খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ষষ্ঠবারের মতো আরও ৬ মাস বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগের শর্তেই তার সাজার মেয়াদ আগামী ৬ মাসের জন্য স্থগিত থাকবে। এ সময় তিনি বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন না। তবে দেশে যে কোনো হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবা নিতে বাধা থাকবে না।’
এর আগে গত ১৬ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার।
ওইদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যান বিএনপি নেত্রী। দণ্ড বাতিলের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করার পর দুর্নীতি দমন কমিশন আপিল করে সাজা বাড়ানোর।
ওই বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে হয় দ্বিগুণ। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।
অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেত্রী আপিল করলেও সেটির শুনানির উদ্যোগ আর নেয়া হয়নি। পাশাপাশি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা আপিল শুনানি হয়নি আর হাইকোর্টেও।
উচ্চ আদালতে জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান। ২০২০ সালের শুরুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বজনদের পক্ষ থেকে করা এই আবেদনে সাড়া দেন শেখ হাসিনা।
দুটি শর্তে খালেদা জিয়াকে কারাগারের বাইরে থাকার সুযোগের কথা জানানো হয়। এর মধ্যে একটি ছিল তিনি দেশের বাইরে যাবেন না, অন্যটি ছিল তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নেবেন।
তবে গত বছরের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি সরকার।
বিএনপি নেত্রী ওই বছরের ২৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ভর্তি হন হাসপাতালটিতে। থাকেন ৫৩ দিন। বাসায় ফেরেন ১৯ জুন। দ্বিতীয় দফায় একই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ২৬ দিন হাসপাতালে থাকার পর কেবল সাত দিন তিনি ফিরোজায় কাটিয়েছেন। তৃতীয় দফা হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি এভারকেয়ার থেকে বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন বেগম খালেদা জিয়া
তৃতীয় দফায় বিএনপি নেত্রী হাসপাতালটিতে ভর্তি হন গত ১৩ নভেম্বর। তৃতীয় দফায় ভর্তি হওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের নেত্রী জীবন সংশয়ে আছেন। তার লিভার সিরোসিস হয়েছে- এমন তথ্য জানিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা দাবি করেন, দেশে এর চিকিৎসা নেই। বিদেশে পাঠাতে দেরি হলে যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে।
সে সময় বিএনপি তার নেত্রীকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে নানা কর্মসূচি পালন করে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদেশে যাওয়ার সুযোগ চেয়ে আবেদন করতে হলে আবার কারাগারে যেতে হবে।
আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তির ৮১ দিনের মাথায় গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি ঘরে ফেরেন।
দুই বছর আগে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে রাজনীতি থেকে পুরোপুরি দূরে রয়েছেন বিএনপি নেত্রী। তিনি কোনো রাজনৈতিক বক্তৃতা-বিবৃতি দেননি, দলীয় কোনো বৈঠকে অংশ নেননি, এমনকি জাতীয় দিবস বা ঈদ-পূজার মতো উৎসবেও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাননি।
বিএনপি নেত্রীর রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কোনো কারণ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়নি। পুরো সময়টায় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh