ছবিঃ সংগৃহীত।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ করেছে, যেগুলো মূলত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘটিত সহিংস ঘটনা, চাঁদাবাজি ও সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগগুলো তুলে ধরেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল ইসলাম, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি, এবং ইসলাম বিদ্বেষের দায়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির সদস্য রাখাল রাহার গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেন
জাহিদুল
ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সবার দায়িত্ব, তবে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরকে অন্যায়ভাবে দমন করার চেষ্টা করছে। তিনি উল্লেখ করেন, ছাত্রদল তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে দেয়, যা কুয়েট, এমসি
কলেজ ও তা’মীরুল
মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় ঘটেছে।
তিনি
আরও বলেন, কুয়েটে ছাত্রদল যুবদলের বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলা করেছে এবং ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এমসি কলেজে ছাত্রশিবিরের নাম জড়ানোর চেষ্টা করা হলেও পরে এটি প্রমাণিত হয় যে ছাত্রশিবির
এর সঙ্গে জড়িত নয়।
ছাত্রশিবিরের
সভাপতি ছাত্রদলের চাঁদাবাজি ও দখলদারি নিয়েও
অভিযোগ করেছেন। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, ২২ ফেব্রুয়ারি যশোরের
চাঁচড়ায় ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা চাঁদা না দেওয়ায় এক
মাছ ব্যবসায়ীকে গুরুতরভাবে আহত করেছে এবং গাজীপুরে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া, ছাত্রশিবির সভাপতি টঙ্গীতে তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্র ফজলে রাব্বি সিফাতকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের হামলার কথা উল্লেখ করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেন।
ছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচারী, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশেও ফ্যাসিবাদের টুলসগুলো কিছু ছাত্রসংগঠন ঘোষণা দিয়ে গ্রহণ করেছে। আপনারা দেখেছেন তারা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ‘শিবির কোবানো/কোপানো জায়েজ আগেও ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে’ এমন বীভৎস ঘোষণা দিচ্ছে। আমরা নোয়াখালীতে এমন একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমরা আশা করব সরকার তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। শুধু তাই নয়, কুয়েটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততার মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে। খুলনার শিববাড়ীতে তাদের মিছিল থেকে ‘একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ এই স্লোগান দেওয়া হয়। এমন ভয়ংকর, হিংস্র স্লোগান আমরা ছাত্রলীগের মুখে শুনতাম। কিন্তু ছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাচ্ছি।
জাহিদুল
ইসলাম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে বলেন, সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা চ্যালেঞ্জ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ধর্ষণের ঘটনার বিচার না হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা
পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ইসলামবিদ্বেষের
অভিযোগে ছাত্রশিবির রাখাল রাহার গ্রেপ্তার দাবি করেছে, যিনি এনসিটিবি পাঠ্যবই সংশোধন কমিটির সদস্য এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। ছাত্রশিবির আরও দাবি করেছে, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি প্রদান করা হোক।
ছাত্রশিবির
প্রেসিডেন্ট কিছু মিডিয়ার উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের অভিযোগও করেছেন, যেগুলির মাধ্যমে শিবিরকে মিথ্যা অভিযুক্ত করা হয়েছে, যেমন কুয়েট ও এমসি কলেজের
ঘটনায়।
এসময়
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, এবং ঢাবি শাখা শিবিরের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয় : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh