অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগকে দ্রুত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেননি সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। উল্টো তারা এ নির্দেশনা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি করছেন।
ছাত্রলীগের সম্মেলনপ্রত্যাশীরা এমনটা অভিযোগ করছেন। তাদের দাবি, সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে টালবাহানা করছেন। সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিষয়ে তাদের অনাগ্রহ রয়েছে।
সম্মেলনপ্রত্যাশীরা তারিখ ঘোষণার দাবি নিয়ে ১৪ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের কাছে যান। এ নিয়ে দুই পক্ষে উচ্চবাচ্চের একপর্যায়ে দুই নেতা তাদের জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের তারিখ জানাবেন। তারিখ পাওয়ার পর তারা সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু করবেন। তবে সম্মেলনপ্রত্যাশীদের বক্তব্য, ওবায়দুল কাদের তার নির্দেশনায় এমন কিছু বলেননি।
ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজন নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে জয় ও লেখকের মোবাইল ফোনে গত কয়েক দিন ধরে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ফোন ধরেননি।
তবে ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, ‘সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আসলে কালক্ষেপণ করছেন। তারা সম্মেলন চান না, তাদের পদ আঁকড়ে থাকতে চান। ‘কমিটির মেয়াদ পার হয়েছে প্রায় দুই বছর। অনেকের বয়স শেষ হয়ে গেছে। আরও অনেকের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। তারপরও সম্মেলন দেয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় যখন শীর্ষপর্যায় থেকে সম্মেলনের নির্দেশ এসেছে তখন তারা নানা অজুহাত, টালবাহানা ও কলাকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন, যাতে সম্মেলন করতে না হয়।’
আরেক সহসভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনার আলোকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছেন। আল নাহিয়ান ও লেখককে আওয়ামী লীগের দপ্তরে যোগাযোগ করে সুবিধাজনক সময় জানাতে বলা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে তারা কিছু জানাননি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ মে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন। এর ধারাবাহিকতায় ১০ মে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ এবং দুই সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগকে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই সভায় উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দু-এক দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারিখ নির্ধারণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সেলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জয় ও লেখক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। এমনকি তারা আওয়ামী লীগের দপ্তরেও যোগাযোগ করেননি।