নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তুরস্কের আংকারায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং মহান শহীদ দিবস-২০২২ উদ্যাপন করা হলো। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২-এর প্রথম প্রহরে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মস্য়ূদ মান্নান এনডিসি-এর নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়।
দূতাবাস চত্ত্বরে নির্মিত শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। অতপরঃ দূতাবাস মিলনায়তনে মিনিষ্টার ও মিশন উপপ্রধান মিজ শাহানাজ গাজীর উপস্থাপনায় এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শুরুতেই ভাষা শহীদদের রূহের মাগফিরাত ও শোক প্রকাশের নিমিত্ত্বে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। বাণী পাঠের পর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং শহীদ দিবস ও ভাষা শহীদদের নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারনমূলক আলোচনা করা হয়।
রাষ্ট্রদূত মস্য়ূদ মান্নান এনডিসি তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার অসামান্য নেতৃত্বগুনে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ দীর্ঘ এ পথ-পরিক্রমায় বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের অভ্যূদয় ঘটে। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৯ সালে টঘঊঝঈঙ ২১শে ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন দেশ কাল ছাপিয়ে বিশ্ব পরিমন্ডলে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবোজ্জ্বল অর্জন। সেই সাথে পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের জন্য “আন্তর্জাতিক মার্তভাষা দিবস” অনন্য প্রেরণা যোগাচ্ছে। পৃথিবীর সব ভাষার সংরক্ষণ, সমৃদ্ধি ও সম্প্রসারনে কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগায় আমাদের ভাষা দিবস।
বিকালে জুম এ্যাপসের মাধ্যমে আঙ্কারার রাশিয়া ও ইউক্রেনসহ ৪০টি দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত/প্রতিনিধিবৃন্দ, তুরস্কের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহনকারী জুমে যুক্ত হয়ে তাঁদের স্বদেশের কবিতা আবৃত্তি করেন উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে সকলেই এসব পরিবেশনা উপভোগ করেন। এ পর্বের শুরুতেই ১২টি ভাষায় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি গানটি প্রদর্শিত হয়। অতপরঃ মান্যবর রাষ্ট্রদূত একটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনান এবং একে একে সকল প্রতিনিধি তাদের ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করেন। তুরস্ক তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনসাধারণের কাছে মাতৃভাষার গুরুত্ব তুলে ধরাই ছিল অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য।