গত
কিছুদিনের নানা আলোচনা, গুঞ্জন আর জল্পনা শেষে
বুধবার জানা যায় মেসির নতুন ঠিকানা। তিনি ইন্টার মিয়ামিকে বেছে নিচ্ছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে মেসি নিজেও নিশ্চিত করেন নতুন গন্তব্য।
ক্লাব
ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে অর্থের পরিমাণকে গুরুত্ব দেননি বলে দাবি করলেন লিওনেল মেসি। তার কাছে এখন বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে পরিবার ও নিজের মানসিক
শান্তি। বিশ্বকাপ জয়ের পর এবং বার্সেলোনায়
না যেতে পারার পর এখন ভিন্ন
ঘরানার ফুটবলের স্বাদ নিতে ইন্টার মিয়ামিকে বেছে নিয়েছেন বলে জানালেন আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা।
সিদ্ধান্ত
চূড়ান্ত হওয়ার পর চলছে পেছনের
কারণ অনুসন্ধান। সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলাল থেকে
অবিশ্বাস্য অঙ্কের প্রস্তাব আছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। ইন্টার মিয়ামির প্রস্তাব নিয়েও নানা তথ্য প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। পারিশ্রমিকের অঙ্ক আল-হিলালের চেয়ে
কম হলেও ক্লাবের স্পন্সরশিপ সত্ত্বের একটি অংশ, টিকেট বিক্রির অর্থের অংশ এবং ভবিষ্যতে ক্লাবের মালিকানার অংশ মিলিয়ে ইন্টার মিয়ামির প্রস্তাবও কম লোভনীয় নয়।
তবে
স্প্যানিশ ক্রীড়া প্রত্রিকা মুন্দো দেপোর্তিভোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মেসি বললেন, এই ধরনের কিছুর
হাতছানি তাকে আকর্ষণ করেনি।
“অর্থ
আমার কাছে কখনোই এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। বার্সেলোনার সঙ্গে এবার আলোচনায় তো চুক্তি নিয়ে
কোনো কথাই বলিনি আমরা। তারা আমাকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু কখনোই আনুষ্ঠানিক বা লিখিত ও
স্বাক্ষর করা কোনো প্রস্তাব দেয়নি। পারিশ্রমিক নিয়ে দরা কষাকষি করিনি আমরা। অর্থ গুরুত্বপূর্ণ হলে তো সৌদি আরব
বা অন্য কোথাও যেতাম, যেখানে তারা আমাকে অনেক অর্থ দিতে চেয়েছিল।”
মিয়ামিতে
অনেক আগেই বাড়ি কিনে রেখেছেন মেসি, যেটি এতদিন ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। এই শহরে তার
বন্ধু-বান্ধবও আছে বেশ। সৌদি আরবের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে মেসির পরিবারের চাওয়ার কথাও উঠে আসছে। তার স্ত্রী ও সন্তানরা সৌদি
আরবের জীবনযাপনে থাকতে চাননি বলে নানা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মেসিও
বললেন, ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে
মানসিক প্রশান্তিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি।
“একটি
ইউরোপিয়ান ক্লাব থেকেও প্রস্তাব ছিল আমার। কিন্তু তা ভেবেও দেখিনি,
কারণ ইউরোপে খেললে আমার ভাবনায় ছিল কেবলই বার্সেলোনা। জীবনের এমন একটি পর্যায়ে এসেছি, যখন পাদপ্রদীপের আলো থেকে একটু দূরে থাকতে চাই, পরিবারের কথা আরেকটু বেশি ভাবতে চাই।”
“বিশ্বকাপ
জিতে যাওয়ার পর এবং বার্সেলোনায়
ফিরতে না পারার পর
আমার মনে হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের লিগে গিয়ে ভিন্ন ঘরানার ফুটবলের অভিজ্ঞতা নেওয়ার এবং প্রতিটি দিন উপভোগের এখনই সময়। অবশ্যই দায়িত্ব একইরকম থাকবে এবং জয়ের তাড়না ও সবসময় ভালো
করার চেষ্টাও থাকবে বরাবরের মতোই, তবে তা আরও বেশি
মানসিক শান্তি নিয়ে।”
পিএসজিতে
দুই বছর কাটিয়ে বার্সেলোনায় নতুন অধ্যায় শুরু করতে উদগ্রীব ছিলেন মেসি। কিন্তু আর্থিক জটিলতার মধ্যে ক্লাবটিতে ফিরতে জটিলতা রয়েই গিয়েছিল। দুই বছর আগের সেই অসহায় পরিস্থিতির কথা ভেবেই সেই ঝুঁকিতে আর যেতে চাননি
তিনি।
“আমি
সত্যিই বার্সেলোনায় ফিরতে চেয়েছিলাম। স্বপ্ন দেখেছিলাম। তবে দুই বছর আগে যা হয়েছে, সেই
একই পরিস্থিতিতে আবার পড়তে চাইনি। নিজের ভবিষ্যৎ অন্যদের হাতে তুলে দিতে চাইনি… নিজের
ও পরিবারের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে চেয়েছি।”
“লা
লিগা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে খবর পেয়েছিলাম। কিন্তু সত্যিটা হলো, আমার বার্সায় ফেরার জন্য অনেক অনেক জটিলতা এখনও ছিল। আমার জন্য তারা খেলোয়াড় বিক্রি করে দেবে কিংবা কয়েকজনের পারিশ্রমিক কমিয়ে দেবে, এমন কিছু চাইনি। যখন ক্লাব ছাড়তে হয়েছিল, তখনও তারা বলেছিল যে লা লিগ
সব মেনে নিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। আমার
ভয় হচ্ছিল, এবারও সেরকম কিছু হতে পারে এবং আবারও শেষ মুহূর্তে আমাকে তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে হবে। সব মিলিয়ে ক্লান্ত
হয়ে পড়েছিলাম।”
২০২১
সালে অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনায় থাকা হয়নি মেসির। একদম শেষ মুহূর্তে ক্লাব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। পিএসজিতে নাম লেখানোর পর প্যারিসে তাকে
বরণ করে নেওয়া হয়েছিল দারুণভাবে। তবে তার পরিবারের জন্য এই দুই বছর
ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং।
“প্যারিসে
আসতে হয়েছিল আমাকে। পরিবারসহ লম্বা সময় হোটেলে থাকতে হয়েছিল। আমার বাচ্চারা হোটেলে থেকেই স্কুলে যাচ্ছিল। আমরা কখনোই কোনোভাবেই প্যারিসে আসতে চাইনি। খুব কঠিন সময় ছিল, খুবই কঠিন। তবে পরিবার আমার পাশে ছিল এবং সিদ্ধান্ত ছিল সম্মিলিত, শুধু আমার নয়। এখন আবার ছেড়ে যেতে হচ্ছে বলে কিছুটা দুঃখবোধ ওদের আছে। কারণ, শুরুতে কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে প্যারিসে মানিয়ে নিয়েছিল তারা।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh