ছবিঃ সংগৃহীত।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনকে ‘ধর্মবিদ্বেষী ও ইসলামবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে এর বিলুপ্তি দাবি করেছে খেলাফত মজলিস। আজ (২৫ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের এ দাবি জানান।
ড. কাদের বলেন, এই কমিশন গঠিত হয়েছে কিছু উচ্ছিষ্ট নাস্তিক ও পশ্চিমা দালালদের দিয়ে, যাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ধর্মীয় ও পারিবারিক কাঠামো ধ্বংস করা। তারা নারীর অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, কমিশনের প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইন, বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার এবং ভরণপোষণের ক্ষেত্রগুলোতে সব ধর্মের নারীদের জন্য একক আইন চালুর উদ্যোগ সরাসরি কোরআন ও সুন্নাহর বিরোধী। এটি মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাসের ওপর একটি নগ্ন আঘাত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ড. কাদের বলেন, এই দেশে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ মুসলমান। তাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা না রেখেই যৌনকর্মীদের পেশাগত স্বীকৃতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি ইসলামবিরোধী, পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক স্খলন ছড়ানোর কৌশল। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে দেশের প্রতিটি পরিবারে অস্থিরতা দেখা দেবে। ধর্মপ্রাণ জনতা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
তিনি ভারতের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনেরও প্রতিবাদ জানান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেন।
বক্তারা আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত অনেক সুপারিশ পবিত্র কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং দেশের মুসলিম নারীদের বাস্তবতা ও স্বকীয়তার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তারা অভিযোগ করেন, এসব প্রস্তাব দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য ও পারিবারিক কাঠামো ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ।
তারা আরও বলেন, কমিশনের সদস্যরা দেশের নারীদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করেন না এবং তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। খেলাফত মজলিস অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অবিলম্বে এই কমিশন বাতিল এবং সব বিতর্কিত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের দাবি জানায়।
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানসহ অনেকে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
বিক্ষোভ ঘিরে বায়তুল মোকাররম এলাকায় ছিল বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পল্টন মোড় থেকে শুরু করে মসজিদের বিভিন্ন গেট পর্যন্ত মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। বিশেষ করে উত্তর গেটে ৩০ থেকে ৫০ জন পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি ডিবি পুলিশের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়। মসজিদে প্রবেশকালে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিক্ষোভ ঘিরে নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে।
এর আগে বুধবার এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয় খেলাফত মজলিস। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের পাশাপাশি ভারতের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদও জানানো হয় এই কর্মসূচিতে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh