× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সিরাজগঞ্জে (ব্রি) উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানচাষে শতকে এক মণ ফলন

শফিক মোহাম্মদ রুমন, সিরাজগঞ্জ

২৭ মে ২০২৩, ০৭:৫৮ এএম

সিরাজগঞ্জে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানচাষ করে প্রতি শতকে এক মণ ফলন পেয়েছেন কৃষক। ব্রি ধানের জাত ভেদে কোনো কোনো কৃষক এক মণের বেশিও ধান ফলাতে সক্ষম হয়েছেন। নতুন উদ্ভাবিত ব্রি-৯২ জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ ছিল প্রচলিত জাতের চেয়ে কম। এতে বিদ্যমান জাতের তুলনায় বিঘাপ্রতি ধান ও খড়ের ফলন বেশি।

সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পিএসও) এ বি এম আনোয়ার উদ্দিন বলেন, ব্রি ধান- ৯২ এ আধুনিক উফশি ধানের সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার ও আকৃতি ব্রি ধান-৮৭ থেকে ভিন্ন। পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১২৫ সেন্টিমিটার। দানা লম্বা ও চিকন। এ ধানে প্রোটিন এবং অ্যামাইলোজের পরিমাণ যথাক্রমে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ২৪ শতাংশ। প্রতি বিঘায় এ জাতটির গড় ফলন ৩৩ মণ। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে প্রতি বিঘায় ৩৬ মণ পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

তিনি বলেন, এ জাতের গড় জীবনকাল ১৫৬ দিন। শস্য কর্তনে ব্রি ধান-৯২ ও বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতটি উদ্ভাবনের পর থেকে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে।সিরাজগঞ্জ ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসও) কৃষিবিদ এস এম এম শাহরিয়ার তন্ময় বলেন, এ আঞ্চলিক কার্যালয়টি মূলত সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় ধান নিয়ে গবেষণা করছে। এ চারটি জেলায় এবার এক বিঘা করে ১৩৫টি ব্রি ধানের প্রদর্শনী এবং পাঁচ থেকে ২০ বিঘা করে ১৮৫টি ব্লক রয়েছে। যেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ব্রি ধান পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছিল।তিনি ব্রি-৯২ ধান সম্পর্কে বলেন, এ ধানের চাষাবাদ অন্য বোরো ধানের মতোই। তবে ব্রি-৯২ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে কম হয়। যে কারণে ফলন সবচেয়ে বেশি।

নতুন জাত উদ্ভাবন সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্রি-৯২ এর কৌলিক সারি প্রথমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত জাতের সঙ্গে এফএল সংকরায়ণ করা হয়। পরে অ্যান্থার কালচার করে এই সারিটি উদ্ভাবন করা হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা মাঠে হোমোজাইগাস কৌলিক সারি নির্বাচনের পর তিন বছর ফলন পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই কৌলিক সারিটি বোরো ২০২২ মৌসুমে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে কৌলিক সারিটির ফলন ব্রি ধান-৪৯ এর চেয়ে বেশি হওয়ায় প্রস্তাবিত জাত হিসেবে নির্বাচিত হয়।

সিরাজগঞ্জ ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরামর্শে এ ধানের পরীক্ষামূলক চাষ করেন কামারখন্দ উপজেলার ধোপাকান্দি গ্রামের কৃষক একরাম আলী। 

তিনি বলেন, এবার ৬৬ শতক জমিতে ব্রি-৯২ জাতের ধান চাষ করেছিলাম। প্রথমবার চাষেই সফলতা পেয়েছি। এ মৌসুমে ৬৬ শতকে ৬৭ মণ ধান পেয়েছি।

কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের চাষি রফিক শেখ বলেন, এবার আমি তিন বিঘা জমিতে ব্রি-৯২ জাতের ধানের আবাদ করেছি এবং ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানের আবাদ করেছি দুই বিঘা জমিতে। নতুন এই দুই জাতের ধানের ফলন অন্য জাতের তুলনায় বেশি হয়েছে। আগামীতেও এ দুটি জাতের ধানের আবাদ করবো।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রেজোয়ান ভূইয়া বলেন, আমরা নতুন এ জাতের এই ধানের বীজ সংরক্ষণ করছি এবং দেশের সর্বত্র কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে একদিকে যেমন দেশের ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা বীজের ওপর নির্ভরশীলতাও কমে যাবে।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, কৃষি শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে বেকায়দায় পড়ছেন কৃষকরা। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে ধানের আবাদ এবং ফসল কাটার সময় কৃষকদের যন্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই কম লাগছে। যদিও শতভাগ কৃষককে এই সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে, পর্যায়ক্রমের সব কৃষকই এই সুবিধার আওতায় আসবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.