ছবিঃ সংগৃহীত।
হজরত হাসান ইবনে আলী (রা.) ইসলামের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী চরিত্র। তিনি ছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র এবং দ্বিতীয় খলিফা হজরত আলী (রা.) এবং হজরত ফাতিমা (রা.) এর পুত্র। ১৫ রমজান তার জন্মদিন হিসেবে পরিচিত। তার জীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও সংগ্রামের সাক্ষী, যা মুসলিম ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে।
জন্ম
ও শৈশব
হজরত
হাসান ইবনে আলী (রা.) এর জন্ম ৩ হিজরিতে (৬২৫ খ্রিষ্ট্রাব্দ), ১৫ রমজান মাসে
মদিনায়। তিনি ছিলেন প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) এর সাথে রক্তের
সম্পর্কিত, এবং তার পিতা হজরত আলী (রা.) ছিলেন চতুর্থ খলিফা, যিনি ইসলামের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার মা হজরত ফাতিমা
(রা.) ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সা.) এর কন্যা এবং
ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এক নারী চরিত্র।
শৈশবকাল
ও শিক্ষা
হজরত
হাসান (রা.) ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত শিক্ষিত ছিলেন। তিনি পিতার কাছ থেকে ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি, নবী (সা.) এর কাছ থেকেও
শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ছিলেন একসাথে ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত
যোগ্য, এবং তার চরিত্র ও শিক্ষা মদিনা
ও কুফা শহরে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
মুহাম্মদ
(সা.) এর সাথে সম্পর্ক
হজরত
হাসান (রা.) ছিলেন নবী (সা.) এর নিকট অত্যন্ত
প্রিয় এবং তিনি ছিলেন নবী (সা.) এর বংশধরের প্রথম
প্রতিনিধি। নবী (সা.) তার দুই নাতি—হাসান (রা.) এবং হুসাইন (রা.) এর প্রতি বিশেষ
স্নেহপ্রকাশ করেছেন, যা ইসলামী ইতিহাসের
অন্যতম একটি পরিচিত ঘটনা। নবী (সা.) হজরত হাসান (রা.) কে একদিন "আমার
শরীরের অঙ্গ" বলে উল্লেখ করেছিলেন।
খলিফা
হওয়ার মুহূর্ত
হজরত
হাসান (রা.) এর জীবনকালটিতে ইসলামিক
রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বড় একটি ঘটনা
ঘটে। ৪০ হিজরিতে, পিতার
মৃত্যুর পর তিনি খলিফা
হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু তাকে স্বীকার করতে না পারা কিছু
দলগুলো, বিশেষত মরকজিদের কিছু বাহিনী, তাকে বিরোধিতা করেছিল। তারপর, হজরত হাসান (রা.) জনগণের স্বার্থে এবং ইসলামের শান্তির পক্ষে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন—তিনি খিলাফতের দায়িত্ব থেকে সরে আসেন। শান্তিপূর্ণভাবে তিনি হজরত মুয়াবিয়া (রা.) এর সঙ্গে সন্ধি করেন এবং ইসলামি
রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা যুদ্ধ এড়ানোর
চেষ্টা করেন।
শান্তি
ও ধৈর্য্যের প্রতীক
হজরত
হাসান (রা.) এর সিদ্ধান্তটি ছিল
ইসলামী রাজনীতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সাহসিক উদাহরণ। তার এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত
পরবর্তী সময়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে শান্তি এবং একতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষত, তার এই সিদ্ধান্ত থেকে
একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাওয়া যায় যে, কখনও কখনও বৃহত্তর কল্যাণের জন্য ব্যক্তিগত পদ এবং ক্ষমতা
বিসর্জন দেওয়া উচিত।
মৃত্যু
হজরত
হাসান (রা.) মৃত্যুবরণ করেন ৫০ হিজরিতে। মৃত্যুর
সময়, তিনি ছিলেন ৪৪ বছর বয়সী।
তার মৃত্যুর পেছনে বিষ প্রয়োগের কথা বলা হয়, যা তাকে তার
স্ত্রী (যে কিছু সূত্রে
বলা হয়, মুয়াবিয়া (রা.) এর প্ররোচনায়) দিয়েছিল।
তার মৃত্যু ইসলামী ইতিহাসে একটি গভীর শোকের মুহূর্ত ছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh