ছবিঃ সংগৃহীত।
কয়েকদিন আগে ভারতের পার্লামেন্টে মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধন) বিল ২০২৫ নামে একটি আইন পাস করা হয়েছে, যা নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, এই আইনটির বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে বিএনপি দেখেছে যে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্যমূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে।
আজ (৬ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারতের মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলটিকে অসাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ওয়াকফ হলো ইসলামি দানের একটি প্রাচীন ব্যবস্থা, যা সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন, ওয়াকফের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি স্থায়ীভাবে, সাধারণত জমির মতো সম্পত্তি ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে দান করেন। এই ধরনের ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা বা অন্য কারো নামে হস্তান্তর করা যায় না।
তিনি বলেন, ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ২০ কোটি, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ। এই নতুন আইন মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি এবং স্বার্থের বিরোধী হতে পারে এবং এর অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনায় এই আইন ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। ভারতে ওয়াকফ বোর্ডগুলোর অধীনে প্রায় ১০ লাখ একর জমি রয়েছে, যা মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান এবং এতিমখানার মতো জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে, নতুন আইনে ওয়াকফ বোর্ডের পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যা মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার হস্তক্ষেপ এবং বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গ্রহণ করা উচিত নয়। ভারতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের এমন কোনো আইনি সংগঠন বা বোর্ডে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি দেখা যায় না, যা এই আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে প্রমাণ করে।
নতুন আইনের ফলে শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াকফ জমির ওপর গড়া মসজিদ ও অন্যান্য ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন। তার মতে, নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের এখতিয়ার দেওয়া মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।
তিনি আরো বলেন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের মতো সংগঠনগুলোর মতে, এই আইন ইসলামি ওয়াকফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থি। তাদের মতে, ওয়াকফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত।
ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমদ আশা প্রকাশ করেন যে, সরকার ভারতীয় নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় অভিভাবকত্বের ভূমিকাকে সমুন্নত রেখে এই আইনটি পুনর্বিবেচনা করবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh