চলতি মৌসুমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু চলমান তাপদাহে দেখা দিতে পারে শ্রমিক সংকট। ফলে ক্ষেতের ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় কৃষকের ক্ষেতের ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মধ্যে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন (আধুনিক ধান কাটার যন্ত্র) বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে রামনগর ইউনিয়নের কৃষক হামিদুল ইসলামের হাতে চাবি তুলে দেওয়ার মাধ্যমে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার জেলার ২১ জন কৃষককে প্রদান করা হবে। ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের এই কৃষি যন্ত্র সুবিধাভোগী কৃষকরা পাবেন ১৫ লাখ ২৫ হাজার টাকায়।
মেশিনপ্রাপ্ত কৃষকরা হলেন, সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের কৃষক হামিদুল ইসলাম ও আতাউর রহমান, গোড়গ্রাম ইউনিয়নের কৃষক রুপম ইসলাম ও মানোয়ার হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদি হাসান। এছাড়াও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান ও নীলফামারী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুর আলম উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য কমবাইন হারভেস্টার মেশিন পেয়ে খুবই খুশি কৃষকরা। তারা জানান, চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি থাকায় সেচ খরচ বেড়েছে, সেই সাথে অতি তাপপ্রবাহ চলমান থাকায় শ্রমিক সংকটের চিন্তায় ছিলেন তারা। এ মেশিন পাওয়ায় আমাদের ধান কাটা-মাড়াই খরচ অনেক কমে যাবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ জানান, এই কৃষি যন্ত্রের ফলে শ্রমিক সংকট দূরীকরণ, অর্থনৈতিক ও সময় সাশ্রয় হবে কৃষকের। পাশাপাশি এক যন্ত্র দিয়ে ধান কর্তন ও মাড়াই করতে পারবেন কৃষকরা। ফলে লাভবান হবেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ২১ জন কৃষককে এই কৃষি যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার) ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ২১টি যন্ত্রের মূল্য ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যন্ত্রটি অর্ধেক দামে কৃষকরা কিনতে পারবেন এবং বাকি অর্ধেক টাকা সরকার পরিশোধ করবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।