বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে স্থানীয় সময় সোমবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানী বুয়েন্স এইরেসের বিমানবন্দরে অবতরণ করে আর্জেন্টিনা দলকে বহনকারী বিমানটি। ছাদখোলা বাসে চড়ে হাজার হাজার সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পাশেই আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে যান মেসি, আনহেল দি মারিয়া, রদ্রিগো দে পলরা।
কখনও বিমানে বসে, আবার কখনও আয়েশি ভঙ্গিতে বিছানায় শুয়ে, সবসময় সঙ্গী সোনালী ট্রফিটা- বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে এমন সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছেন লিওনেল মেসি। সবকিছুতেই ফুটে উঠছে তার স্বপ্ন পূরণের উচ্ছ্বাস। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক এবার একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, দিয়েছেন আবেগঘন বার্তা। যেখানে তার শৈশব, বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্ন, ব্রাজিল আসরের দুঃখগাঁথা, দিয়েগো মারাদোনা, কোচিং স্টাফসহ অনেক বিষয় নিয়েই লিখেছেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন দ’র জয়ী তারকা।
সেখানে কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম করেন তারা। এরপর দুপুরের দিকে শহরের কেন্দ্রে বিশাল ওবেলিসো স্মৃতিস্তম্ভের দিকে যায় দলকে বহনকারী বাস। সেখানে আগে থেকে জড়ো লাখো মানুষ। চলছে তাদের উৎসব।
সেই উৎসবে যোগ দেওয়ার আগে ইনস্টাগ্রামে ওই ভিডিও পোস্ট করেন মেসি। সেখানে পাঁচ বছর বয়সে স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে তার খেলা, জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক, ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের পর হতাশার চিত্র যেমন আছে, তেমনি কাতার আসরে শিরোপা জয় পর্যন্ত বিভিন্ন মুহূর্তও আছে।
লুসাইল স্টেডিয়ামে গত রোববারের ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় আর্জেন্টিনা, তৃতীয়বারের মতো। আলো ঝলমলে লম্বা ফুটবল ক্যারিয়ারে অবশেষে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় মেসির। ৩৫ বছর বয়সী তারকা লিখেছেন, বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখা এবং তা পূরণের চেষ্টা করা কখনও বন্ধ করেননি তিনি।
“গ্রান্দোলি থেকে কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর কেটে গেছে। প্রায় তিন দশকের এই সময়ে ফুটবল আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে, কিছু দুঃখও দিয়েছে। সবসময়ই আমার স্বপ্ন ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার, আমি চেষ্টা করা বন্ধ করতে চাইনি, এমনকি কখনও এমন কিছু নাও অর্জন করতে পারি- এটা জানার পরও।”
কাতারের আগে আর্জেন্টিনা সবশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৮৬ সালে, মারাদোনার প্রায় একক নৈপুণ্য। এরপর ১৯৯০ ও ২০১৪ আসরে ফাইনালে উঠেও হতাশা সঙ্গী হয় তাদের, দুবারই জার্মানদের কাছে হেরে।
আগে যারা অনেক চেষ্টা করেও পারেননি, এই সাফল্যের ভাগ তাদেরকেও দিতে চান মেসি। সঙ্গে তিনি স্মরণ করলেন দুই বছর আগে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করা কিংবদন্তি মারাদোনাকে।
“এই ট্রফিটি আমরা জিতেছি তাদের জন্যও, যারা আগের বিশ্বকাপগুলিতে এটি অর্জন করতে পারেননি, যেমন ২০১৪ সালে ব্রাজিলে। সেবারও প্রত্যেকের এটি প্রাপ্য ছিল, কারণ তারা ফাইনাল পর্যন্ত লড়াই করেছিল, কঠোর পরিশ্রম করেছিল এবং জিততে চেয়েছিল, ঠিক আমি যতটা পরিশ্রম করেছিলাম ও চেয়েছিলাম... অমন বাজেভাবে শেষ হওয়া ফাইনালেও আমাদের ট্রফিটি প্রাপ্য ছিল। দিয়েগোর (মারাদোনার) জন্যও, যিনি স্বর্গ থেকে আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। এই সাফল্য তাদের সকলের জন্য, যারা সবসময় ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে জাতীয় দলের পাশে থেকেছে, আমাদের চেষ্টা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে, এমনকি যখন সবকিছু চাওয়া অনুযায়ী হয়নি তখনওৃআর অবশ্যই কোচিং স্টাফ এবং জাতীয় দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য, যারা আমাদের জন্য সবকিছু সহজ করতে দিনরাত কাজ করেছেন। ব্যর্থতা অনেক সময় যাত্রা এবং শেখার অংশ। হতাশা, ব্যর্থতা ছাড়া সাফল্য পাওয়া অসম্ভব। হৃদয় থেকে সবাইকে অনেক ধন্যবাদ! চলো আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাই।”
সবশেষে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মেসি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh