বাজারে নাকি
ইলিশের দাম জিজ্ঞেস করতেও পয়সা খরচ করতে হচ্ছে আজকাল। রসিকতার অংশটুকু বাদ দিলে বাস্তবতা
খুব একটা ভিন্ন কিছু বলছে না। ভরা মৌসুমে চড়া দামে ইলিশ জুটছে না সাধারণ জনগণের পাতে।
তাই তো সোশ্যাল মিডিয়ায় জনগণের জোর দাবি একটাই, পাঙ্গাসকে ঘোষণা করা হোক জাতীয় মাছ।
ভোক্তারা
বলছেন, ইলিশ শুধুই এক শ্রেণির মানুষের
খাবার হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জন্য ইলিশ দুরূহ ব্যাপার। দিনদিন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ইলিশ। তাই সহজলভ্য এবং কম মূল্যে পাওয়া পাঙ্গাসকে জাতীয় মাছ ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে নিয়মিত আলোচনা।
ফেসবুক
ব্যবহারকারী মো. হৃদয় লিখেছেন, জাতীয় মাছ হবে এমন মাছ যা সবার ক্রয়
ক্ষমতার ভেতর আছে। যা সহজেই পাওয়া
যায়। যা স্বাদে ও
গুণে অনন্য। ইলিশের সঙ্গে এসব যায় না। গরিব ইলিশ ক্ষেতে পারে না। যে মাছ সব
শ্রেণির মানুষ খেতে পারে না তা জাতীয়
মাছ হয় কীভাবে? তাই পাঙ্গাসকে জাতীয় মাছ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।
নোয়াখালীর
পৌর বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. রায়হান গণমাধ্যমকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে আমাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। পুষ্টির চাহিদা পূরণে মাছ কিনতে হয় কিন্তু তার
উপায় নাই। এক কেজি ইলিশের
দাম হাজার টাকার ওপরে। তাও একবেলা খাওয়া যায়। আর এক হাজার
টাকার পাঙ্গাস কিনলে দুই থেকে তিন বেলা খাওয়া যাবে। পাঙ্গাস-তেলাপিয়া না থাকলে মানুষ
মাছই খেতে পারতো না।
শ্রোতাপ্রিয়
লোকসংগীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, যেই ক্ষমতায় আসুক, আমাদের কপালে পাঙ্গাস আর তেলাপিয়া ছাড়া
কিছু নাই। দেশের বাজারে ইলিশ মাছ অনেকেরই ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই, সে অবস্থায় ভারতে
ইলিশ রফতানি করাকে তিনি ইতিবাচকভাবে নেননি।
কুদ্দুস বয়াতির
স্ট্যাটাসের মন্তব্যে তার ভক্তরা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য লিখছেন। আহমেদ শশী নামে একজন
লিখেছেন, গরিবের জাতীয় মাছ ‘পাঙ্গাস’। মোহাম্মদ জালাল হোসেন নামে একজন মজা
করে লিখেছেন, ‘পাঙ্গাস জাতীয় মাছ লইয়া একটা গান ধরেন কুদ্দুস কাহা’।
চাঁদপুর মৎস্য
গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মুখ্য ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে ইলিশের জালে পাঙ্গাস পাওয়ার অনেক
খবর রয়েছে। মূলত মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য গত কয়েক বছর থেকে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ইলিশ
মাছ ধরার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ওই নিষেধাজ্ঞা ইলিশের পাশাপাশি পাঙাশ মাছের সংখ্যা
বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছে। আমি মনে করি জেলেদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে এবং মৎস্য
সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে নেওয়া সরকারের পদক্ষেপগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারলে পাঙ্গাসের
উৎপাদন আরও কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব।