× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

পাসপোর্ট ছাড়াও যেভাবে দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান

ডেস্ক রিপোর্ট।

২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি মাসের শেষের দিকে দেশে ফিরতে পারেন বলে জানানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। তবে তিনি কীভাবে ফিরবেন সেটি এখনো অজানা। তার কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। আবেদনও করেননি এখনো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারেক যদি দেশে ফিরতে চান, তবে পাসপোর্ট এখানে বড় বাধা নয়। বিকল্প উপায়ও আছে। তা হলো— ট্রাভেল পাস।

ট্রাভেল পাস কী, কারা পান?

ট্রাভেল পাস হলো একটি অস্থায়ী ভ্রমণ নথি, যা বিদেশে অবস্থানরত পাসপোর্টহীন কোনো বাংলাদেশিকে শুধু একবার বাংলাদেশে ফিরতে ব্যবহার করতে দেয়। এটি পাসপোর্ট নয়। এটি দিয়ে অন্য দেশে ভ্রমণ করা যায় না।

বিদেশে থাকা অবস্থায় পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে ট্রাভেল পাস দেওয়া হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন বিদেশে আছেন কিন্তু পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ, এবং নতুন পাসপোর্ট তৈরি সম্ভব নয় এমন ব্যক্তি এই পাস পান। নাগরিকত্ব প্রমাণিত কিন্তু পাসপোর্ট নেই যেমন— শিশু, যাদের কখনো পাসপোর্ট করা হয়নি। বিদেশে অবৈধ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিক কিংবা আটক বা ডিটেনশনে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকও পেতে পারেন ট্রাভেল পাস।

ট্রাভেল পাস পাওয়ার জন্য যা প্রয়োজন

বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার প্রমাণ। যেমন: জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, পুরোনো পাসপোর্ট (যদি থাকে), কোনো আত্মীয়ের হলফনামা, স্কুল-কলেজের সনদ, প্রবাসে আটক হলে স্থানীয় পুলিশের কাগজপত্র।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহির্গমন অনুবিভাগ শাখা সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমান চাইলে খুব সহজে দেশে ফিরতে পারবেন। এক্ষেত্রে তার কাছে পাসপোর্ট থাকার প্রয়োজন নেই। তিনি লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পাস নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন।

তারেক রহমানের পাসপোর্ট জটিলতার কারণ কী

তারেক রহমান বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে গেলেও পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার পাসপোর্ট আর নবায়ন হয়নি। তিনি কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যে রয়েছেন, সে বিষয়টি কখনো খোলাসা করেনি বিএনপি।

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-মেয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ‘সারেন্ডার’ করেছেন। ব্রিটিশ হোম অফিস বাংলাদেশ হাইকমিশনে সেই পাসপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছে।

তখন বিএনপি আবার তার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিল, তারেক রহমান যদি পাসপোর্ট ফেরতই দিয়ে থাকেন তাহলে তা যেন সরকার দেখায়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে তারেক রহমানের পাসপোর্ট দেখানো হয়নি।

তবে নবায়ন না হওয়ায় তারেক রহমানের হাতে বাংলাদেশের বৈধ পাসপোর্ট এখন নেই। ফলে তাকে নতুন করে পাসপোর্ট নিতে হবে। ২০১৪ ও ২০১৬ সালে তারেক রহমানকে সৌদি আরবে ওমরাহ ও হজ পালনে যেতে দেখা গিয়েছিল। শেষবার দেশ থেকে খালেদা জিয়াও হজে গিয়েছিলেন। সৌদি আরবে দেখা হয়েছিল মা-ছেলের। সেখান থেকে তারেক রহমান আবার লন্ডন ফিরে যান। পাসপোর্টহীন তারেক তখন ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে বিদেশ গিয়েছিলেন বলে কথা উঠেছিল।

ট্রাভেল পাস নিয়ে দেশে ফেরেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন

পাসপোর্ট না থাকলে ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে দেশে ফেরাও যে বড় জটিলতার কোনো বিষয় নয়, তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের দেশে ফেরাই প্রমাণ করে।

২০১৫ সালে গুম হওয়ার পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যে যখন সালাহউদ্দিনকে পাওয়া গিয়েছিল, তখন তার সঙ্গে কোনো পাসপোর্ট ছিল না। অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কারাগারেও যেতে হয়।

মামলার দায় থেকে মুক্ত হওয়ার পর ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ট্রাভেল ডকুমেন্ট জোগাড় করেন সালাহউদ্দিন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল দেখে দেশে ফেরেন তিনি। ফলে তারেক রহমান যদি দেশে ফিরতে চান, তবে পাসপোর্ট এখানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

তারেক রহমান ফিরতে চাইলে সহায়তা দেবে সরকার

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে সরকার ভ্রমণ বিষয়ক কাগজপত্র দিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে যখনই প্রয়োজন হবে, তার ভ্রমণ নথি বা পাসপোর্ট সম্পর্কিত বিষয়গুলো আমরা দেখবো।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহির্গমন অনুবিভাগ শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তারেক রহমান দেশে আসতে চাইলে কোনো বাধা নেই। তার কাছে পাসপোর্ট না থাকলেও সমস্যা নেই। তিনি ট্রাভেল পাস নিয়ে খুব সহজেই দেশে আসতে পারবেন। দেশে এসে তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ‘ট্রাভেল পাস আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিটি দেশ নিজ নাগরিককে নিজের ভূখণ্ডে ফিরিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নিতে বাধ্য।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে তারেক রহমান ট্রাভেল পাস নিয়ে দেশে আসতে পারেন। সরকার বদল হলে ১৭ বছর পর তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান গত মে মাসে দেশে এসেছিলেন। এক মাস দেশে থাকার পর জুনে তিনি ফিরে যান লন্ডনে। দেশে এসে তিনি ভোটার নিবন্ধন করেন। এখন তারেক রহমান কবে কীভাবে দেশে ফেরেন এবং ভোটার হন সেদিকে তাকিয়ে দলের নেতাকর্মীরা।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.