× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নারী নির্যাতেনর মাত্রা বেড়েছে- ধরণও বদলেছে : খুশি কবির

১৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:০৭ এএম । আপডেটঃ ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:০৮ এএম

নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় তৃণমূলে কাজ করে যাচ্ছেন মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির। দুঃস্থ নারীদের কল্যাণে  সমন্বয়ক হিসেবে বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ‘নিজেরা করি’-তে যোগ দেন। নারীর বর্তমান অবস্থান, ক্ষমতায়ন, সম-অধিকারসহ নানা বিষয় নিয়ে একান্ত আলাপ করেছেন। খুশি কবিরের সাথে কথা বলেছেন সংবাদ সারাবেলার অনলাইন ইনচার্জ সাজেদা হক। ক্যামেরায় ছিলে ফরিদ উদ্দিন।

সংবাদ সারাবেলাঃ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পার করলো বাংলাদেশ। এই ৫০ বছরে নারীর অর্জন কতটুকু বলে আপনি মনে করেন?
খুশি কবিরঃ ৫০ বছরে বাংলাদেশের নারীর উন্নয়নের কথাই বলেন আর ক্ষমতায়নের কথাই বলেন, আমি বলবো দুটো দিক আছে। এক. সামাজিক সূচকে আমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছি। আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে। ৭১ নারীদের গড় আয়ু ছিলো ৫০ এর কোটায় ছিলো, সেটা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১। তখন নারীদের অবস্থা কতটা নাজুক ছিলো তা এই পরিসখ্যান দিয়েই বোঝা যায়। মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে। মেয়েদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেড়েছে, যেটা আগে অনেক কম ছিলো, সীমিত ছিলো। কর্মসংস্থানের সুযোগ যে বেড়েছে সেই পরিবর্তনটা বেশ ভালো। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অভিগম্যতা বেড়েছে, নারীরা অনেক জায়গায় যেতে পারছে  যা আগে সুযোগটাই কম ছিলো। ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসক (আগে শুধু গাইনী ছিলো বেশি), বিমানে, নৌ, সেনায়, ড্রাইভিং (রেলের ড্রাইভার), পাইলট- এমন অনেক পেশায় নারীদের অভিগম্যতা বেড়েছে, যা আগে কম ছিলো।  আগে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীতে শ্রম দিতো বেশিরভাগ পুরুষ, এখন সেখানে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীতেও নারীদের যুক্ত করা হয়েছে। এসব দেখে বলতে দ্বিধা নেই নারীরা যথেষ্ট ভালো করছে। আমরা দেখছি আমাদের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসতে পারছে। হারুক – জিতুক তারা খেলেছে-এটাও একটা বড় বিষয়। সুতরাং এসব অনেক বিষয়ে নারী অগ্রগতি অবশ্যই হয়েছে। ৭২ সালের কথা যদি বলি, তাহলে নারীদেরকে রাস্তা-ঘাটে ততটা দেখা যেতো না, যতটা এখন দেখা যায়। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সাফল্য কিন্তু ঈর্ষনীয়। বাংলাদেশের নারীদের এই যে উন্নয়ন, তা কিন্তু বিশ্বস্বীকৃত, প্রশংসিত।  আমি বলছি না যে নারীর অগ্রগতির যে হার তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, তবে নারী-পুরুষে যে বৈষম্যের হার, তা দ্রুতগতিতে কমানো গেছে এবং বাংলাদেশের এই পরিবর্তনটা বেশ দৃশ্যমান এবং বিশ্বেও সমানভাবে স্বীকৃত ও প্রশংসিত।

দুই.  একইসাথে আরেকটা বিষয়ে আমরা দেথতে পাচ্ছি যে, শিশুদের বিবাহের হার বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে এই সমস্যাটা অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে, বিভিন্ন দেশের তুলনায়। এই সমস্যাটা আমাদের সবচেয়ে বেশি। এটা কোনক্রমে কমানো যাচ্ছে না। অথচ যে মেয়েটার বাল্য বিবাহ হচ্ছে, তাঁর যে কত বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তা আমাদের এই সমাজ আগেও অনুভব করেনি, এখনও করছে না। ভেবে দেখেন, এতো অল্প বয়সে মেয়েটার বিয়ে হচ্ছে, সে বয়সে কিন্তু তার হাতে বই, বল থাকার কথা, তার খেলার কথা, আনন্দে থাকার কথা। সেই কচি মনটাকেই টেনে এনে সংসারে ঢোকানো হচ্ছে। তার ঘাড়ে তুলে দেয়া হচ্ছে সংসারের বোঝা। জীবনের যে চক্র শিশু-কিশোর-তরুণ-যুবক-বৃদ্ধ এই চক্রে শুধু মাত্র মেয়ে শিশুকে হুট করে যুবতী করে দেয়া হয়। সংসারের দায়িত্ব নেয়ার মতো সময়টাই একজন মেয়ে শিশুকে দেয়া হচ্ছে না। শারিরিকভাবে এটা একজন মেয়ে শিশুর জন্য ভীষণ কষ্টকর, মানসিকভাবে আরও বেশি কষ্টের। কম বয়সী একটা শিশু যখন কম বয়সেই গর্ভবতী হচ্ছেন শারিরিকভাবে তিনি কিন্তু দুর্বল এবং অপুষ্টিতে ভুগছেন, ফলে যে শিশিুটি জন্ম নিচ্ছে সেও অপুষ্টিজনিত রোগ নিয়েই জন্ম নিচ্ছে। এটা আমাদের দেশে এখনও কমাতে পারছি না আমরা।

তৃতীয়ত. আমাদের দেশে নির্যাতনের মাত্রাটাও কমছে না। বরং আমি বলবো নারীর প্রতি নির্যাতনের ধরণ এবং তীব্রতাটা এখন অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ অনেক উগ্র হয়ে গেছে। সামাজিক প্রতিরোধও এখন আর কেউ করতে চান না। সামাজিক অবক্ষয় হতে শুরু করেছে বলে আমি মনে করি। এটা একটা নেতিবাচক দিক বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে যখন বিশ্বে বাংলোদেশের উন্নয়ন নিয়ে বেশ আলাপ-আলোচনা হচ্ছে।

চতুর্থত নারীদের মজুরি কম দেয়া হচ্ছে। যদিও আইএলও কনভেনশনে আছে সমঅধিকারের কথা, সমমজুরির কথা। শুধু আইএলও কনভেনশন কেন বাংলাদেশের আইনেও কিন্তু মজুরি সমান এবং ৬ মাসের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু আইন থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৬ মাসের ছুটি তো দেয়ই না উল্টা ছাঁটাই করে। বিবাহিত হলে কোন কর্মীকে নিতে চায় না। অবশ্য এ সমস্যাটা শুধু বাংলাদেশের একার নয়, অন্য অনেক দেশেই এই সমস্যাটা আছে।

এসবের পাশাপাশি আমি বলবো এখনো কিন্তু যৌতুক প্রথাটা কমেনি। সবমিলিয়ে যে কয়েকটা বিষয়ের কথা উল্লেখ করলাম, এসব খাতে নারীর উন্নয়নটা তেমভাবে হয়নি। এসব থেকে কিন্তু আমরা অনুমান করতে পারি নারীর মর্যাদা, নারীদের আমরা কিভাবে দেখছি তা প্রকাশ পায়। আমরা কি দেখছি, এসববের কারণে কিন্তু নারীর নিরাপত্তা কমে যায়। আমাদের আইন যাই থাকুক না কেন আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং দায়ত্বিপ্রাপ্তদের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এই সমস্যার সমাধান হবে না, ফলে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকবো।

আমাদের বিচার ব্যবস্থায় নারীদের যেভাবে অশোভন একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, বিশেষ করে ধর্ষন মামলার বাদীকে কিংবা যৌন নির্যাতনের মামলার যেকোন নারীকে সেটারও পরিবর্তন আনা জরুরি বলে আমি মনে করি। শুধু আইন-শৃংখলা বাহিনী অথবা বিচার বিভাগের লোকের কথাই বা বলি কেন আমাদের সমাজের লোকেরাও কি নারীদের সেভাবে মর্যাদা দেয়। সমাজের লোকেরা কোর্টের বাইরে যেভাবে সালিশ করে দেয় সেটাও কিন্তু নারীদের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখে না। এই প্রথাও কিন্তু এখনও চলমান আমাদের দেশে। দেশের অনেক অগ্রগতি হওয়া স্বত্ত্বেও আমি মনে করি মূল একটা জায়গায় ঠিকভাবে উন্নয়নটা সাধন করতে পারিনি। একটা হলো  নারীর নিরাপত্তা, আরেকটা হলো  নারীর মর্যাদা  নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমরা এখনও অনেকটা পিছিয়ে  আছি।

সংবাদ সারাবেলা: স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেছে এবং করছে অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তাহলে কাঙ্খিত পরিবর্তনটা হচ্ছে না কেন?
খুশি কবির:  হ্যাঁ, এটা সত্য। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেছে এবং করছে অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে পচাঁত্তুরের পরে যখন জাতিসংঘ নারী দিবস পালন করা শুরু করলো, নারী দশক পালন করলো এর পর নারীদের জন্য বিশেষ কিছু উদ্যোগ নিলো যেমন প্লাটফর্ম ফর এ্যাকশনস নেয়া শুরু করলো তখন তৈরি হতে শুরু করলো নারী উন্নয়ন নীতি। জাতিসংঘ তার সদস্যভূক্ত সব দেশে থেকে নারীদের জন্য অবস্থান, উন্নয়ন পরিকল্পনা আহ্বান করা শুরু করে। তো জাতিসংঘ অনেক ইফোর্ট দিয়েছে নারীর উন্নয়নে, সেই সুরে বাংলাদেশও তাঁর উন্নয়ন পরিকল্পনায় নারীদের অগ্রাধিকার দিয়েছে । স্যোশাল ডেভলপমেন্ট গোল-এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা কিন্তু তখনি নির্ধারণ করে সরকার। নারীর সমতাকে বিষয়ে সরকার বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। সমসতা ছাড়াও আরও অনেকগুলো বিষয় আছে যেগুলোর মধ্যে নারীর মর্যাদা, নারীর নিরাপত্তাসহ সবকিছু। আমরা সবাই এসব ইস্যু নিয়ে কাজ করার কথা বলছি কিন্তু প্রতিদিন প্ত্রিকার পাতা খুললেই নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্রটা দেখতে পাই। ঘরের ভেতরে, পরিবারে সমাজে, কর্মক্ষেত্রেই নারীর প্রতি সহিংসতাটা কিন্তু বেড়েই চলেছে। সেই মেয়ে হোক বিধবা বা সিঙ্গেল অথবা তালাকপ্রাপ্তা, সন্তানসহ কিংবা সন্তানছাড়া, ছাত্রী কি ছাত্রী না, বোরখা পড়ে কি বোরখা পড়ে না- সকলেই কিন্তু সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি সেটাকেই সহিংসতা বৃদ্ধির মূল কারণ বলে মনে করি আমি।

এটা সত্য যে, নারীদের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল আছে। তারপরও এমন কিছু মান্ধাতা আমলের আইন আমাদের এখনও আছে যার পরিবর্তন করা সময়ের দাবি। অথচ সেই একই ধরণের আইন কিন্তু পার্শবতী বিভিন্ন দেশে পরিবর্তন করে সময়োপযোগী করা হয়েছে। ফলে কি হয়েছে, অপরাধ ঘটছে, অপরাধী ধরাও পড়ছে কিন্তু আইনের ফাঁকফোকর বেয়ে তারা বের হয়ে যাচ্ছে। যেকারণে অপরাধ কমছেই না। বিশেষ করে নারীর প্রতি সহিংসতার অপরাধ।

সংবাদ সারাবেলা: তাহলে মানসিকতার পরিবর্তনে আমাদের আর কি কি করা উচিৎ?
খুশি কবির: আসলে সরকারি বলেন আর বেসরকারি বলেন, আমরা সকলেই কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সমান অধিকার, সমান মর্যাদা রক্ষার জন্য কাজ করছি। এ সমঅধিকার আর মর্যাদা বিষয়ে তৃণমূলের বহু পুরুষদের সাথে আমাদের বৈঠক করতে হয় তখন বেশ বিস্তারিতভাবে বলা হয় কিন্তু তারপরও তাদের এই পরিবর্তনের প্রভাবটা সমাজে দেখতে পারছি না।

সংবাদ সারাবেলা: প্রভাব কি পড়েনি মোটেই?
খুশি কবির: হ্যাঁ পড়েছে তো বটেই। বেশ কয়েকটা উদাহরণ আমি দিয়ে দিতে পারি। যেমন ধরেন, কিছুদিন আগে একটি মেয়ে এসেছিলো আমাদের অফিসে। সে মাত্র ক্লাস এইটে পড়ে। তাকে নাকি জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরে তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে আমরা বিষয়টার একটা সমাধান করেছি। এর আগে আরেকবার দেখলাম একটা মেয়েকে রেপ করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক, সেই মেয়ের বাবা-মা মনে করছে বিয়ে করলে মেয়েটার একটা গতি হবে। মেয়েটা নিজেই প্রতিবাদ করেছে এবং ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে তার সাথে  ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ননা করেছে এবং প্রতিকারও পেয়েছে সাথে সাথে। কাজেই ভালো অফিসারও আছে অনেক। কিছু মানুষের মানসিকতারও পরিবর্তন হয়েছে।

গ্রামে-গঞ্জে বাবা-মায়েরা কি চিন্তা করে আপনি জানেন? তারা ভয় পায়, ভয় পায় মেয়েটা কি স্কুল-কলেজ শেষ করে বাসায় নিরাপদে ফিরতে পারবে, মেয়েটা রাস্তায় কোন ধর্ষনের শিকার হবে না তো, কিংবা তাকে কেউ জোর করে তুলে নিয়ে যাবে কি না। কারো সাথে প্রেম করে চলে যাবে কি না-এমন হাজারো প্রশ্ন অভিভাবকদের বাধ্য করে। কিন্তু আমাদের কথা হলো, কোন মেয়ে তো আর একা একা প্রেম করতে পারবে না, কারো সাথে প্রেম করতে হবে-সে দায় তো সেই মেয়ের একা নয়, যার সাথে করছে তারও। কিন্তু এই সময়টাই সেই মেয়ের জন্য উপযুক্ত কি না, সেই মানসিকতাটার পরিবর্তনটা জরুরি।

সংবাদ সারাবেলাঃ নারীর প্রতি এই পশ্চাৎপদ মানসিকতার দায় আপনি সমাজকে দেবেন নাকি রাষ্ট্রকে?
খুশি কবির: সবাইকে দেবো। অবশ্যই প্রথমে পরিবার, তারপর যে সমাজে বসবাস করছে সে সমাজ এরপর যে রাষ্ট্রে বাস করছে সে রাষ্ট্রও এই পশ্চাৎপদ মানসিকতা জিইয়ে রাখার জন্য দায়ি।

ধরেন ধর্মকে আমাদের অনেকেই নারী নির্যাতের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। সব ধর্মে কিন্তু নারীদের সম্মান দেয়া আছে। কিন্তু আমাদের এবং পার্শ্ববর্তীদের দেশের স্বার্থন্বেষী ধর্মগুরুরা এই ধর্মটাকেই হাতিয়ার বানিয়েছে। বিশ্লেষনটা সুবিধামতো সাজিয়ে নেন সুবিধাবাদীরা।

এখানে রাষ্ট্রে একটা ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি। এই যে ধর্মকেন্দ্রীক একটা ভুল ব্যাখ্যা করার এই যে চল-এই অপপ্রচার এবং অপব্যাখ্যাকে রোধ করতে সরকারেরে উদ্যোগ যথেষ্ট না। তারা মডেল মসজিদ-মাদ্রাসা বানাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এসব ব্যবহার করে মানুষের কাছে ধর্মের সঠিক ব্যাখাটা কিন্তু পৌঁছাতে পারছে না এখনও। কাজেই সরকারের একট বড় ব্যর্থতা আমি এখানে দেখতে পাই। ধর্ম মানুষ বিশ্বাস করে আর ধর্ম যিনি প্রচার করছেন তাকেও মানুষ বিশ্বাস করেন কিন্তু।

সংবাদ সারাবেলাঃ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের নারীদের অবস্থান কেমন?
খুশি কবির: বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় সব সূচকেই নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলংকার মেয়েরা বেশ ভালো অবস্থানে আছে। পাকিস্তান, ভারত কিংবা আফগানিস্তানের মেয়েরা বাংলাদেশের মেয়েদের চেয়ে খুবই খারাপ দিন পার করছে। নেপালে যখন থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু হলো এবং অনেক বাম রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় বসলো তখন থেকেই সেখানকার আইনে বিশেষ অধিকার দেয়া হয়েছে। ফলে সেখানকার নারীদের মর্যাদা বেড়েছে, অংশগ্রহণ বেড়েছে।

সংবাদ সারাবেলা: ৫০ বছর পর বাংলাদেশের নারীদের জন্য কি কি পরিবর্তন আপনি চাইবেন?
খুশি কবির:  আমাদের উত্তরাধিকার আইনটা সম্পুর্ণ পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের সংবিধান বলে যে নারীদের সবদিকেই সমান অধিকার হতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশেও সমান অধিকার দেয়া আছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনও পারিবারিক আইন ধর্ম দ্বারা পরিচালিত। এর পরিবর্তন হওয়া জরুরি। পারিবারিক আইনে আছে উত্তরাধিকার, অভিভাবকত্ব, ভরণ-পোষণ আর আছে তালাকের বিষয়টা। এই সব জায়গায় ধর্মীয় বিধিনিষেধকেই আইন হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তো একজন নারী অধিকার কর্মী হিসেবেই নয়, মানুষ হিসেবেও পরিবর্তন প্রত্যাশা করি।

সংবাদ সারাবেলাঃ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
খুশী কবিরঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.