ম্যাচের ২৩ মিনিটে মেসির পেনাল্টি থেকে আর্জেন্টিনার লিড, এরপর ৩৬ মিনিটে ডি মারিয়ার দুর্দান্ত গোলে ২-০ গোলে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। এরপর সেই লিড বজায় ছিল ম্যাচের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত। আর্জেন্টিনা যখন প্রায় তৃতীয় শিরোপা উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই মাত্র ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে কিলিয়ান এমবাপ্পের দুই গোলে ম্যাচে চলে আসে সমতা। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। এরপর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে পরপর তিনটি গোলের সুযোগ তৈরী করে আর্জেন্টিনা। ১০৯ মিনিটে মেসি ম্যাজিক থেকে ৩-২ গোলের লিড নেয় আর্জেন্টিনা। এরপর ১১৭ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে নিলে ম্যাচে আবারও ৩-৩ সমতা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এরপর টাইব্রেকার থেকে ৪-২ গোলে জয় নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণে জোর দেয় আর্জেন্টিনা। প্রথম দিকে রক্ষণ সামলাতেই বেশি ব্যস্ত থাকে ফ্রান্স। ৫ মিনিটে ম্যাচের প্রথম শট ম্যাক-অ্যালিস্টারের। শট যায় সরাসরি ফরাসি গোলকিপারের হাতে।
১০ মিনিটে একটা সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। দূর থেকে শট নিয়েছিলেন ডি পল। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে কর্নার। আক্রমণাত্মক খেলে যাচ্ছিল আর্জেন্টিনা। খেলার ১৫ মিনিট পর্যন্ত এমবাপ্পের একটি আক্রমণ বাদে আর কোনও মুভমেন্ট দেখা যায়নি তাদের।
১৭ মিনিট সুযোগ নষ্ট করে আর্জেন্টিনা। দুরন্ত সুযোগ পেয়েছিলেন ডি মারিয়া। কিন্তু তার ডান পায়ের শট বারের অনেক ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ২০ মিনিটে ডে বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রিকিক পায় ফ্রান্স। গ্রিজম্যানের ফ্রিকিকে জিরুদের হেড বাইরে যায়। ম্যাচের ২২ মিনিটে বক্সের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয় ডি মারিয়াকে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি। হুগো লরিস ঝাঁপালেন ডান দিকে। মেসি পেনাল্টি মারলেন তার বাঁ দিকে। এবারের বিশ্বকাপে ষষ্ঠ গোল লিও মেসির।
গোল করে আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাড়িয়ে দেয় আর্জেন্টিনা। একের পর এক আক্রমণ করে তারা। ফ্রান্স সেভাবে পায়ে বল রাখতেই পারেনি। খেলার ৩৬ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে দুর্দান্ত আক্রমণে চোখ জুড়ানো গোল ডি মারিয়ার। মাঝমাঠে বল পেয়েছিলেন মেসি। তিনি ডিফেন্সচেরা পাস দেন ম্যাক অ্যালিস্টারকে। তার থেকে পাস পেয়ে চলতি বলে শট নিয়ে গোল করেন ডি মারিয়া। ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। মারিয়াকে তুলে নেওয়ার পরই বদলে যায় খেলা। আক্রমণ বাড়ায় ফ্রান্স। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে বক্সের ভেতর কোলো মুয়ানিকে ফাউল করেন ওটামেন্ডি। পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। শট নেন এমবাপ্পে। সঠিক দিকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মার্টিনেজও। তবে গতির কাছে পরাস্ত হন। চলতি বিশ্বকাপে এটি এমবাপ্পের ষষ্ঠ গোল। ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় ফরাসিরা। একটি গোল শোধ করে প্রাণ ফিরে পায় ফ্রান্স। পরের মিনিটে আবার গোল এমবাপ্পের। ২-২ গোলে সমতা। ডান দিক থেকে এমবাপ্পেকে লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন কোমান। দ্রুত পাস খেলে মাটিতে পড়ে যেতে যেতে অনবদ্য শটে গোল করলেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপে সপ্তম গোল তার।
ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে ফ্রান্সের গোলমুখে ঢুকছিলেন মেসি। বক্সের বাইরে থেকেই বাঁ পায়ে দুরন্ত শট নিয়েছিলেন। এক হাতে অনবদ্য ভঙ্গিতে সেটি বাঁচিয়ে দেন হুগো লরিস। ম্যাচের ১১৮ মিনিট। এমবাপ্পের শট আটকাতে গিয়ে বক্সের মধ্যেই বল হাতে লাগালেন মন্তিয়েল। পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। ৩-৩ গোলে সমতা। হ্যাট্রিক এমবাপ্পের। বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথম। অতিরিক্ত সময় শেষেও স্কোরলাইন ৩-৩।
রুদ্ধশ্বাস সময়ে শেষে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকার। প্রথমেই লক্ষ্যভেদ করে এমবাপ্পে ও মেসি। কোমানের শট আটকে দেন বাজপাখি মার্টিনেজ। শট মিস করেন চুয়ামেনিও। দিবালা, পারদেস, মন্তিয়েল গোল করলে ৪-২ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। অবসান ৩৬ বছরের অপেক্ষার। শিরোপার উল্লাসে মাতে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh