ছবি: সংগৃহীত
পদ্মা সেতু এদেশের জন্য বিরাট অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, এতে কোনও সন্দেহ নেই যে পদ্মা সেতু বিরাট একটি অর্জন। নিঃসন্দেহে পদ্মা সেতু দক্ষিণ অঞ্চলের উন্নয়নে মাইল ফলক, এটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নাই। পায়রা বন্দর, বেনাপোল বন্দর এসব ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হবে। ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দৃঢ় নেতৃত্ব নিয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন সেজন্য তাকে অভিনন্দন জানাই।
বুধবার (৮ জুন) রাতে সংসদ অধিবেশনে উত্থাপিত প্রস্তাব সাধারণের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় সংসদ অধিবেশনে প্যানেল সভাপতি শামসুল হক টুকু সভাপতিত্ব করছিলেন। এর আগে, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী প্রস্তাব সাধারণ উত্থাপন করেন।
প্রস্তাবে বলা হয়, আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাসে বহু কাঙ্ক্ষিত সর্ববৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধন করবেন। এই দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার তিন কোটির অধিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষে শেখ হাসিনা ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। চার লেনের হাইওয়ে এবং এক লেনের রেললাইন সম্বলিত ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু আজ পরম বাস্তবতা। বাঙালির অহংকার আত্মপ্রত্যয়, সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। এই অর্জন ও কৃতিত্বের দাবীদার একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সাহসী ও দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব মানুষের প্রতি অপার ভালোবাসা এবং জাতিকে পদ্মা সেতু উপহার দেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে জাতির পক্ষ থেকে কৃতিজ্ঞাচিত্তে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হোক।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, অবশ্যই পদ্মা সেতু আমাদের নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। কথাগুলো আমাদের বলার সুযোগ তো দেবেন। এই সংসদে আমরা সংখ্যায় অত্যন্ত ক্ষুদ্র। আমাদের একজন সদস্য বক্তব্য দিয়েছেন। এখানে ডিবেট হবে, আলোচনা হবে। আলোচনা হওয়ার পর এতজন বক্তব্য দিচ্ছেন। আমার বক্তব্য যুক্তিখণ্ডন করুন। আমার বক্তব্যে যদি কোনও অসত্য অংশ থাকে আপনি তার প্রতিবাদ করেন, কোনও অসুবিধা নেই। বক্তব্য চলাকালীন সময় আপনার (স্পিকার) দায়িত্ব আমাদের প্রটেকশন দেওয়া। কিন্তু আপনি জায়গা থেকে প্রটেকশন দেননি। যেভাবে সাউটিং করা হয়েছে, এটি সংসদের অধিবেশনে আসলেই সভ্য আলোচনা হচ্ছে? নাকি হট্টগোল হচ্ছে। এটি প্রশ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আলোচনা করতে গিয়ে অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন। নিঃসন্দেহে পদ্মা সেতু বিরাট অর্জন এতে কোনও সন্দেহ নাই। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন করেছে, কী করেনি- এর দায়দায়িত্ব আমাদের না। বিশ্বব্যাংক আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এখনও বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বিশ্ব ব্যাংক। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক কেন অর্থ দিল না, কেন অর্থ দেয়নি? তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দৃঢ় নেতৃত্ব নিয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে সেজন্য তাকে অভিনন্দন জানাই।
তিনি আরও বলেন, যমুনা ব্রিজের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছিলেন। প্রায় ৩২০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে। সেই সেতুর দিন হরতালও করেছিলেন আপনারা। সেই সেতু মাত্র দুই বছরে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় সম্পন্ন করেছিলাম। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশে ব্রিজ নির্মাণ ক্ষেত্রে দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। এই বিষয়গুলো স্বচ্ছ হওয়া দরকার। এগুলোর জবাবদিহিতা দরকার।
হারুন বলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচি পালন করার বক্তব্য রাখার প্রাধিকার নাই? আপনার পুলিশ বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সহায়তায় কর্মসূচি করছেন। পদ্মা সেতু নিয়ে সমাবেশ করবেন, লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ করবেন ঠিক আছে। এই সেতুর সুফল বলতে পারি। নিঃসন্দেহে পদ্মা সেতু দক্ষিণ অঞ্চলে উন্নয়নে মাইলফলক, এটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নাই। পায়রা বন্দর বেনাপোল বন্দর এসব ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হবে। ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে। কথা হচ্ছে রেল সেতু নির্মাণ হচ্ছে, এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ হচ্ছে। তাতে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে করতে হচ্ছে। কিন্তু প্রকল্প নির্মাণ করতে গিয়ে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এসব বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা দরকার।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাকে তথ্য দিতে হবে, কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশে কোনও আইনের শাসন আছে? শাসকদের সামনে শাসকদের সম্পর্কে সত্য কথা বলা সব চাইতে বড় জেহাদ। কোন তথ্যের ভিত্তিতে বলছেন বিএনপি বিশ্বব্যাংক থেকে টাকা বন্ধ করে দিয়েছে? বিএনপির কথায় বিশ্বব্যাংক টাকা দেয় বাংলাদেশে? বিএনপি তো তখন ক্ষমতায়ও নাই, বিরোধী দলে। বিএনপির কথায় যদি টাকা বন্ধ করে দেয়? তারেক রহমান লন্ডনে বসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করেন- কী কথা বললেন এসমস্ত। কথা বলার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh