× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কেএনএফ অস্থিরতায় অশান্ত পাহাড়, পর্যটনে ধস

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

২৬ মে ২০২৩, ০৮:০৯ এএম

পর্যটননগরী পার্বত্য জেলা বান্দরবান দিনদিন পরিস্থিতি যেন খারাপ দিকে এগোচ্ছে। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে শান্তিপ্রিয় জেলা হিসেবে বান্দরবানকে বলা হলেও বর্তমানে এই জেলা অশান্ত হয়ে উঠেছে। পাহাড়ের নামে বেনামে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন মাথা গজা হওয়ার কারণের অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাহাড় এখন অশান্ত। 

তবে ইদানিং কেএনএফ অস্থিরতা তৈরি ফলে পর্যটন খাতে নেমেছে ধস। দিন দিন জেলাটি যেভাবে খারাপ দিকে এগোচ্ছে তেমনি পর্যটনখাতে জড়িত ব্যবসায়ীরা ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে গাড়ি চালক ও পেশায় বদলাচ্ছেন ট্যুরিস্ট গাইডরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল বছরের অক্টোবর থেকে বিছিন্নবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ তৎপরতা কারণে তাদের বিরুদ্ধে পাহাড়ের শুরু করে যৌথবাহিনী সাড়াশি অভিযান। অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে কেএনএফ সদস্যদের ১৭ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। তাছাড়া কয়েকমাস ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের পাল্টাপাল্টি গুলির ঘটনা। মৃত্যু ঘটেছে আইনশৃংখলা বাহিনীসহ কেএনএফ সদস্যদের। এরপর ১৭ অক্টোবর পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা জারি করেন প্রশাসন।  সর্বশেষ চলতি মাসে ১৬ মার্চ রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি তিন উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে। এতে ধস নেমেছে এ জেলার পর্যটনশিল্পে। হোটেল-মোটেল গুলোতে নামমাত্র পর্যটকের অবস্থান। এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের অর্থনৈতিক অবস্থাও দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রতিমাসে পর্যটকখাতে ক্ষতি পরিমান গুনতে হচ্ছে প্রায় কোটি টাকার পরিমাণ।

তিন উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোয়াংছড়ি,রুমা ও থানচি উপজেলার পর্যটক গাইডের সংখ্যা রয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশত জনের মতন। তিন উপজেলা পর্যটন নিষেধাজ্ঞা কারণের সেসব গাইডরা জীবন কাটাচ্ছেন করুন অবস্থা। কোন পর্যটক না থাকায় কেউ পাল্টেছেন অন্য পেশায়। অর্থের উপার্জন পথ বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই বেকার জীবন কাটাচ্ছে অনেকেই।

পর্যটনশিল্পের জড়িত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তিন উপজেলার বন্ধ থাকার কারণে হোটেল- মোটেলে পর্যটকদের আগমন নাই। ফলে বিভিন্ন হোটেলের মালিকরা কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। প্রতিমাসে হোটেল-মোটেল প্রতিদিন ক্ষতি গুনতে হচ্ছে কয়েক লাখ টাকা। যা মাসে কোটি টাকা ছাড়িয়ে দিতে হচ্ছে লোকসান। 

অন্যদিকে পাহাড়ের ছুটে চলা একমাত্র মাধ্যমে চান্দের গাড়ি। সেখানে চান্দের সংখ্যা রয়েছে পাঁচ শতের অধিক। চালক রয়েছেন ৭শত জনের অধিক। তাদের প্রধান আয়ের উৎস পর্যটক। গাড়ির চাকা ঘুরলে সংসারে চাকা ঘুরে। তাদের মুল অর্থ উপার্জন পর্যটক। কিন্তু বর্তমান অদ্ভুদ পরিস্থিতিতে সেসব পেশায় থাকা চান্দের গাড়ি চালকরা কোন ভাড়া না থাকায় প্রতিদিন ষ্টেশনে পর্যটকদের আশায় দিন পাড় করছেন। দিনশেষে বাড়িতে ফিরছেন খালি হাতে। তাদের দাবী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে দ্রুত পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া।

তিন উপজেলার পর্যটক গাইডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোন পর্যটক না আসার কারণের গাইডরা দিনদিন বেকার অবস্থায় পড়েছেন। তাছাড়া এই পেশায় জড়িত আছেন অধিকাংশ ছাত্র। গাইডের অর্থ দিয়ে কারো চলে লেখাপড়া ও অনেকেই চলে সংসার। এই নিষেধাজ্ঞা কারণে তারা বেকায়দা পড়ে অনেকে পেশা বদলাচ্ছেন। তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রনোদনা কিংবা সহযোগীতায় পাননি কোন গাইডরা।

বান্দরবান জীপ ও মাইক্রোবাস সমিতি সভাপতি জাফর ইকবাল জানান, পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের অভিযানে কারণে ট্যুরিস্ট বন্ধ রয়েছে। যার কারণের চান্দের গাড়ি চালক ও মালিকরা দুরঅবস্থা জীবন যাপন কাটাচ্ছেন। তাদের মূল উৎস পর্যটক। পর্যটক আসলে তাদের গাড়ি চাকা ঘুরে  সংসার চলে। কিন্তু বর্তমানে পর্যটক না থাকায় তাদের অবস্থা খারাপের সাথে জীবন-যাপন করছেন।

বান্দরবানের আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা কারণে হোটেল-মোটেল বন্ধের অবস্থার দিকে এগোচ্ছে। পরিস্থিতি দিনদিন যেভাবে খারাপ দিকে আগাচ্ছে তেমনি কোটি টাকা ক্ষতি পরিমান গুনতে হচ্ছে। নানা সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের জড়িত থাকা ব্যবসায়ীদের। তাই দ্রুত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবী জানান তিনি।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি সংবাদ সারাবেলাকে বলেন , পাহাড়ের যে অভিযান সেটি এখনো অব্যহত রয়েছে। তাছাড়া তিন উপজেলা ব্যাতীত অনান্য উপজেলাও খোলা রয়েছে সেখানে পর্যটকদের কোন সমস্যা হচ্ছে নাহ। তাছাড়া সবকিছু বিবেচনা করে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত খোলে দেয়া। আর পর্যটন কেন্দ্র মালিকরা ক্ষতিপূরনের বিষয়ের প্রশাসনে কাছে উপস্থাপন করে তাহলে প্রশাসন সরকারের কাছে এবিষয়ের তুলে ধরা হবে। আমরা চেষ্টা করছি খুব দ্রুত সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.