বায়োস্কোপ, পালকিতে বর কনে, বরযাত্রা, গাঁয়ে হলুদ, ঢেঁকিতে ধানভানা, নকশী পিঠা তৈরি, জামাইকে পিঠা খাওয়ানো ইত্যাদি জীবন্ত প্রদর্শনী। মেলা ঘুরে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ক্লান্ত শরীরে বিকেলে সোনারতরী মঞ্চে বসে শুনছেন লালন, হাসন, ভাওয়াইয়া, জারি, সারি, ভাটিয়ালি, বাউলগান, পালাগান, কবিগান, হাছন রাজার গান।
ছুটির দিনে গতকাল শুক্রবার দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত ছিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব প্রাঙ্গণ। মাসব্যাপী এ মেলা যেন উৎসব আমেজে মেতে উঠেছে।
এবারের মেলার বিশেষ আকর্ষণ হলো দেশের পল্লী অঞ্চল থেকে আসা ৬০ জন প্রথিতযশা কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী। এছাড়া মেলায় ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, চট্টগ্রামের নকশিপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশিকাঁথা, নকশি হাতপাখা, মুন্সীগঞ্জের শীতলপাটি, মানিকগঞ্জের তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশশিল্প, মুন্সীগঞ্জের পটচিত্র, ঢাকার কাগজের হস্তশিল্পসহ ১০০টি স্টল। লোকজ উৎসব মেলা প্রাঙ্গনে প্রতিদিন গ্রামবাংলার হারিয়ে যেতে বসা হাডুডু, কানামাছি, ঘুড়ি উড়ানো, বউ সাজানো, গায়ে হলুদ, কাবাডি, লোক কারুশিল্প প্রদর্শনী, লোক জীবন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়াস্কোপ, নাগরদোলা ও গ্রামীণ খেলার আয়োজন ও পরিবেশিত হচ্ছে গ্রামীণ
লোক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলা প্রাঙ্গনে বসেই শিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতে নিজস্ব মেধা ও মননে তৈরি করছে বাহারী কারুপণ্য এবং তা প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। মেলায় বাড়তি আকর্ষন হিসেবে রয়েছে বাংলার লৌকিক আচার এবং ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলার জন্য নাগরদোলা,
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক একে এম আজাদ সরকার জানান, লোক কারুশিল্পের প্রসারের জন্য প্রতি বছরের মত আকর্ষণীয় বিভিন্ন
লোক কারুশিল্পের প্রসারের জন্য প্রতি বছরের মত আকর্ষণীয় বিভিন্ন খেলা, গান, প্রদর্শনী অনুষ্ঠান ছাড়াও এবারের উৎসবে গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মেলায় বসেছে মুড়ি মুড়কি, মন্ড মিঠাই থেকে শুরু করে গ্রামীণ হস্তশিল্প, বাঁশবেত, কাঠ, লোহা, পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী বিলুপ্ত প্রায় কুটির শিল্পের পসরা।
খেলা, গান, প্রদর্শনী অনুষ্ঠান ছাড়াও এবারের উৎসবে গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মেলায় বসেছে মুড়ি মুড়কি, মন্ড মিঠাই থেকে শুরু করে গ্রামীণ হস্তশিল্প, বাঁশবেত, কাঠ, লোহা, পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী বিলুপ্ত প্রায় কুটির শিল্পের পসরা। দেশের কৃষিজীবি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা, গ্রামীণ ঐতিহ্য লোকজ সংস্কৃতি ও কারুশিল্পের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্য মাসব্যাপী এ মেলা। গতকাল শুক্রবার সরেজমিন মেলা চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভি-
মেলায় ক্রেতার তুলনায় দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের ঢল। বার্ষিক শিক্ষা সফরে আসা একদল শিক্ষার্থী জানান, মেলায় এসে সোনারগাঁয়ের ইতিহাস ঐতিহ্য দেখার পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য কারুশিল্পের অনেক নিদর্শন উপভোগ করেছি। মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা স্বপরিবারে মেলায় ঘুরতে এসে বাংলার হারিয়ে যাওয়া নানা ঐতিহ্যবাহী অনেক জিনিসপত্র দেখেছি। ঘরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কিছু ঐত্যিহ্যবাহী পণ্য কিনেছি। মেলায় বসা একজন দোকানদার বলেন, মেলা শুরুর হওয়ার পর অন্যদিনের চেয়ে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বিকিকিনি অনেকটা ভাল।
তবে মেলার শেষ দিকে দর্শনার্থী ও ক্রেতার সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশা করছি। রংপুর থেকে শতরঞ্জির নানা পণ্য নিয়ে মেলায় ষ্টল সাজিয়েছেন আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, শতরঞ্জির বিভিন্ন পণ্য দিয়ে আমার স্টল সাজানো হয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত দেশীয় তৈরি
ব্যাগ, নামাজের মসল্যা, পাপোশ ও টেবিল ম্যাটসহ নানা পণ্য তোলা হয়েছে। কটন সুতাসহ নানা রঙের সুতা দিয়ে এসব পণ্য তৈরি করায় বিক্রি অনেক ভাল হয়েছে। আশা করছি মেলার শেষর দিকে বিক্রির পরিমাণ আরো বাড়বে। কারুশিল্পী রফিকুল ইসলাম বলেন, এ মেলায় কাঠের তৈরি পণ্যের কদর বেশি। প্লাস্টিকের তৈরি কোন পণ্য না থাকায় এ মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
গত ১৬ জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন নারায়নগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ এর নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। মেলাটি একমাস চলবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh