নিজেদের কোন জমি নেই, তবুও জীবন আর জীবিকার তাগিদে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে এবং এনজিও থেকে লোন নিয়ে একশত ২০ শতক জমিতে বোরোধানের আবাদ করেছেন কৃষক জাকির হোসেন ও তাহের বেপারি। ফসলের মাট সবুজে সমোরহ হয়ে ভরে উঠায় আশায় বুক বাঁধেন তারা।
কিন্তু হঠাৎ তাদের হাশি মুখে দূশ্চিতার ভাঁজ। টানা খরা আর অনাবৃষ্টিতে হাওরের বিল শুকিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবোর চাঁদপুর সেচ প্রকল্পে পানি সংকট হওয়ায় খালে পানি নেই। এতে বোরো জমিতে সেচের পানি দিতে পারছেনা চাষিরা। ধান বিবর্ন রং ধারন করে শুকিয়ে যাচ্ছে।
সকালে সরেজমিন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নয়নপুর হাওড়ের মাঠে আবাদ করা বোরো ধানের জমি ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এসময় অন্যান্য চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে বোরো চাষ করেছেন তারা। পানি সংকটের কারনে তাদের আবাদ করা বোরো ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এতে কাঙ্খিত উৎপাদন নিয়ে দূশ্চিন্তায় রয়েছে চাষিরা। চাঁদপুর সেচ প্রকল্পে আওতায় খালে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবী করেন শতাধিক কৃষক।
এসময় ভুক্তভোগী কৃষক আবুল হাশেম, মাসুদ, মনির হোসেন, নূরুল আমিন জানিয়েছেন একাধিকবার আবেদন করে উপজেলা কৃষি অফিস সহ চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কোন কর্মকর্তা মাঠ পরিদর্শন করেননি। ধান বিক্রি করে এনজিওর লোন পরিশোধ করতে না পারলে আমাদের বসতভিটা বিক্রি করতে হবে। আপনারা আমাদের বাঁচান।
দেলোয়ার হোসেন নামের আরেকজন কৃষক বলেছেন, চলতি মৌসুমে শুরুতে তীব্র পানি সংকট দেখা যাচ্ছে। খালে পানি নেই, তাই সেচ দিতে পারছিনা। খালে পানি আসলে আমাদের কষ্ট দূর হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ইছাপুর ইউনিয়নের নয়নপুর হাওড়ে
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ৩ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে বোরোধান ও ২ দুই হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে রবি শস্য ফলন করেছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কমল কুমার বর্মন বলেছেন বহুবার সেচ প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কাছে একাধিক ফোন করেছি, চাহিদামত পানির জন্য। দ্রুত সময়ে খালে পানি সরবরাহ করা হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ রায়হানুল হাওলাদার বলেন, এ উপজেলার উৎপাদন বাড়াতে খুব দ্রুতই পানি সংকট নিরসন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শারমিন ইসলাম জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা প্রশাসককে অবহিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি সংকট সমাধান করা হবে।
চাঁদপুর (পাউবো) সুইচ গেইটের দায়িতরত্ব মো. শরিফ হোসেন জানিয়েছেন নদীতে পানি সংকট। ১৮ ঘন্টার স্থলে ১২ ঘন্টা পানি পাচ্ছি না। তবে এ খালটি ২/৩ দিনের মধ্যে ভেকু দিয়ে ঠিকাদার খননকাজ শুরু করবে। তবে এ সমস্যা দ্রুত সমাধান
হবে তিঁনি জানিয়েছেন।