একাত্তরের
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেওয়াকে ‘সুবিচারের প্রতিষ্ঠা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ
সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা.
শফিকুর রহমান বলেন, “আজহারুল ইসলামের মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন অপেক্ষমাণ সুবিচার অবশেষে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিগত সরকার জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ভুয়া সাক্ষীর
মাধ্যমে বিচার চালিয়ে তাদেরকে ফাঁসির মাধ্যমে হত্যা করেছে। এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যা।”
তিনি
অভিযোগ করে বলেন, “জামায়াত নেতাদের মামলায় সীমাহীন জালিয়াতি ও অন্যায়ের আশ্রয়
নেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে পদদলিত করে জামায়াত নেতাদের প্রাণ নেওয়া হয়েছে। সেইসাথে, তাদের পরিবারকেও অবর্ণনীয় নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে।”
তিনি
আরও বলেন, “সরকার মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ‘সেইফ হোমে’ জামায়াত নেতাদের মামলার সাক্ষীদের বন্দি করে রাখত। যাঁরা মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানাতেন, তাঁদের অপহরণ পর্যন্ত করা হতো। এর অন্যতম উদাহরণ
হলেন সুরঞ্জিন বালি।”
জামায়াত
আমির ‘স্কাইপ কেলেঙ্কারি’র কথা উল্লেখ
করে বলেন, “জামায়াত নেতাদের মামলায় বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। স্কাইপ কেলেঙ্কারির বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছে।”
এদিন
সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত
আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে তাকে খালাস দেন।
এদিকে
এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল
বলেন, “আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দেওয়া রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এর কৃতিত্ব জুলাই
মাসের গণআন্দোলনের সাহসী নেতৃত্বের।”
তিনি
আরও বলেন, “মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে আজহারুল ইসলাম মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে তার রিভিউ মঞ্জুর করেছেন।”