রাজনৈতিক
দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক
ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে দায়ের করা আপিলের শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজ সোমবার (১৩
মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত
আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ আগামীকাল বুধবার (১৪ মে) রায়ের
জন্য দিন নির্ধারণ করেন।
আজকের
শুনানিতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, যিনি মূল শুনানি পরিচালনা করেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এবং ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। অপরদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম।
শুনানিকালে
আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতারা—দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম
মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
এর
আগে, গত ৭ মে
আপিল বিভাগ আজকের (১৩ মে) দিনটি
শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছিল। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে
ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল শুনানি শুরু হয়।
এরও
আগে, ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর জামায়াতে
ইসলামীর পূর্বে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করেন আপিল বিভাগ। ফলে, দলটির নিবন্ধন ও প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’
ফিরে পাওয়ার জন্য আইনি লড়াইয়ের পথ খুলে যায়।
সে সময় চার বিচারপতির একটি বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত দেয়।
পূর্বাপর
বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট
একটি রিট আবেদনের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা
করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮
সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন
কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর জামায়াত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। কিন্তু ২০২৩ সালের নভেম্বরে আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায়, তৎকালীন
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল
বেঞ্চ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ (অবহেলায়
খারিজ) আদেশ দেন। এর ফলে হাইকোর্টের
রায় বহাল থাকে এবং দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকে।
এদিকে,
২০২৩ সালের ১ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পটভূমিতে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্রসংগঠন
ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা
অনুযায়ী নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা একই বছরের ২৮ আগস্ট সরকার
প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে।