× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

'বাজারের আগুনে পুড়ছে মানুষ, দ্রব্যমূল্য কমছে না'

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো।

২৭ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৪৯ পিএম

ছবিঃ কামরুল হাসান টিটু

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও পাচারের টাকা উদ্ধার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে কৃষিখাতে বরাদ্দ, কৃষি উপকরণের দাম কমানো, ফসলের লাভজনক দামে সরকারি উদ্যোগে হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খোলা, সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা, গ্রাম-শহরের শ্রমজীবীদের রেশন, ভূমিহীনদের আবাসন ও আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের উদ্যোগে র‌বিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে কৃষক, ক্ষেতমজুর ও আদিবাসী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে সকাল ১০টায় স্থানীয় শাপলা চত্ব‌রে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কৃষক, ক্ষেতমজুর, আদিবাসী ও স্থানীয় ভূমিহীনরা জমায়েত হয়ে সমাবেশে যোগ দি‌তে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন, লাল পতাকা নি‌য়ে নগরের প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল ক‌রে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের সভাস্থ‌লে মিলিত হয়। 

চারণ সাস্কৃতিক কেন্দ্রর পরিবেশনার পর বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা কমরেড খালেকুজ্জামান সমাবেশ উদ্বোধন করেন। সমাবেশ থেকে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও রংপুর জেলা বাসদের আহবায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রা‌খেন, বর্ষীয়ান রাজনী‌তিবীদ,ভাষা সৈ‌নিক বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা মোহাম্মাদ আফজাল, বাসদ কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী, সদস্য ফুলবর রহমান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিমল খানকো। সভা পরিচালনা করেন মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের গণআকাঙ্খাকে শাসকশ্রেণি পদদলিত করে উল্টো পথে দেশ শাসন করে চলেছে। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও স্বাধীন জাতীয় বিকাশের জাতীয়তাবাদকে বাণিজ্যিক পণ্যের মতো ব্যবহার করেছে। ৫৩ বছরে মানুষ বেসামরিক সামরিক, বহুদল থেকে একদল, একদল, বহুদল, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার থেকে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের রং তামাশা দেখেছে। বিশেষ করে গত ১৫/১৬ বছরের একদলীয় কৃতত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শাসনের শ্বাসরোধ করা পরিবেশে কাটিয়েছে। তার পরিণতিতে বৈষম্য বিরোধী চেতনায় হলো ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান।

তি‌নি বলেন,এখন চলছে অস্থির সময় হাত বদলের নানা আয়োজন। নানা গোষ্ঠী ও শক্তি রয়েছে তৎপর তাদের আশু ও ভবিষ্যত স্বার্থ উদ্ধারের মনযোগ। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা উপেক্ষিত। বাজারের আগুনে পুড়ছে মানুষ। কিন্তু আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্য কমছে না, মূল্যস্ফীতি কমছে না, অহেতুক বিতর্কের পাহাড় জমানো হচ্ছে।

তি‌নি আরও ব‌লেন, প্রতিহিংসা, তাৎক্ষণিক উত্তেজনা, গণউন্মাদনা সৃষ্ট অরাজকতার কাছে নতি স্বীকার করে সঠিক সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। জনগণের প্রকৃত শক্তিকে চিনে নিতে হবে, বৈজ্ঞানিক যুক্তির আলোকে গণবিরোধী ও কুসংস্কারের কালো ছায়া সরাতে হবে। বাংলাদেশে কৃষি শ্রমিকের মধ্যে ৫৮% নারী শ্রমিক। কৃষিতে ২৩ ধরনের কাজের ১৭টি করে নারীরা। কৃষিতে নিয়োজিত কিন্তু নারীর নামে জমি না থাকায় কৃষক হিসাবে স্বীকৃতি নাই, কৃষিকার্ড নাই। ফলে সার, বীজ পায় না, কৃষি ঋণ পায় না কৃষি প্রধান দেশের কৃষক মানুষের মুখের খাবার তুলে দিয়ে নিজেরা অভুক্ত অর্ধভুক্ত থাকতে বাধ্য হন। তাদের একটা অংশ নিয়ে রংপুরে আজকের এই কৃষক-ক্ষেতমজুর ও আদিবাসী সমাবেশ। এই সমাবেশে অংশ নিতে আদিবাসীদের যেসব কৃষক-কৃষাণী ভালবাসার আকর্ষণে দায়িত্বের বন্ধনে মুক্তির আকুতিতে কষ্ট স্বীকার করে উপস্থিত হয়েছেন। আর তাদের পাশে দাঁড়ানোর মনোভাবে বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ, কৃষক সংগঠনসহ নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা কর্মীবৃন্দদের থাকতে হবে।

কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, বৃহত্তর এ অঞ্চলের কৃষকদের রয়েছে সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস।কৃষকের তেভাগা আন্দোলন, আদিবাসীদের তীর-ধনুক নিয়ে আন্দোলনের বীরত্বগাঁথা ইতিহাস আছে। বৃহত্তর রংপুর অঞ্চল বড় শস্য ভান্ডার। কৃষি প্রধান এ অঞ্চলে উৎপাদিত ধান, পাট, আলু সবজিসহ অনেক ফসল দেশের অনেকাংশে দেশের চাহিদা পূরণ করে। অথচ এ অঞ্চলের কৃষকরা চরম বৈষম্যে ও অবহেলার শিকার। সার, বীজ, ডিজেল, সেচ, কীটনাশকের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে

উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ভরা মৌসুমে কৃষক ফসলের লাভজনক দাম না পেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তারপরও খরা, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগে প্রতিবছরই ফসলহানি ঘটছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও সহজ শর্তে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা না থাকায় তারা এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে ঋণ নিতে বাধ্য হয়।

তি‌নি ব‌লেন, ক্ষেতমজুরদের সারাবছর কাজ নেই, সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকায় আদিবাসীরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রভাবশালীরা কৌশলে আদিবাসীদের ভূমি দখল করছে। তিস্তার বন্যা ও ভাঙনে এ অঞ্চলের কৃষক প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তিস্তা নদীর সুরক্ষা জরুরি। অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষেতমজুর, আদিবাসী ও শ্রমজীবীরা সামাজিক সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পায় না। একই কাজে নারী - পুরুষের মজুরি বৈষম্য এখনো প্রকট। কৃষকরা সামান্য কৃষি ঋণ নিয়ে কোন কারণে পরিশোধ করতে না পারায় তাদের নামে সার্টিফিকেট মামলা ঝুলছে। অথচ লুটপাটকারীরা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ করে খেলাপী হলেও তা উদ্ধার
হয়নি। 

সমাবেশের সভাপতি বলেন এ অঞ্চলে কৃষি নির্ভর কল কারখানা ও ভারী শিল্প নেই।তারপরও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার শ্যামপুরসহ রংপুর চিনিকল (মহিমাগঞ্জ) বন্ধ করে এ অঞ্চলের আখচাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, বেকার করেছে এর সাথে যুক্ত মজুর শ্রমিককে। হাজার হাজার ভূমিহীন- গৃহহীনদের আবাসনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। কৃষক, ক্ষেতমজুর ও আদিবাসীদের বৈষম্য নিরসনে অবিলম্বে কৃষি কমিশন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.