× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

প্রণোদনা বাড়িয়ে করমুক্ত সুবিধা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হোক

বাজেট ২০২৩-২৪

মো. রাসেল হোসাইন

০১ জুন ২০২৩, ০৬:৩৫ এএম । আপডেটঃ ০১ জুন ২০২৩, ০৬:৪৫ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল আজ (বৃহস্পতিবার) আগামী অর্থ-বছরের জাতীয় বাজেট পেশ করেন। এবারের বাজেটকে ঘিরে ভাবনার শেষ নেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব অর্থনৈতিক খাতগুলোর নেতাদের। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিস (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস) গুরুত্বের সঙ্গে চোখ রাখছে এবারের বাজেটে।

প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তির হিসাব মেলেনি গত বাজেটেও। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে কর অব্যাহতির সময়সীমা ২০২৪ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ধার্য করার প্রস্তাব করে আসছে বেসিস। তাদের এ প্রস্তাব গত বাজেটে গুরুত্ব না পায়নি। তাই এবারের বাজেটকে ঘিরে বেসিসের পুরোনো আশাই থাকছে। সঙ্গে ১০ শতাংশ প্রণোদনাকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশে উন্নীত করারও দাবি উঠেছে এ খাতে। 

এ বছরের বাজেটের প্রেক্ষাপট বেশ ভিন্ন। কেননা ডলার সংকটের কারণে এবার বাড়তি চাপে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। এসব চ্যালেঞ্জ নিয়ে সংবাদ সারাবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।

বাংলাদেশের সফটওয়্যার এবং তথ্য পরিষেবা শিল্পের বিকাশে ২০২৩-২৪ বাজেটে কেমন বরাদ্দ দেখতে চান এবং এর মূল ক্ষেত্রগুলো কী কী?

বেসিস সভাপতি: এবারের বাজেট একটু সংবেদনশীল। এর কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডলার রিজার্ভ, আমরা ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হচ্ছি, সারাবিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারের ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তর হওয়ার ভিশন ইত্যাদি। যেসব কারণে এবারের বাজেট তৈরি করা উচিত, সেগুলোর সমাধান স্বল্পমেয়াদি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি। এবারের বাজেটে আমাদের প্রস্তাবনা তাই এই দীর্ঘমেয়াদি সমাধান মাথায় রেখেই। অনেক সময় দেখা যায় যে, জাতীয় রাজস্ব ব্যুরো বছরওয়ারি চিন্তা করে। কিন্তু আমরা যদি দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করি, তাহলে শুরুতে ছাড় দিলে পরবর্তীতে লাভবান হওয়া যায়।

ডলার রিজার্ভের যে সমস্যা রয়েছে তার সমাধান হলো আমদানির বদলে রপ্তানি বাড়াতে হবে। এটা একদিনের কাজ নয়, দীর্ঘমেয়াদি কাজ। সেই দীর্ঘমেয়াদি বিষয়টা মাথায় রেখে আমাদের চাওয়াটা হচ্ছে, আমাদের নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয় ১০ শতাংশ। এটাকে ২০ শতাংশ করা উচিত। কেননা ২০২৬ সালে যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবো, তখন আর প্রণোদনা দেওয়া হবে না। তাই এই প্রণোদনা পেলে ওই সময়ের মধ্যে প্রণোদনা সুবিধা নিয়ে আমরা জোরেশোরে কাজ শুরু করব এবং রপ্তানিটাকে বাড়াব। তাহলে ওই সময়ের পর প্রণোদনা না পেলেও আমরা যে গ্রাহক পাব তাকে সেবা দিতে আমাদের সক্ষমতা থাকবে।

আমাদের সেক্টরটা করমুক্ত। এই করমুক্ত সময়টা ২০২৪ সালে শেষ হয়ে যাবে। আমাদের দাবি, এটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হোক। তাহলে এই সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়বে। কেননা যিনি বিনিয়োগ করেন, তিনি দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করেই তা করেন। আমাদের তৃতীয় দাবি হলো, আমাদের লোকাল সফটওয়্যারের ওপরে আরোপিত ভ্যাট তুলে নেওয়া হোক। বিদেশি যেসব সফটওয়্যার আমদানি করা হয় তার ওপর ট্যাপ বাড়ানো হোক। তাহলে মানুষ আমাদের লোকাল সফটওয়্যার ব্যবহারে উৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে যেসব দেশি কোম্পানি লোকাল সফটওয়্যার কিনবে, তাদেরও ‘ট্যাপ বেনিফিট’ দেওয়া উচিত যাতে তারা লোকাল সফটওয়্যার কিনতে আগ্রহী হয়।

আমাদের মূল শক্তি মানবসম্পদ। কিন্তু একজন গ্র্যাজুয়েটকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তৈরি পাই না। তাদের আমাদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়। এই প্রশিক্ষণের ওপরও ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা আছে। তাহলে মানুষ তৈরি করব কী করে? আমার ইন্ডাস্ট্রির কাঁচামাল তো মানুষ। আমাদের তো আর কিছু নেই। এর বাইরেও আমাদের চাওয়া যে, আইসিটি রপ্তানি করার জন্য একটা সেল করা হোক। যেখানে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা যেন বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই বরাদ্দ আইসিটি ব্যান্ডিংয়ে কাজ করবে। এটা সরাসরি বাজেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এটা হতে পারে। এটা আমাদের একটা চাওয়া।

আপনি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন? সেগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে?

বেসিস সভাপতি: আসলে আমরা যখন নির্বাচিত হয়েছিলাম তখন আমরা ভেবেই নিয়েছি দুই বছর। একই সাথে আমরা পরিকল্পনামাফিক এগুতে হবে। এর মধ্যে সাতটা পিলার শনাক্ত করেছিলাম এর মধ্যে ভবিষ্যৎ উপযোগী মানব সম্পদ তৈরি, স্থানীয় শিল্পের বিকাশ, রপ্তানি তথা বিদেশি বাজার সম্প্রসারণ, পুঁজি ও আর্থিক প্রণোদনা সুবিধা বৃদ্ধি, স্টার্টআপের জন্য একটি সমৃদ্ধ ইকো সিস্টেম তৈরি, ইনট্যাঞ্জিবল অ্যাসেট বৃদ্ধিতে সহায়তা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রচার। দেশের গত দুই বছর মিলিয়ে বর্তমান যে অবস্থা সেই জায়গা হিসাব করলে আমরা ফোকাস দেই অর্থনীতিতে কিভাবে উন্নত করা যায়। 

দেশি কোম্পানির সক্ষমতা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বেসিস কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে?

বেসিস সভাপতি: বেসিসের দুইটা কাজ মূলত। একটা কাজ হলো নিয়ম-নীতিকে প্রচার করা আর অন্যটি হলো সদস্যদের ব্যবসার ধারণক্ষমতা উন্নতি করা যায়। প্রতিনিয়ত আমরা চেষ্টা করছি সদস্যদের কিভাবে তাদের ব্যবসা বড় করা যায়। আমরা বিশ্বাস করি সদস্যরা বড় হওয়া মানে ইন্ডাস্ট্রি বড় হওয়া। আমরা বিভিন্ন দেশে যাচ্ছি এবং বাইরের দেশের বিভিন্ন প্রোগ্রামে যাচ্ছি। দেই সাথে আমাদের দেশে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ‘সফট এক্সপো’ করলাম এতে লোকাল কোম্পানিগুলো লাভবান হয়েছে। 

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি সফটওয়্যার এবং তথ্য পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য আপনারা কীভাবে বিভিন্ন দেশ, আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করছেন? 

বেসিস সভাপতি: আমাদের রপ্তানি হয় প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার। প্রথম পাঁচটা গন্তব্য হলো ইউকে, ইউএসএ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, জাপান এবং ইন্ডিয়া। এই পাঁচটা দেশের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি কারণ ওখানে বেশ বড় একটা মার্কেট আছে। সম্প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাপানে রাষ্ট্রীয় সফরে গেছে সেখানে জাপান ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (জিসা) সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।  তাছাড়াও ৬০টি দেশে রপ্তানি করে থাকি। সামনে সেপ্টেম্বরে আমাদের আমেরিকায় একটা প্রোগ্রাম আছে কারণ ইউএসএ আমাদের সবচেয়ে বড় একটা মার্কেট। দেশের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। 

দেশের আইসিটি খাতে দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত পেপ্যাল। এ বিষয়ে আপনার মত কি?

বেসিস সভাপতি: পেপ্যাল একটা প্রাইভেট কোম্পানি। তারা যখন কোনো দেশে যাবে তখন তাদের ব্যবসার চিন্তা করে আসবে। এরকম কিছু বিদেশি কোম্পানি আছে তারা তাদের ব্যবসা চিন্তা করেই আমাদের দেশে ইনভেস্ট করছে। পেপ্যাল তারা তাদের মতো করেই চিন্তা করবে। আর এই পেপ্যাল না থাকায় কিন্তু পেমেন্টের বিভিন্ন ধরনের সলুশ্যান আসছে তাতে কিন্তু উদ্যোক্তাদের বিদেশ থেকে টাকা আনতে তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তবে পেপ্যাল আসলে আরও ভালো হবে এব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। পেপ্যাল মনে করছে আমার দেশের মার্কেটটা ছোট তবে সময় আসলে পেপ্যাল নিজে থেকে চলে আসবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.