ছবিঃ সংগৃহীত।
আজকে খ্রিষ্টীয় বছরের প্রথম দিন, এই খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার কিভাবে আসল? বর্তমান যে খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার আমরা দেখি তা পরিশিলিত করার কৃতিত্ব একজন পোপের। “পোপ গ্রেগরী তের” যার নাম অনুসারে এই ক্যালেন্ডার কে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ও বলা হয়। গ্রেগরী তের এই ক্যালেন্ডার মডিফিকেশান করেন ১৫৮২ সালে।
১৫৮২
সালের পোপ গ্রেগরী প্রবর্তিত ক্যালেন্ডার ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে রোমের পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী (প্রকৃত নাম উগো বনকমপাইনি, ইতালির বেলোনিয়ার বংশদ্ভূত) জুলিয়াস বর্ষপঞ্জির সংস্কারে হাত দেন। রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার যে বর্ষপঞ্জি প্রবর্তন
করেন তাতে প্রতিবছর ছিল ৩৬৫ দিন ছয় ঘণ্টা, কিন্তু
এর আসল দীর্ঘ ৩৬৫ দিন পাঁচ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। ফলে
সামান্য পার্থক্যের কারণে ১৩ বছর পর
মহাবিষুব তারিখ ১০ মার্চ থেকে
পিছিয়ে পৌঁছয় ২১ মার্চ। এ
বিষয়টি সংশোধনে গবেষণার কাজে সহযোগিতা করেন রোম চিকিৎসক ও পঞ্জি বিশারদ
আলোয়সিউস লিলিয়াস এবং
জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী
ক্রিস্টোফার ক্লাডিয়াস। গ্রেগরি তাঁদের সুপারিশক্রমে ১৫৮২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি জুলিয়ান
বর্ষপঞ্জির সংশোধন জারি করেন এবং ১৫৮২ সালের অক্টোবর মাসের ৫ অক্টোবর শুক্রবার
না হয়ে ১০ দিন এগিয়ে
১৫ অক্টোবর শুক্রবারকে প্রবর্তন করেন। তাঁর নামে বর্ষপঞ্জি পরিচিতি পায় গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি হিসেবে। বিভিন্ন মতভেদ, অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় সংশোধিত গ্রেগরিয়ান প্রথা সর্বজনীনভাবে বিভিন্ন দেশে চালু হতে ১০০-২০০ বছর পার হয়ে যায়। তদুপরি
এখন পর্যন্ত গ্রেগরি প্রবর্তিত
ক্যালেন্ডার মোটামুটি নিখুঁত হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে বিশ্বব্যাপী এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে
থাকে। বর্তমানে আমরা যে ক্যালেন্ডার অনুসরণে
খ্রিস্টীয় নববর্ষ পালন করি, তা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি
অনুসরণেই করে থাকি।
এই
মডিফিকেশানের আগে, একে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার বলা হত। রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার ৪০ খ্রিষ্টপূর্বে এর
প্রচলন করেন। এর আগে রোমান
ক্যালেন্ডার ১০ মাসে হিসাব
করা হত যার প্রচলন
করেছিলেন কিংবদন্তী রোমান সম্রাট রোমুলাস (৭৫৩ – ৭১৫ খ্রিষ্টপূর্ব)।
রোমান সম্রাট রোমুলাস (৭৫৩ – ৭১৫ খ্রিষ্টপূর্ব)
রমুলাস
– ১ দশ মাসে যে
ক্যালেন্ডার প্রচলন করেন তার শুরু হয়েছিল মার্টিয়াস (Martius) তার পিতা যুদ্ধ দেবতা মার্সের নাম অনুসারে, এর পর এপ্রিলিস,
মাইউস, উনিয়াস যা রোমান বিভিন্ন
দেবতার নামের সাথে সম্পৃক্ত। এর পরের নাম
গুলো স্রেফ সংখ্য দিয়ে প্রকাশ করা হত, এই ভাবে দশম
মাস হিসাবে ছিল বর্তমান ডিসেম্বর।
নুমা
পম্পেলিয়াস
এর
পর দ্বিতীয় রোমান সম্রাট নুমা পম্পেলিয়াসের সময় এর সাথে আরো
দুটো মাস যোগ করা হয়। এই হল বারো
মাসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। তবে সর্বশেষে "পোপ গ্রেগরী তের" সব দিনক্ষন মিলিয়ে
লীপ ইয়ারের প্রচলন করেন।
যেহেতু
প্রাচীন রোমানদের হাতেই মূলত ক্যালেন্ডারের প্রচলন ঘটে, তাই ইংরেজি ১২ মাসের বেশির
ভাগই নামকরণ হয় রোমান দেবতা,
সম্রাট, ল্যাটিন শব্দ, সংখ্যা অনুসারে।
জানুয়ারীঃ
রোমান দেবতা জানুসের নাম অনুসারে, যার কাজ ছিল শুরু করা এবং শেষ করা।
ফেব্রুয়ারীঃ
প্রাচীন রোমান দেবতা ফেব্রুয়াসের নাম অনুসারে এই মাসের নাম
করন করা হয়, এই মাসে রোমান
মেয়েদের পবিত্র করা হত যেন তারা
সু'সন্তান জন্ম দিতে পারে।
মার্চঃ
রোমান যুদ্ধ দেবতা মার্সের নাম অনুসারে এই মাসের নাম
করন করা হয়।
এপ্রিলঃ "এপ্রি“ মানে উৎপন্ন থেকে এই নাম উৎপন্ন
হয়েছে, কারন এই মাসে বিভিন্ন শষ্যের দানা উৎপন্ন হত।
মেঃ
রোমান বসন্তের দেবী “মেয়িসটা”র নাম থেকে
এই মাসের নাম আসছে।
জুনঃ
রোমান বিবাহ ও নারীদের কল্যাণ'র দেবী “জুনো" র নাম থেকে
এই মাসের উৎপত্তি।
জুলাইঃ
রোমান সম্রাট “জুলিয়াস" এই মাসে জন্ম
গ্রহন করেন। তার সম্মানে এই মাসের নাম করন করা হয়।
আগষ্টঃ
জুলিয়াস সিজারের পুত্র এবং পরবর্তী
সময়ে রোম সম্রাট অগাস্টাস সিজারের নামানুসারে এই মাসের
নাম করন হয়।
সেপ্টেম্বরঃ
এই নাম এসেছে রোমান “সেপ্টেম" মানে সপ্তম সংখ্যা থেকে।
অক্টোবরঃ
রোমান “অক্টো" থেকে এই নাম এসেছে
মানে আট।
নভেম্ভরঃ
রোমান “নভেম”থেকে এই নাম এসেছে
মানে নয়।
ডিসেম্ভরঃ
রোমান “ডিসেম" থেকে এই নাম এসেছে।
সবাইকে
ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা। ভালো থাকুন। সুখে থাকুন। সুস্থ্য থাকুন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh