প্রিয়জনের হাতে একটি রক্ত গোলাপ তুলে দেবেন, তাতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। আজ সেদিন। প্রিয়জনের সান্নিধ্য নিয়ে রক্ত গোলাপ, হলুদ, কমলা, সাদা, ল্যাভেন্ডার কিংবা নীল রংয়ের পছন্দের যেকোনো গোলাপ তুলে দিতে পারেন প্রিয়জনের হাতে। চাইলে গোলাপ রঙা জামা বা পাঞ্জাবী গায়ে চড়িয়ে প্রিয়জনের সাথে উদযাপন করতে পারেন দিনটি। বাড়ির আঙিনা অথবা বারান্দার টবে রোপণ করতে পারেন লাল গোলাপ চারা।
তবে গোলাপের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় রং লাল। এই লাল গোলাপ চাষের গল্পটা পাঁচ হাজার বছরের পুরনো। জানা যায়, চীনে গোলাপ চাষ শুরু হলেও পরে ইতালির রোম ও গ্রিসেও এই ফুল জনপ্রিয়তা পায়। গোলাপ চারাকে সৌখিন উদ্ভিদ হিসেবে দেখা হয়েছিল একটা সময়। উপহার হিসেবে ধনীদের হাত ধরে চারাটি আসে শিল্পীদের কাছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আশা, শান্তি এবং প্রেমের প্রতীক থেকে যুদ্ধের প্রতীক হয়ে ওঠে গোলাপ। ১৫ শতকের দিকে ইংরেজ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবেও ব্যবহৃত হতো গোলাপ। গোলাপকে বলা হয় মনের গভীরতম অনুভূতি প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই গোলাপ পরিচিতি পেয়েছে ভালোবাসার আন্তর্জাতিক প্রতীক হিসেবে। প্রিয় মানুষটির হাতে গোলাপ তুলে দিচ্ছেন মানেই আপনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন ভালবাসার বার্তা।
এদিকে ‘গোলাপে রয়েছে আঁচ, পতঙ্গের ডানা পুড়ে যায়’ তবুও প্রিয়জনের জন্য গোলাপকেই বেছে নিয়েছিলেন কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। গোলাপ এভাবেই ভালোবাসার প্রতীকে গণ্য বিশ্ববাসীর কাছে। আর সে ভালোবাসার প্রতীক প্রিয় মানুষের হাতে তুলে দেয়ার দিন আজ। সারা বিশ্বে ৭ ফেব্রুয়ারি উদযাপন হয় রোজ ডে বা গোলাপ দিবস। এ দিবসের ঠিক সাত দিন পর আসছে ভ্যালেন্টাইন বা ভালোবাসা দিবস, এর দিন ক্ষণগণনা শুরুও এ দিন থেকে। প্রগাঢ় ভালোবাসা উদযাপনের অপেক্ষমান সময়গুলোকে আরও মধুর করে তুলতেই গোলাপ দিবসের সূচনা। রানি ভিক্টোরিয়ার আমল অর্থাৎ দেড়শ বছর আগের কথা। তখন নিজের অব্যক্ত ভালোবাসা প্রিয়জনকে জানাতে শুরু হয়েছিল গোলাপ বিনিময় প্রথা।
ভিক্টোরিয়ান যুগে মানুষ মনে করত, প্রিয় মানুষের হাতে গোলাপ তুলে দেয়া মানে মনের গোপন অনুভূতি জানিয়ে দেয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে এবং মানুষের ভালবাসা থাকবে। ততদিন গোলাপ ফুল দিয়ে প্রিয়জনবে বরণ করে নেয়ার প্রথা বিদ্যমান রবে।