পাট ও পেঁয়াজ চাষের জন্য বিখ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলা। পেঁয়াজ চাষের সময় বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ আর পাটের সৃজনে মাঠজুড়ে শুধু পাট আর পাট চাষ করে থাকে এই উপজেলার কৃষকেরা।
এই অঞ্চলের ৯০ ভাগ মানুষই কৃষির উপর নির্ভরশীল। তারা বছর জুড়ে উৎপাদন করে থাকে বিভিন্ন ধরনের ফসল। যারমধ্যে পাট ও পেঁয়াজকে প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে ধরা হয়।
পাশাপাশি যেখানে পাট ও পেঁয়াজের তেমন উৎপাদন হয় না সেখানে অন্যান্য ফসলও উৎপাদন করে থাকে এখানকার কৃষকেরা। তবে সেটা নেহাৎ কম। এরই ধারাবাহিকতায় এবছর ১৩ হাজার ৫শ হেক্টরের মধ্যে ১২ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতেই পাট চাষ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়।
শনিবার (২৫ মে) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এ অঞ্চলের কৃষকেরা কৃষি উপকরণ নিয়ে পাট ক্ষেত নিড়ানি, ছোট ও দূর্বল পাট বাছাই করা, ক্ষেতে পানি, সার ও কীটনাশক দেওয়া ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। কাঁক ডাকা ভোর থেকেই শুরু হয় তাদের এই ব্যস্ততা। প্রয়োজনে তারা নিয়ে থাকেন কৃষি পরামর্শও।
দীর্ঘদিন পর প্রচণ্ড তাপদাহ শেষে কিছুদিন পূর্বে বৃষ্টির পানি পেয়ে পাটের চারাগুলো ব্যাপক উৎসাহের মধ্য দিয়েই যেন বেড়ে উঠছে। ফলে কৃষকেরা এবার ভালো ফলনের আশা করছে। তারা মনে করছে এ বছর পাটের বাম্পার ফলন হবে।
পাট চাষী জাহিদ হাসান এমিলি বলেন, এবছর আমি পাঁচ একর জমিতে পাটের বীজ বপন করেছি। বর্তমানে পাটের পরিচর্যায় বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছি। পাট চাষের শুরু দিকে বৃষ্টির দেখা না পেলেও পরবর্তীতে বৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে পাট ভালো ভাবে বেড়ে উঠছে। আশা করি এ বছর পাটের ভালো ফলন হবে।
উপজেলার পাটচাষি দবির মোল্যা, আক্কাছ মোল্যা ও দিদার মোল্যা জানান, এবছর পাটের বীজ বপনের পর থেকে প্রচন্ড রোদ আর তাপে জমিতে পাট শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পাটের চারা বাঁচিয়ে রাখতে একাধিকবার জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। তাতে বাড়তি খরচও গুনতে হয়েছে। তাতেও পাট তেমন বেড়ে ওঠেনি। কিন্তু কয়েকদিন আগে দুই দিনের বৃষ্টিতে জমির পাট দ্রুত বাড়ছে। এমন আবহাওয়া থাকলে পাট গাছ পর্যাপ্ত বড় হবে এবং ফলনও ভালো হবে।
উপজেলা উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. রায়হান ফেরদ্দৌস বলেন, এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৩২০ হেক্টর। এবার প্রচন্ড খরতাপে পাটের জমিতে সেচ বেশি দিয়েছে চাষিরা। এতে তাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টির পরে সারা উপজেলাজুড়ে পাটের অবস্থা খুব ভালো। এবার পাটের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।