মতলব উত্তরে তরমুজ পচন, দুশ্চিন্তায় কৃষক আতাউর রহমান ৷ ছবি: সংবাদ সারাবেলা
চলতি বছরের মার্চ মাসের বৃষ্টি ও বৃষ্টি পরবর্তী খরায় ছত্রাক, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে মরে যাচ্ছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ওঠারচর গ্রামের কৃষক ও উদ্যোক্তা আতাউর রহমান সরকারের ১৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক সুইট গ্রিন তরমুজ গাছ। কোথাও কোথাও গাছ সবল থাকলেও নেই ফলন। কিছু গাছে ফলন আসলেও দেখা দিয়েছে পচন। এমন ফলন বিপর্যয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছে কৃষক আতাউর রহমান সরকার। এমন ঘটনাকে স্থানীয় কৃষিবিদরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মনে করছেন। তারা আবহাওয়া উপযোগী ও আগাম বীজ বপনের পরামর্শ দিয়েছেন।
খোজ নিয়ে জানা যায়, মার্চ মাসে বৃষ্টি হলে অধিকাংশ জমিতে পানি জমে যায়। এর পরপরই দেখা দেয় খরা। খরায় বৃষ্টির পানি শুকানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেতের তরমুজের গাছগুলো হলুদ বর্ণ ধারণ করে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। কোনও জমিতে লবণাক্ত বেড়ে গিয়েও ঝলসে যাচ্ছে গাছ। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। জমিতে গাছগুলো সবুজ ও বেশ ভাল গজালেও নেই ফুল বা ফল। কিছু কিছু স্থানে ফলন হলেও পরিমাণে কম ও আকারে অনেক ছোট হয়েছে। তরমুজ গাছে ছত্রাক ও ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন কোম্পানির বালাইনাশক ব্যবহার করেও কোনও প্রতিকার পায়নি কৃষক আতাউর রহমান সরকার।
কৃষক ও উদ্যোক্তা আতাউর রহমান সরকার বলেন, মতলব উত্তরে তরমুজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তরমুজের প্রচুর চাহিদার দিকটি বিবেচনা করেই আমি নিজ উপজেলায় তরমুজ চাষ পরীক্ষণের পর কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য গত বছরে এমন প্রকল্প হাতে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পড়াশোনা ও অন্যান্য ব্যস্ততার জন্য নিতে পারি নাই। তবে এ বছর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন স্যারের সাথে বিষয়টি আলোচনা করলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ওঠারচর গ্রামে ১৫ শতাংশ জমিতে একটি পরীক্ষণ প্রদর্শনী স্থাপন করি। তবে জমিতে ফুলকপি থাকার কারণে প্রকল্প স্থাপনে একটু বিলম্ব হয়।
তিনি আরও বলেন, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জমি তৈরি মালচিং ফ্লিম বিছিয়ে সরাসরি বীজ রোপণ করি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে শতভাগ বীজ অঙ্কুরোদগম না হওয়ায়, সিডলিং ট্রেতে উৎপাদিত চারা রোপণ করে গ্যাপ ফিলিং করি। প্রথম দিকে চারা একটু নড়বড়ে থাকলেও বেশকিছু দিন পরই জমি সতেজতায় আমি মুগ্ধ হই।
এ সময় আমাকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সাপোর্ট দিয়েছেন ছেংগারচর পৌর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেদোয়ান আদনান মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন।
সকলের পরামর্শে আমি জৈব বালাই ব্যবস্থাপনা, ফেরোমন, হলুদ ট্রাপ ব্যবহার করি। আমার গাছগুলোর বৃদ্ধি ছিল সন্তোষজনক। প্রথম দিকে গাছের ফলগুলোতে আশার আলো দেখতে ছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, মার্চ মাসের বৃষ্টি ও বৃষ্টি পরবর্তী খরায় ছত্রাক, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে এবং পোকার আক্রমণে মরে যাচ্ছে আমার ক্ষেতের তরমুজ গাছ গুলো। কোথাও কোথাও গাছ সবল থাকলেও নেই ফলন।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, সঠিক সময়ে তরমুজের বীজ রোপণ করতে পারেনি এবং মার্চ মাসের বৃষ্টি ও বৃষ্টি পরবর্তী খরায় ছত্রাক, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে এবং পোকার আক্রমণে তরমুজের গাছ মরে যাচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh