× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আগে পরে যা করবেন

ডেস্ক রিপোর্ট

২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:৫০ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

ভারত বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা। উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের মানুষের মনে এখন প্রশ্ন কোন কোন এলাকায় আঘাত হানতে পারে 'দানা'। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মোতাবেক, এই ঝড় বাংলাদেশের ৮টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।

অঞ্চলগুলো হলো- যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা চট্টগ্রাম। এসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়ার তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ চরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আগে অবশ্য করণীয়

ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেতে বেশ কিছু সতর্কবার্তা জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। যা ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস কবলিত এলাকার জন্য জরুরি বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদরা। তাদের মতে, দুর্যোগের সময় কোন এলাকার লোক কোন আশ্রয়ে যাবে, গবাদিপশু কোথায় থাকবে, তা আগে ঠিক করে রাখা এবং জায়গা চিনিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া যথাসম্ভব উঁচু স্থানে শক্ত করে ঘর তৈরি করা। পাকা ভিত্তির ওপর লোহার বা কাঠের পিলার এবং ফ্রেম দিয়ে তার ওপর ছাউনি দেওয়া। ছাউনিতে টিন ব্যবহার না করা ভালো। কারণ ঝড়ের সময় টিন উড়ে মানুষ গবাদিপশু আহত করতে পারে। তবে শূন্য দশমিক মিলিমিটার পুরুত্ববিশিষ্ট টিন জেহুক ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস সতর্কতায় আরও জানানো হয়েছে, উঁচু জায়গায় টিউবওয়েল স্থাপন করা, যাতে জলোচ্ছ্বাসের লোনা ময়লা পানি টিউবওয়েলে ঢুকতে না পারে। জেলে নৌকা, লঞ্চ ট্রলারে রেডিও রাখা। সকাল, দুপুর বিকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাস শোনার অভ্যাস করা উচিত বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদরা।

এছাড়া সম্ভব হলে বাড়িতে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম (ব্যান্ডেজ, ডেটল প্রভৃতি) রাখা। জলোচ্ছ্বাসের পানির প্রকোপ থেকে রক্ষার নানারকম শস্যের বীজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা আগে থেকেই গ্রহণ করা উচিত।

বাড়িতে রাস্তায় নারকেল, কলাগাছ, বাঁশ, তাল, কড়ই অন্যান্য শক্ত গাছপালা লাগানোর পরামর্শ আবহাওয়াবিদদের। কারণ এসব গাছ ঝড় জলোচ্ছ্বাসের বেগ কমিয়ে দেয়। ফলে মানুষ দুর্যোগের কবল থেকে বাঁচতে পারে।

 নারী-পুরুষ, ছেলেমেয়ে প্রত্যেকেরই সাঁতার শেখা উচিত। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে বা অন্য আশ্রয়ে যাওয়ার সময় কী কী জরুরি জিনিস সঙ্গে নেওয়া যাবে এবং কী কী জিনিস মাটিতে পুঁতে রাখা হবে, তা ঠিক করে সেই অনুসারে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। আর্থিক সামর্থ্য থাকলে ঘরের মধ্যে একটি পাকা গর্ত করুন। জলোচ্ছ্বাসের আগে এই পাকা গর্তের মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা যেতে পারে।

 ঘূর্ণিঝড়ের মাসগুলোতে বাড়িতে মুড়ি, চিড়া, বিস্কুটজাতীয় শুকনো খাবার রাখা ভালো। নোংরা পানি কীভাবে ফিটকারি বা ফিল্টার দ্বারা খাবার ব্যবহারের উপযোগী করা যায়, সে বিষয়ে নারীদের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া। ঘূর্ণিঝড়ের পরে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা, কারণ বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ। এই পানি মাটির বড় হাঁড়িতে বা ড্রামে পানি রেখে তার মুখ ভালোভাবে আটকে রাখতে হবে, যাতে পোকা-মাকড়, ময়লা-আবর্জনা ঢুকতে না পারে।

 ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী সাবধানতা

 ঘরে ঢুকে যাওয়া পানি অপসারণের সময় সতর্ক থাকতে হবে। কাজটি ধীরে ধীরে করতে হবে, যাতে পানির নিচে থাকা কোনো কঠিন কিছুতে আঘাত না লাগে বা বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে না আসেন। চেষ্টা করুন ঝড়ের পরের ২৪৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারপাশ শুষ্ক করতে।

যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া জরুরি। ঘরদোর পরিষ্কারের সময় শিশুদের যতটা দূরে রাখা যায়, ততটাই ভালো। ধরনের কাজে যুক্ত হলে একটু অসতর্ক হলেই শিশুরা আঘাত পেতে পারে।

 ঝড় পুরোপুরি থামলে যা করবেন

ঝড় পুরোপুরি থেমে গেলে পরিবারের বাকি সদস্যদের দিকে মনোযোগ দিন। ঝড় চলে গেলেও, ঝড়ের স্মৃতি এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি করে রেখে যেতে পারে। কারণে ঝড়ের পর পরিবারের সদস্যরা কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। কেউ নিখোঁজ হলে স্থানীয় প্রশাসনসহ দায়িত্বশীল সংস্থা গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

পাশাপাশি খেয়াল রাখুন ঝড়ের পর নিরাপদ পরিস্থিতি যে সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই যেন আশ্বস্ত হয়। জন্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলুন। বিশেষত শিশুদের সঙ্গে। ঝড়ে তারা কেমন ভয় পেয়েছে, তাদের কী মনে হয়েছে ইত্যাদি সম্পর্কে জানুন। দুর্যোগে মাথা ঠান্ডা রাখা কঠিন। তবুও চেষ্টা করুন, তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করতে। তাদের আশ্বস্ত করুন। দুর্যোগে হওয়া আহতনিহত ক্ষয়ক্ষতির খবরাখবর থেকে বিশেষত শিশুদের দূরে রাখার চেষ্টা করুন।

পরিবারের শিশুসহ কম বয়সিদের বোঝানোর চেষ্টা করুন যে, দুর্যোগ প্রাকৃতিক একটি ব্যাপার। এটি স্থায়ী কোনো বিষয় নয়। দুর্যোগের পরও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। অনেকেই দাঁড়িয়েছে।

 

 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.