ভারতের সাবেক ক্রিকেটার এবং দু'বারের কোচ অংশুমান গায়কোয়াড় গত বুধবার রাতে ব্লাড ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করে অবশেষে ৭১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আধুনিক ক্রিকেটে ভারতীয় জাতীয় দলে গ্রেট ওয়াল বলতে সবাই রাহুল দ্রাবিড়কে চিনলেও তিনিই প্রথম বিশ্বব্যাপী 'দ্যা গ্রেট ওয়াল' হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেন।
গায়কোয়াড়ের ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়লে তার চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। গত মাসে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। দেশে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আই সি ইউ) নেয়া হলে সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বরেণ্য এই খেলোয়াড়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে তার চিকিৎসার জন্য এক কোটি রূপি সহায়তা দেওয়া হয়।
৭০ এর দশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৪০ টি টেস্ট ম্যাচ এবং ১৫ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন এই গুণী ক্রিকেটার। এই সময়টা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের পেসার বোলারদের জন্য স্বর্ণযুগ। অনেক বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের ও যেখানে তাদের সামনে দাঁড়াতে হাঁটু কাপত, ঠিক সেই সময়েই গায়কোয়াড় তার রক্ষণাত্বক কৌশলে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারের দেয়াল হয়ে দাঁড়াতেন তিনি। ১৯৮৩ সালে ইমরান খানের পাকিস্তান দলের বিপক্ষে ২০১ রানের একটি ইনিংস খেলেন যা টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম ধীরগতির ইনিংস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অবসরের পরে ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত দুই দফায় তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেন, ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠে ভারত।
তার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স এ একটি পোস্টে শোক প্রকাশ করেন এবং বলেন গায়কোয়াড় একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় এবং অসামান্য কোচ ছিলেন। তিনি গায়কোয়াড় এর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এর সেক্রেটারি জয় শাহ এক্সের এক পোস্টে শোক প্রকাশ করে তার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং বলেন এই মৃত্যু পুরো ক্রিকেটসমসাজকে ব্যাথিত করেছে।
কোলকাতায় ১৯৭৪ এ একই স্টেডিয়ামে তিনি তার জীবনের প্রথম ও শেষ খেলেন। তার বাবা দত্ত গায়কোয়াড় ও ভারতের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলেন।