ঢাকার
বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হৃদয় মিয়াজিকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ (২৩
এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ এই আদেশ দেন।
শুনানির সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হৃদয়ের দশ দিনের রিমান্ড
চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক
প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। অন্যদিকে আসামিপক্ষ জামিন ও রিমান্ড বাতিলের
আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে
নেওয়া মো. হৃদয় মিয়াজি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস উপজেলার দুর্লব্দী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর বনানী থানা
কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে পরিচিত।
জাহিদুল
ইসলাম পারভেজ ছিলেন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার মিডটার্ম পরীক্ষা চলছিল। গত ১৯ এপ্রিল
বিকেল ৩টার দিকে পরীক্ষা শেষে তিনি বন্ধু তরিকুল, সুকর্ণ, ইমতিয়াজসহ কয়েকজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে র্যানকন বিল্ডিংয়ের
সামনে একটি পুরি-শিঙাড়ার দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাস্যরস ও কথাবার্তার মধ্যে
তারা সময় কাটাচ্ছিলেন। সেসময় পেছনে ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুই
ছাত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের নিয়ে পারভেজ ও তার বন্ধুরা
হাসাহাসি করেছে কিনা তা জানতে আসে
মেহেরাজ ইসলাম, আবু জহর গিফফারি পিয়াস এবং মাহাথির হাসান নামের তিন যুবক। তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়, যা সিসিটিভি ফুটেজে
ধরা পড়ে এবং পরে বিষয়টি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস পর্যন্ত গড়ায়।
শিক্ষকদের
মধ্যস্থতায় ঘটনার সমাধান হলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সময়ই গেটের সামনে পারভেজের ওপর অতর্কিত হামলা হয়। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
ঘটনার
পর ১৯ এপ্রিল দিবাগত
রাতে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের
নাম উল্লেখ করা হয়। তারা হলেন: মেহেরাজ ইসলাম, আবু জহর গিফফারি পিয়াস, মাহাথির হাসান, সোবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজি, রিফাত, আলী ও ফাহিম। পাশাপাশি
মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২৫-৩০ জনকে
আসামি করা হয়েছে।