বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে ‘লেহি আইন’ কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে আগ্রহী দেশকে প্রাপ্ত অর্থ কোথায় ব্যয় হয় তা জানানোর শর্ত মেনে চুক্তি করতে হবে। আগামী শনিবার, ২০২২ সালের প্রথম দিন থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে চুক্তি করতে রাজি কি না তা আগামী শুক্রবারের মধ্যে আগ্রহী দেশকে জানাতে হবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ কোনো সংস্থা, বাহিনী বা ইউনিটের কাছে মার্কিন অনুদান বা সহায়তা পৌঁছাবে না, সে বিষয়েও নিশ্চয়তা দিতে হবে।
ঢাকায় সরকারি সূত্রগুলো বলছে, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে তিক্ততা চায় না বাংলাদেশ। এ কারণে চুক্তি করতে রাজি আছে বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার একটি আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে জানানোর চেষ্টা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের বিশেষ উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে সহায়তা পেতে মানবাধিকারের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র তার অর্থ কোথায়, কিভাবে কাজে লাগছে এবং ওই অর্থ কোনোভাবেই যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কারো হাতে না পড়ে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত সামরিক ও নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা ও অনুদানের ক্ষেত্রে এই আইনের প্রভাব পড়তে পারে। কারণ বিশ্বের অনেক দেশেই নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও পররাষ্ট্র দপ্তর ওই দেশটির ‘গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইনের’ আওতায় গত ১০ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
২০১৮ সালে লেহি আইনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের র্যাব ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসিইউ) তদন্ত শাখাকে মার্কিন অনুদান বা সহায়তা পাওয়ার জন্য যোগ্য নয় বলে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।