একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় এসেছে। গতকাল (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত আপিল বিভাগের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় রিভিউ আবেদনটি ৮ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। এদিন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য উঠবে।
এর আগে, ২৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ শুনানির ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে আনীত দুই নম্বর, তিন নম্বর এবং চার নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ড প্রদান করা হয়। পাঁচ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ অমানবিক অপরাধের জন্য ২৫ বছর ও ছয় নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের জন্য পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আজহারের ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখে। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়, তবে ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে আজহারুল ইসলাম আপিল করেন।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ জনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম, এবং শত শত বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করার পর আজহারুল ইসলাম রংপুর কারামাইকেল কলেজে ভর্তি হন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জামায়াতে ইসলামী ছাত্রসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডার ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমির এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল হন।
২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল আজহারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেন তদন্ত কর্মকর্তা এস এম ইদ্রিস আলী, এবং ২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।