দীর্ঘ
এক যুগ কারাভোগ শেষে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, “এতদিন দেশে ন্যায়বিচার ছিল না। আজ ন্যায়বিচারের মধ্য
দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে যে আমার বিরুদ্ধে
আনা সব অভিযোগই মিথ্যা
ছিল।”
বুধবার
(২৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কারামুক্ত হয়ে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এক জনসভায় আবেগঘন
বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি
বলেন, “আমি আজ স্বাধীন। মুক্তির
পর আমি স্বাধীনতার আস্বাদ গ্রহণ করছি। ধন্যবাদ জানাই আদালতকে, যাঁরা সত্যের পক্ষে রায় দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানাই ছাত্র-জনতাকে, যারা ফ্যাসিবাদের পতনে ভূমিকা রেখেছেন। ধন্যবাদ জানাই সেনাবাহিনীকে, যারা জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।”
বক্তব্যে
গভীর আবেগ প্রকাশ করে আজহারুল ইসলাম বলেন, “আমি আজ স্মরণ করছি
আমার সেই নেতাদের, যাঁদের জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। আমার শ্রদ্ধেয় মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা, মীর কাশেম আলী, আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী—তাঁদের সবাইকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে।”
তিনি
আরও অভিযোগ করেন, “শুধু হত্যাই নয়, এসব নেতার পরিবারের সদস্যদেরও গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক। এ বিচার না
হলে দেশে এই ‘খারাপ সংস্কৃতি’ বন্ধ হবে না।”
জনতার
প্রতি দোয়া কামনা করে আজহার বলেন, “আমার অপরাধ কী ছিল? আমি
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখি—এটাই তো আমার একমাত্র
অপরাধ ছিল। আপনারা যেভাবে আমাকে ফুল দিয়ে বরণ করেছেন, আমি যেন সেই ইসলামী আন্দোলনের জন্য আমৃত্যু কাজ করে যেতে পারি—এই দোয়া চাই।
আমি চাই, এই পথেই শহীদ
হতে।”
শেষে
তিনি বলেন, “মৃত্যু অনিবার্য। আজ নয় তো
কাল আমাদের সবাইকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। আমি চাই, সেই মৃত্যু হোক ইসলামী আন্দোলনের পথেই।”