সাতক্ষীরা জেলায় বোরো ধানের পাতায় ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলায় বোরো ধানের পাতায় ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
সাতক্ষীরা সদরের কামালনগর, যোগরাজপুর, উত্তর দেবনগর, আখড়াখোলা, তুজুলপুর, মাধবকাটি ও রামেরডাঙা, কুখরালী, তালা উপজেলার খলিষখালী, দোলুয়া, খেশরা, মুড়াগাছা, পাটকেলঘাটার, কুমিরাসহ বিভিন্ন মাঠে বোরো ধানের ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ধান গাছ আক্রান্ত হতে না হতেই মাঠ ধান গাছের পাতা সাদা ও লালচে হয়ে পুড়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ২৮ ধানের পাতায় প্রথমে ফোটা ফোটা লাল দাগ দেখা দিয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ধান গাছ দিনদিন ছোট ও লাল হয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে ও শীর্ষ আসার সময় ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোন দিশা না পেয়ে অনেকে কৃষক বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক স্প্রে করছে। তবে এতে কোন ধরনের উপকার পাওয়া যাচ্ছে না।
যোগরাজপুর গ্রামের সাবান আলী জানান, তিনি এবার চার বিঘা জমিতে ২৮ ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কৃষি কর্মকর্তার কাছে থেকে পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী তিনি ইউরিয়া সারের সঙ্গে কীটনাশক ফসত্রিন ও উল্কা মিশিয়ে ধান খেতে ছড়িয়েছিলাম এর আগে ভৃতাকো স্প্রে করেছিলেন। কিন্তু এক সপ্তাহ কেটে গেলেও ব্লাস্ট রোগ কমেছে না বরং ধান গাছ আরো বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
তালার মুড়াগাছা গ্রামের কৃষক আজিজ মোড়ল বলেন , তিন বিঘা জমিতে ২৮ জাতের বোরো চাষ করেছি। দুই সপ্তাহের ভেতর ধানে ফুল আসবে। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে থেকেই পাতা ব্লাস্ট রোগে গাছ সাদা হয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যা করেও কোব লাভ হয়নি। এ অবস্থা চলতে থাকলে ধান তো নয়ই, বিচালি পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। ঋণের টাকা পরিশোধ করবো কেমনে?
সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকার হাবিবুর বলেন, প্রথমে খুব সুন্দর ধান হয়েছিলো তবে শীর্ষ বের হওয়ার সাথে সাথে লাল হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধান গাছ ও মারা যাচ্ছে।
দৌলুয়া গ্রামের কৃষক আলালউদ্দীন বলেন, কোন ঔষুধে কাজ হচ্ছে না। এ ধান দিয়ে আমাদের ১২ মাস সংসার চালাতে হয়। আগে এ ধরনের আক্রমণ হলেও এত ক্ষতি হয়নি।
তুজুলপুর গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান বলেন , আমাদের ধান খেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা গেলেও তা মারাত্মক আকার ধারণ করার আগেই প্রতিকার করতে পেরেছি। যারা জমিতে বেশি ইউরিয়া ব্যবহার করেছে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে গত বছরের ব্লাস্টে আক্রান্ত ধানের বীজ সংগ্রহ করে রোপন করার ফলে এই রোগ দেখা দিয়েছে। তবে কৃষকরা মনে করছেন দিনে গরম, রাতে শীত ও সকালে কুয়াশার ফলে এ ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ির উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, ব্লাস্ট ধানের একটি ছত্রাকজনিত রোগ। ব্লাস্ট রোগ সাধারণ তিন ধরনের হয়ে থাক,পাতা ব্লাস্ট, গীট ব্লাস্ট, ও শীষ ব্লাস্ট রোগটি বোরো ও আমন মৌসুমে বেশী হয় এবং চারা অবস্থা থেকে ধান পাকার আগ পর্যন্ত যেকোন সময়ে রোগের আক্রমণ দেখা যায়।
তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে ব্লাস্ট রোগে আক্রামনের কথা জানতে পেরে কৃষি উপসহকারী অফিসারদের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্লাস্টের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কৃষকদের সর্তক করা হচ্ছে। ধানের এই রোগ মুলত গত বছর যেসকল ধানে আক্রমণ হয়েছিল সেসব ধানের বীজ সংগ্রহ করে রোপন করার মাধ্যমে এই রোগ দেখা দিয়েছে। আমাদের পরামর্শে কৃষকরা স্প্রে মাধ্যমে নাটিভো, ট্রুফার ও ফিনিয়া ব্যবহার করে অনেক কৃষক সুফল পাচ্ছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh