সোনাখ্যাত ও মহাওষুধিগুণ সম্পূর্ণ মসল্লা জাতীয় ফসল আদা। নিত্যদিন খাবারে স্বাদ বাড়াতে আদার জুড়ি নেই। ওষুধশিল্পে কাঁচামাল হিসেবে আদার চাহিদা ব্যাপক।তাই সারা বছর বাজারে ভোক্তার কাছে এর চাহিদা তুঙ্গে। এক সময় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আদার দুর্গ ছিল। আর সমতল জনপদের প্রতিটি কৃষক আদার চাষ করে বাম্পার ফলন পেত। ক্ষেত থেকে গাড়িকাগাড়ি আদা বাড়িতে সংরক্ষণ করতো। তা সারা বছর বিক্রি করে হালগৃহস্থি দিব্যি চালাত। কৃষকের ভাগ্যের জটও খুলে দিয়েছে আদা। হয়েছেন তারা পাকাবাড়ি,গাড়ির মালিক ও সম্পদশালী।
কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে বিগত কয়েক বছর ধরে ওইসব জমিতে আদা চাষ করতে গিয়ে পচনসহ নানা রোগে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষককে লোকসান গুণতে হয়েছে। যা আদা চাষে মুখ ফিরিয়ে নেন তারা। দেশের বাজারে অগ্নিমূল্য গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। আদার ঘাটতি মেটাতে, আমদানি করতে হচ্ছে বাইরের দেশ থেকে।
এতে মোটা অংকের টাকা চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতে আমদানি নির্ভরতা কমাতে জমিতে আদা চাষের বিকল্প কৃষক কম খরচে,ভাল ফলনে অধিক লাভের আশায় পতিত, অনাবাদি জমিতে বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছে। যাদের জমি নেই তারা বাড়ির আশেপাশে, আঙিনায়, গাছতলায় বস্তায় আদা চাষ করে বাড়তি আয় করছে।এসফলতার পথ দেখাচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিতাই ইউপির পাগলার বাজারের পাঠান ট্রেডাসের স্বত্বাধিকারী রোকন ইবনে আজিজ লিচু বাগানে ৬হাজার ৫০০বস্তায় আদা চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, বস্তায় আদা চাষ তুলনামূলক রোগ বালাই ও খরচ কম। ফলনওভাল, লাভ দিগুন।ছায়াযুক্ত হওয়ায় খরার কোন প্রভাব পড়ে না। প্রতি বস্তায় খরচ হয়েছে ৩০ টাকার মত। যা ৫টন আদা উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। অপর দিকে মাগুড়া সিঙ্গের গাড়ি ভেলামারী গ্রামের চাষি আব্দুস ছালাম বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গায় ২ হাজার ৪০০ বস্তায় আদা লাগিয়েছেন।
তিনি জানান, ১১ হাজার টাকা (১০০ কেজি) বস্তা দরে ১৫০ কেজি বীজ ক্রয় করেন। রোপণের সময় প্রতি বস্তায় ৩টি করে বীজ লাগান।চারা হুষ্টপুষ্ট হওয়ার পর পিলাই (মাটা)উত্তোলন করে বিক্রি করেন২৯ হাজার টাকা।খরচ বাদে ১২ হাজার টাকা আয় হয়। এখন পুরো ফসল লাভ।প্রতি বস্তায়১কেজি করে উৎপাদন হলে ২হাজার ৪০০ কেজিতে ২৪ বস্তা ফলন হবে। ভাল বাজার পেলে ২/৩ লাখ টাকা আয় হবে।
বিশেষ করে চারিদিকে গাছের ছাঁয়ায় কোন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব নয়। সম্ভব হয়েছে বস্তায় আদা চাষ। যা সবাইকে তাক লাগিয়েছে। এতে অন্য কৃষকরাও বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন, চলতি বছর জমিতে২৩৪হেক্টরের পাশাপাশি কৃষককে উদ্ধুদ্ধ ও পরামর্শ দিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে ১১হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। বস্তায় আদা চাষ একটি আধুনিক পদ্ধতি। যা ফল বাগানে, পতিত জমিতে, বসতবাড়ির আনাচে কানাচে, এমনকি বাড়ির ছাদে চাষ করা যায়। যা প্রচলিত চাষাবাদের চেয়ে ফলন বেশি হয়। এতে খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বস্তায় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা নীট লাভ হবে। এ আদা চাষে অর্ধকোটিরও বেশি টাকা গ্রামীণ অর্থনীতিতে যোগ হবে। কৃষকরাও লাভবান হবেন। দেশের বাজারে আদার ঘাটতি পূরণ হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
