গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফিলাডেলফিয়ায় অস্ট্রিয়ান ক্লাব সালজবার্গকে বিধ্বস্ত করে ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে গ্রুপ সেরা হয়ে উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু সেই জয়ের পরও খেলোয়াড়দের মুখে নেই প্রশান্তির ছায়া। বরং খেলোয়াড়দের ভেতরে এখন ক্ষোভের আগুন, আর এর পেছনে দায়ী বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। কারণ, ম্যাচ শেষে 'জঘন্য' ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার দায়ে একপ্রকার ভোগান্তির যাত্রা করতে হয়েছে লস ব্লাঙ্কোদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শেষ হয় ম্যাচটি। তারপরই শুরু হয় জাবি আলোনসোর শিষ্যদের ভোগান্তি। ম্যাচ স্টেডিয়ামের পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে বসে থাকা, বিমানবন্দরে অপেক্ষা-অবশেষে হোটেলে ফিরতে ফিরতে বাজে ভোর ৫টা! ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় মাঠ থেকে হোটেলে ফেরার জন্য ছুটতে হয়েছে ইউরোপের সেরা এই ক্লাবটিকে। এর পেছনে দায়ী, ক্লাবটির ভাষায় 'ফিফার গুরুতর অব্যবস্থাপনা।
ফিফার দায়িত্ব ছিল ক্লাব বিশ্বকাপ চলাকালীন অংশগ্রহণকারী দলের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ও যাতায়াতের পুরো পরিকল্পনা। অথচ রিয়ালের এই ম্যাচ শেষে তারা পায়নি নির্ধারিত ফ্লাইট, পায়নি কোনো সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন। যা একে একে গড়ায় অনিশ্চয়তা, অবহেলা এবং অবশেষে খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক ভেঙে পড়ায়। মাঠে দারুণ পারফরম্যান্স করেও এমন বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ে খেলোয়াড়দের ক্ষুব্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। স্প্যানিশ এক গণমাধ্যম ক্লাবের ঘনিষ্ঠ সূত্রের কথা উল্লেখ করে তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, রিয়ালের শীর্ষ কর্তারা এই ঘটনায় ফিফার প্রতি চরম অসন্তোষ জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতের ম্যাচগুলোতে এমন ভুল মেনে নেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এ দিকে ম্যাচের ৬ ঘণ্টা পর হোটেলে ফেরা ক্লান্ত দলটি গতকাল বিকেল ৫টায় নেমেছে অনুশীলনে। বিশ্রাম বলতে গেলে নেই বললেই চলে। অথচ ১ জুলাই তাদের সামনে মহাগুরুত্বপূর্ণ নকআউট ম্যাচ প্রতিপক্ষ জুভেন্টাস। ক্লান্ত শরীর নিয়ে এমন ম্যাচে নামা মানে প্রতিপক্ষের চেয়ে ম্যাচের আগে থেকেই পিছিয়ে থাকা।
এই ঘটনার পর ফুটবল মহলেও প্রশ্ন উঠেছে-বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও প্রভাবশালী ক্লাব যদি এমন পরিস্থিতির শিকার হয়, তবে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর অবস্থা কী হতে পারে? ফিফার এমন উদাসীনতা কেবল একটি ম্যাচ বা একটি ক্লাবের ক্ষতির কারণ নয়, এটি পুরো টুর্নামেন্টের মর্যাদাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।