সমাজে যারা দুর্নীতিবাজ, তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালতের বিচারক।
রোববার অবৈধ সম্পদ অর্জনের এক মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ঢাকার অষ্টম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ পরামর্শ দেন।
এদিন দুদকের করা মামলায় ‘অনলাইন জুয়ার কারবারি’ সেলিম প্রধানকে দুই ধারায় চার বছর করে কারাদণ্ড দেন তিনি।
রায়ের পর্যবেক্ষণে উপস্থিত সকলের উদ্দেশে বিচারক বলেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষদের সমাজ থেকে ‘বয়কট’ করতে হবে।
‘দুর্নীতিগ্রস্তদের সঙ্গে আত্মীয়তা করবেন না। তাদের সঙ্গে চলাফেরা করবেন না। তাদের কাছে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেবেন না। বিয়ে দিলেই তারা সুখী হবে না।’
দুর্নীতিগ্রস্তরা দাওয়াত দিলে সেখানে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিচারক বলেন, ‘জেনেশুনে দুর্নীতিগ্রস্ত কারও দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়ার সমান।’
জ্ঞাত আয় বহিভূর্ত সম্পদ অর্জনের দায়ে সেলিম প্রধানকে চার বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এ রায়ে। জরিমানার টাকা না দিলে তাকে আরও এক মাস কারাগারে থাকতে হবে।
আর অর্থ পাচারের দায়ে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে তার দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে। ফলে সাজা কার্যত চার বছরের।
৫৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২২ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ ছিল সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের শেষ দিকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন। পরের বছরের ১৭ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার সেটি আদালতে জমা দেন। একই বছরের ৩১ অক্টোবর এই মামলায় বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।
সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে ‘পি টোয়েন্টিফোর গেইমিং’ নামের একটি কোম্পানি আছে, যারা ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনোর কারবার চালিয়ে আসছিল।
রোববার তার বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় সাজা ঘোষণা করে সমাজের অন্যদেরও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিচারক।