাজিরাবাজারের ফল ব্যবসায়ী আবুতাহের  বলেন, আমাদের মহল্লায় এখণো কাসিদা গাওয়া হয়। তবে আগের মতো না। কেউ কেউ কাসিদা বললেও অনেকেই শুধু মুখে ডেকে যায়। নাজিম উদ্দিন রোডের বাই সাইকেল বিক্রেতা সায়েম বলেন, আগে তো মুখে কাসিদা গাইত। ডিজিটাল যুগে রেকর্ডারে কাসিদা বাজানো হয়। বড় স্পিকারে কাসিদা বাজে আর কাসিদা দল এলাকা ঘুরে মানুষদের জাগিয়ে তোলে।

আগাসাদেক রোডের ব্যবসায়ী মো. মন্টু বলেন, কাসিদা গাওয়া হয় দুই পর্বে। পয়লা রোজা থেকে পনের রোজা পর্যন্ত মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন কবিতা, আর পনেরো রমজান থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত বেদনাবিধুর সুরে বিদায়ের কবিতা।

কাসিদা দলকে উৎসাহ দিতে প্রতি বছর সেরা কাসিদা দলকে পুরস্কৃত করে হোসনি দালান কমিটি। সাতাইশের রাতে কাসিদা পাঠ প্রতিযোগিতা হয় হোসনি দালানে। সেখানে সেরা কাসিদা দল নির্বাচন করা হয়। পাশাপাশি প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেরা দলকে পুরস্কৃত করা হয়। 

কাসিদা কাফেলা সম্পর্কে হোসেনীদালানের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন,  যৌবনে আমরাও কাসিদা গাইতাম। তখন কাসিদার প্রতি প্রেম ছিল। আবেগ ছিল। সারা মাস কাসিদা গেয়ে ঈদের দিন মহল্লার ঘরে ঘরে যেতাম বখশিশের জন্য। মানুষ খুশি হয়ে যা দিত তাই নিতাম। কিন্তু এখন যারা কাসিদা গায়, কেন জানি মনে হয় তাদের মাঝে সেই প্রেম নেই। দিন দিন কাসিদার আগ্রহ কমে আসছে এ প্রেমের অভাবের কারণেই।

সাতরওজা মাজারের খাদেম মইন উদ্দিন বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কাসিদা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন হ্যারিকেনের আলোয় কাসিদা গাওয়া হতো। এখন তো আলোয় ঝলমল শহর। তা ছাড়া মোবাইল, এলার্ম ঘড়ি আসায় কাসিদা দলের কদর অনেকটা কমে গেছে মানুষের কাছে। কাসিদা দলের কদর কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ বলেছেন লালবাগের স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, কাসিদা মানে কবিতা। বর্তমান সময়ে কবিতা বোঝে, কবিতার কদর জানে এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তার পরও কাসিদার ভাষা ফার্সি। তাই এ প্রজন্মের কাছে কাসিদার গুরুত্ব কমে আসছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.